বিজ্ঞাপন

নদীপথে ঈদযাত্রা: জাহাজে ৩ যাত্রীর এক সেবক

June 5, 2018 | 9:35 pm

।। মেসবাহ শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রী সেবায় বেসরকারি মালিকানাধীন লঞ্চের পাশাপাশি নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করছে বাংলাদেশ নৌপরিবহন করপোরেশনের ৬টি জাহাজ। ব্যক্তি মালিকানাধীন লঞ্চগুলোয় যাত্রীর চাপ বাড়লেও সে তুলনায় জাহাজগুলোতে বাড়েনি যাত্রী, বরং কমেছে।

বর্তমানে জাহাজগুলোয় প্রায় তিনজন যাত্রীর বিপরীতে একজন স্টাফ কাজ করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়ম মানতে গিয়ে যাত্রী হারাচ্ছেন লঞ্চগুলো।

ঈদ উপলক্ষে গত রোববার জাহাজে (৩ জুন) অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়। ১৩ জুন থেকে বিআইডব্লিউটিসির মোট ছয়টি জাহাজ ঈদের বিশেষ যাত্রী সেবা দেবে। চলবে আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত। তবে যাত্রীর চাপ বেশি থাকলে সময় আরও বাড়ানো হতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৫ জুন) সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে কথা হয় সহমহা ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) বরকত উল্লাহর সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে জানান, এবারের ঈদে লেপচা, অস্ট্রিচ, মাহসুদ, টার্ন, এমভি মধুমতি ও এমভি বাঙালী যাত্রী পরিবহন করবে। যাত্রী পরিবহনে ইতোমধ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে জাহাজের ৫০ ভাগ টিকেটের আবেদন ১৫ রমজান থেকে অনলাইনে দেওয়া হয়। বাকিগুলো বাংলা মোটরে সংস্থার কার্যালয় থেকে ছাড়া হয়। যার সব টিকেটই শেষ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে জাহাজ লেপচায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিন রয়েছে ১৪টি। এমভি মধুমতি ও বাঙালীতে রয়েছে ৬০টি কেবিন। বাকি জাহাজগুলোর প্রত্যেকটিতে কেবিন সংখ্যা ২০ থেকে ২২টি। যার সবগুলোই ডাবল কেবিন।

জাহাজ লেপচা ঘুরে দেখা গেছে প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় কেবিনের পাশাপাশি ডেকেও যাত্রী পরিবহনের ব্যবস্থা। তবে সেখানে লঞ্চের মতো যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। ঈদের সময় যাত্রীর চাপ বাড়লেও সারা বছর অনেকটা প্রায় ফাঁকাই থাকে জাহাজের ডেক। তবে জাহাজে নিয়মিত যে স্টাফ থাকার কথা তার প্রায় সবাই-ই দায়িত্ব পালন করছেন যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থাপণায়।

সহমহা ব্যবস্থাপক বরকত উল্লাহর দেওয়া তথ্য অনুযায়ি প্রতিদিন কেবিন-ডেক মিলিয়ে গড়ে শ খানেক যাত্রী যাতায়ত করে ছোটো লেপচা-অস্ট্রিচের মতো জাহাজগুলোয়। সেখানে স্টাফ থাকে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ জন। আর মধুমতি কিংবা বাঙালীর মতো বড় জাহাজে যাত্রী যাতায়াত করে গড়ে প্রায় দেড় থেকে দু শো। সেখানে ৪০ থেকে ৪৫ জন স্টাফ যাত্রী সেবায় নিয়োজিত থাকে। তার হিসাব অনুযায়ি প্রতি তিনজনের জন্য একজন করে স্টাফ দায়িত্ব পালন করছে রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটিতে। তারপরও বরকত উল্লাহর দাবি এখনও জনবলেও ঘাটতি রয়েছে প্রতিটি জাহাজেই।

বিজ্ঞাপন

তার মতে, সরকারি এ সংস্থার উদ্দেশ্য কেবল যাত্রী পরিবহনই নয়, তাদের নিরাপত্তা ও উন্নত সেবা দেওয়া। যা এ জাহাজগুলোয় পরিপূর্ণ ভাবেই পেয়ে থাকেন যাত্রীরা। জাহাজগুলোর ভেতরে খোলামেলা পরিবেশ, স্বাস্থ্য সম্মত খাবার কিংবা অন্যান্য সুবিধা ব্যক্তিমালিকানার লঞ্চ থেকে অনেক ভাল।

সরকার নির্ধারিত হারে ভাড়া নিতে গিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা যাচ্ছেনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ শ যাত্রী পরিবহন করা হত এখন তা কমে এসেছে। বাইরের চাকচিক্য নেই, ডাল সিজনে ভাড়া কম নেওয়ার সুযোগ নেই তাই সারা বছরই একই হারে ভাড়া আদায় করতে গিয়ে যাত্রী হারাতে হচ্ছে।

জানা গেছে, ঢাকা থেকে শুক্রবার বাদে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় একটি করে জাহাজ ছেড়ে যায় বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জের উদ্দেশ্যে। তবে সপ্তাহে একটি দিন বুধবার সে জাহাজ খুলনা পর্যন্ত যায়। পথিমধ্যে চাঁদপুর, রবিশাল, ঝালকাঠী, কাউখালী, হুলারহাট,চরখালী, মাছুয়া, সন্যাসী ও মোংলায় ঘাট দেয়। সর্বশেষ ঘাট খুলনায় যেতে সময় লাগে ২৫ থেকে ২৬ ঘণ্টা। যাত্রী পথে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত দ্রুত চলার সক্ষমতা রয়েছে জাহাজগুলোর।

সারাবাংলা/এমএস/এমঅাই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন