বিজ্ঞাপন

স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠনের কথা ভাবা হয়েছে: তথ্য উপদেষ্টা

August 18, 2024 | 2:11 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান মন্ত্রণালয়ে থাকবে না বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। রোববার (১৮ আগস্ট) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আওতাধীন দফতর সংস্থার প্রধান এবং গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। মতবিনিময়ের শুরুতেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্র, জনতা এবং সাংবাদিকদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠনের কথা ভাবা হয়েছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই এ বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পাশাপাশি সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট পুনর্বিবেচনা করা হবে।’

‘আমরা আরও একটি রক্তাক্ত পরিবেশের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম নতুন করে স্বপ্ন দেখছে, নতুন করে আসা-আকাঙ্ক্ষা তৈরি করছে আমরা সেই আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে এ সরকারে এসেছি।’

দফতর প্রধানদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশকে পুনর্গঠন এবং নতুন বাংলাদেশ তৈরি করার যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হচ্ছে যেখানে যেন এ ধরনের স্বৈরতন্ত্র আর কোনোদিন মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেদিকে আপনাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আমরা জানি বাংলাদেশের সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর কি ধরনের নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। সামনের বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটুক তা আমরা চাই না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে স্যার ভাবার বা বলার দরকার নেই। আমি আপনাদের সন্তান হিসেবে এখানে এসেছি, আমি জনগণের পক্ষ থেকে এসেছি, জনগণের দাবি দাওয়া নিয়ে এসেছি, এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে এসেছি। আমি আপনাদের কাছে সহযোগিতা চাই।’

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। ফ্রিডম অব প্রেস যদি না থাকে ফ্রিডম অব স্পিচ নিশ্চিত হয় না। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আমাদের কাজ করতে হবে। সে জন্য বিভিন্ন আইন ও বিধি নিষেধ যেগুলো নিয়ে সমালোচনা রয়েছে সেগুলো পুনর্বিবেচনা করতে হবে। যাতে বাক স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত না হয়।’

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র জনতার পাশাপাশি অনেক সাংবাদিক আহত এবং শহীদ হয়েছেন তাদের পাশে আমাদের দাঁড়ানো উচিত। আপনারা দেখেছেন আন্দোলনের মাঝে কিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, দেশ ব্ল্যাকআউট এ চলে গিয়েছিল, কী হচ্ছিল কিছুই জানা যাচ্ছিল না। সে সময় ইলেকট্রনিক মিডিয়া সম্পূর্ণ সরকারের হস্তক্ষেপে ছিল। সেই সময় আমাদের কোনো বক্তব্য প্রচার করা হতো না এবং যে কথাগুলো আমরা বলিনি সে কথাগুলো মিসকোড করে প্রচার করা হতো। তারপর ও আমরা দেখেছি সে সময়ে কিছু প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া আমাদেরকে সাপোর্ট দিয়েছে। আন্দোলনে পুরো সময় যারা ফিল্ডে কাজ করেছে সে রিপোর্টাররা আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন এবং আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিকদের বেতন কাঠামো নিয়ে অনেক অসন্তোষ রয়েছে। আমরা যদি মেধাবীদের উৎসাহিত করতে না পারি তাহলে সাংবাদিকতা এগুবে না। মিডিয়াতে যারা রিপোর্টার এবং জুনিয়র লেভেলে কাজ করে তাদের বেতন অত্যন্ত কম, অনেক ক্ষেত্রে বেতন কাঠামো মানাও হয় না, এ বিষয়ে নীতিমালা প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্র নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে। তরুণ প্রজন্মের অনেক আকাঙ্ক্ষা চলচ্চিত্র নিয়ে কিন্তু সে আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে না। অনেকগুলো চলচ্চিত্র সেন্সর অবস্থায় আছে যদি কোন নীতিমালা ভঙ্গ না হয় তাহলে দ্রুততম সময় চলচ্চিত্রগুলো প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে কোনো ধরনের স্বজনপ্রীতি এবং ব্যক্তিগত পরিচয় যেন বিবেচনায় না নেওয়া হয়।’

সাগর রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি খুবই বেদনাদায়ক এবং নির্মম। এর বিচার নিয়ে কী ধরনের প্রহসন করা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। এ হত্যাকাণ্ডসহ সাংবাদিকদের ওপর যত রকম নির্যাতন নিপীড়ন করা হয়েছে সেগুলো তদন্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করতে সরকার এবং মন্ত্রণালয়ের পক্ষে যা যা করণীয় তা আমরা করব।’

গণহত্যার ছবি এবং ভিডিও প্রকাশে সহযোগিতা করা হবে এবং এগুলোর মাধ্যমে আহত এবং নিহতদের প্রকৃত সংখ্যা এবং পরিচয় জানা যাবে তাই এই তথ্যগুলো দিয়ে গণ মাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা করার জন্য উপদেষ্টা অনুরোধ করেন।

বিজ্ঞাপন

অন্য এক সংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘যারা অপরাধের সাথে জড়িত ছিলেন না তাদের প্রতি যেন কোনো অন্যায় না হয় সে বিষয়ে আমাদের নির্দেশনা রয়েছে। মামলা হলে সুস্পষ্ট তদন্তের ভিত্তিতে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া আছে।’ তাছাড়া বিশেষ কারণ ছাড়া তার ছবি প্রচার না করার অনুরোধ করেন উপদেষ্টা।

এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর-সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/জেআর/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন