বিজ্ঞাপন

চিকিৎসককে ধর্ষণের পর খুন: বিক্ষোভ ছড়িয়েছে ভারতজুড়ে

August 17, 2024 | 1:23 am

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। কলকাতা থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের ঢেউ ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। সাধারণ মানুষ থেকে তারকা— পথে নেমেছেন সবাই।

বিজ্ঞাপন

গত শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাতে আরজি কর হাসপাতালে ওই ইন্টার্ন চিকিৎসককে ধর্ষণের পর খুন করা হয়। এ ঘটনা জানাজানি হলে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ছাড়াও বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানী নয়া দিল্লি, হায়দারাবাদ, মুম্বাই, পুনেসহ বিভিন্ন শহরে।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সর্বভারতীয় চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) শনিবার থেকে দেশব্যাপী কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে। ২৪ ঘণ্টার এ ধর্মঘট শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে চলবে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত।

চার লাখের বেশি চিকিৎসক নিয়ে গঠিত আইএমএ এক বিবৃতিতে বলেছে, সব প্রয়োজনীয় পরিষেবা চালু থাকবে। তবে ওপিডির নিয়মিত কাজকর্ম হবে না। পাশাপাশি ইলেকটিভ সার্জারি বা ঐচ্ছিক অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকবে।

বিজ্ঞাপন

এই ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে, সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচারের দাবিতে গতকাল বুধবার মধ্যরাতে পশ্চিমবঙ্গে ‘মেয়েরা রাত দখল করো’ কর্মসূচি পালন করেছেন। ন্যায় বিচারের দাবিতে নারীরা সড়ক দখল করে রাতভর প্রতিবাদ করেন।

ওই কর্মসূচি চলাকালে অবশ্য দিবাগত রাত ১২টার দিকে আরজি কর হাসপাতালে একদল দুষ্কৃতকারী হামলা চালায়। তারা জরুরি বিভাগ তছনছ করে। পরীক্ষাগার, ওষুধের স্টোর, নার্সিং ঘর ভেঙে চুরমার করে দেয়। শুধু তা-ই নয়, তারা চিকিৎসকদের আন্দোলন মঞ্চও ভেঙে দেয়। এ সময় পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করে। একপর্যায়ে তারা পালিয়ে যায়। তখন অবাধে চলে ভাঙচুর।

বুধবার রাতের এ হামলায়, কয়েকজন চিকিৎসকও আহত হন। হামলার একটি ভিডিও এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখা যায়। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতালে হামলার ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ওই ইন্টার্ন চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সঞ্জয় রায় নামের কলকাতা পুলিশের এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে এ ঘটনা তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআইকে। তবে বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, মমতার ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার একজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে চাইছে।

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলের নেতা বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করে বলেছেন, আরজি কর হাসপাতালে গভীর রাতে হামলা চালিয়েছে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুণ্ডরা। সব প্রমাণ লোপাট করার উদ্দেশ্যেই তারা এ কাজ করেছে। তবে তৃণমূল বলেছে, হামলার পেছনে রয়েছে বিজেপি ও সিপিএমের হাত।

পালটাপালটি এসব অভিযোগের মধ্যেই আরজি কর মেডিকেলের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের এক দফা দাবি নিয়ে মাঠে নামছে বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার ঘোষণা দিয়েছেন, শুক্রবার থেকেই তারা এই দাবিতে মাঠে নামতে শুরু করেছেন।

সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, মমতার পদত্যাগের দাবিতে রাজ্য বিজেপি আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। সামনের দিনগুলোয় তারা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন