বিজ্ঞাপন

‘দেরাদুন বিপর্যয়ে’র পর সাকিবদের সামনে অনেক প্রশ্ন

June 6, 2018 | 11:12 am

।। মোসতাকিম হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

আবারও রুবেল হোসেনের এক ওভারেই এলোমেলো হয়ে গেল সবকিছু। নিদাহাস ট্রফির সেই ফাইনালে দিনেশ কার্তিক হয়ে গিয়েছিলেন অতিমানব। গতকাল মোহাম্মদ নবী রুবেলকে আরও একবার দাঁড় করিয়ে দিলেন দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি। শেষ দুই ওভারে যখন আফগানদের ২০ রান দরকার, রুবেলের এক ওভারেই খেলা শেষ করে দিয়েছেন নবী। আর তাতেই কাল দেরাদুনে আফগানদের কাছে হেরে গেছে বাংলাদেশ। তাতে অবশ্য এক দিক দিয়ে ভালোই হয়েছে, শেষ ওভারের স্নায়ুচাপটা আর নিতে হয়নি বাংলাদেশের। কিন্তু দায়টা কি শুধু রুবেলেরই? আফগানিস্তানের সঙ্গে এখন সিরিজ হারের পর চোখ রাঙাচ্ছে ধবলধোলাই, সেটাও কি ফ্লুক? প্রশ্ন উঠছে আরও অনেক কিছুর।

রশীদ খান যে আরও একবার ত্রাস হয়ে দাঁড়াবেন, সেটা যেন ম্যাচের চিত্রনাট্যেই লেখা ছিল। রশীদকে ঠেকাতেই বোধ হয় আজ ব্যাটিং অর্ডারে কিছুটা বদল আনে বাংলাদেশ, সাকিব ছয়ে নেমে গিয়ে ওপরে তুলে দেন সাব্বির-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু আগের ম্যাচের মতোই ১০ ওভারের পর বল হাতে নিয়ে রশীদ আবারও ভয়ংকর। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নামিয়ে রশীদকে ঠেকানোর যে পরিকল্পনা করেছিল বাংলাদেশ, সেটাও বুমেরাং হয়েছে। সাকিবকে আউট করার পর একই ওভারে ফিরিয়ে দিয়েছেন তামিম ও মোসাদ্দেককেও। পরে ফিরিয়ে দিয়েছেন সৌম্য সরকারকেও, চারটির মধ্যে রশীদের তিনটি শিকারই বাঁহাতি। অথচ বাংলাদেশ দল ডানহাতি ব্যাটসম্যান থাকলে বাঁহাতি বোলার আনবে না বা দুজন বাঁহাতি থাকলে ডানহাতি কেউ বল পাবেন না; এটা একরকম নিয়মই বানিয়ে ফেলেছে। সেটা যে কতটা শিশুতোষ ভাবনা, রশীদ আজ আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন।

দেরাদুনের উইকেট শট খেলার জন্য মোটেই আদর্শ ছিল না। এর মধ্যেও বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়েছিল, ১০ ওভারেই ৮১ রান চলে এসেছিল। কিন্তু রশীদ আসতেই যেন হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে ব্যাটিং। আজও বল বুঝে না খেলতে গিয়ে সাকিব, তামিমরা মূল্য দিয়েছেন। অথচ ওই সময় সিঙ্গেল বের করে খেললেই বিপর্যয়টা এড়ানো যায়, হয়তো জয়ের জন্য যথেষ্ট রানও হয়ে যেত। শেষ দিকে আবু হায়দার রনি তো দেখিয়েই দিয়েছেন, এমন উইকেটে কীভাবে খেলতে হয়।

বিজ্ঞাপন

১৩৪ রান অবশ্য জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। আফগানিস্তান অবশ্য শুরু থেকেই সংগ্রাম করছিল, তবে এখানেও তাদের অভিজ্ঞতারই জয় হয়েছে। মোহাম্মদ নবী জানতেন, একটা ওভারে ভালো করলেই ম্যাচ চলে আসবে পকেটে। ধৈর্য ধরে শুধু সেটার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আর রুবেল সেই সুযোগ করে দিলেন তাঁকে। ওই এক ওভার বাদ দিলে বোলাররা খারাপ করেননি। তবে ১৩৪ রান নিয়ে যে আগ্রাসী অধিনায়কত্বের দরকার ছিল, সেটা সাকিব করেছেন কি না প্রশ্ন উঠতে পারে। বিশেষ করে সামিউল্লাহ শেনোয়ারি বার বার শর্ট বলে মিসটাইম করছিলেন, ইনার সার্কেলে কোনো ফিল্ডার ছিল না। শেষ পর্যন্ত সেই শেনোয়ারি ৪৯ রান করেছেন। আজ অবশ্য মোসাদ্দেক, মাহমুদউল্লাহ ভালোই করছিলেন, তবে শেষের দিকে রুবেলকে আবারও বল তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। শেষ ওভারে বল করার জন্য বাংলাদেশ যথেষ্ট পরিকল্পনা করেছে কি না, সেই প্রশ্ন ওঠাও অপ্রাসঙ্গিক হবে না। আঙুল উঠতে পারে সাকিবের অধিনায়কত্বের দিকেও, চিন্তার সেই ছাপ যেন মাঠে অনেকটাই অনুপস্থিত।

মোটাদাগে বললে, ‘আফগানিস্তান বাংলাদেশকে হারিয়েছে পরিকল্পনা করেই। রশীদ জুজুটা কাজে লাগিয়েছে ভালোভাবেই, আর ব্যাটসম্যানরা অতটা স্বচ্ছন্দ না হলেও অপেক্ষা করেছেন বাজে বলের জন্য। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এতোদিন খেলার পরও আফগান-অভিজ্ঞতার কাছে তাই ম্রিয়মান মনে হয়েছে বাংলাদেশকে। শেষ ম্যাচে যাই হোক না, এই সিরিজ শেষে অনেক প্রশ্নের জবাব খুঁজতে হবে সাকিবদের।’

সারাবাংলা/এএম/এমও

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন