বিজ্ঞাপন

কে পাবেন গোল্ডেন বুট?

June 6, 2018 | 2:17 pm

 

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা ডেস্ক 

বিশ্বকাপ এলেই প্রতি বছর কোটি টাকার প্রশ্ন, শিরোপা জিতবে কে? সম্পূরক প্রশ্ন হিসেবে চলে আসতে পারে, সোনার বুট যাবে কার হাতে (পড়ুন পায়ে)? প্রতি বছরই দাবিদার হিসেবে নাম শোনা যায় বেশ কয়েক জনের। গত বার যেমন সেটি গিয়েছিল এক মিডফিল্ডারের কাছে, ৬ গোল করে কলম্বিয়ার হামেস রদ্রিগেজ হয়েছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতা। রদ্রিগেজকে ব্যতিক্রম ধরলে এর আগের বেশির ভাগ আসরেই সেটি কোনো স্ট্রাইকারই পেয়েছেন। এবারও কি সেরকম কিছু হবে, নাকি অন্য কেউ আলো কেড়ে নেবেন? এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কয়েকটি নাম।

 

বিজ্ঞাপন

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো

যেহেতু গোল্ডেন বল মানে সবচেয়ে বেশি গোল যে করবে সে তাই এ তালিকা শুরুই করা উচিত বর্তমান বিশ্বের সেরা স্কোরারের একজন দিয়ে । ২০১৭-১৮ মৌসুমে মাদ্রিদের জার্সি গায়ে রোনালদোর ৪৪ ম্যাচে নেমে গোলসংখ্যাও ৪৪। ২০১৫-১৭ , এই তিন বছরে পর্তুগালের হয়ে ২৯ বার মাঠে নেমে গোল করেছেন ২৯ টি। ইউরো জেতা পর্তুগাল আর টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতা রোনালদো যাচ্ছেন দারুণ আত্মবিশ্বাস নিয়েই।

 

বিজ্ঞাপন

গ্যাব্রিয়েল হেসুস

দীর্ঘদিন ভাল স্ট্রাইকারের অভাবে ভুগতে থাকা ব্রাজিলের হয়ে এবার বিশ্বকাপে ৯ নাম্বার জার্সি পরে মাঠে নামবেন ম্যান সিটি কোচ গার্দিওলার আস্থাভাজন গ্যাব্রিয়াল হেসুস। প্রিমিয়ার লীগে সিটির হয়ে একের পর এক দুর্দান্ত গোল করা হেসুসের পরিসংখ্যানই বলে দেয় কেন সে এবার গোল্ডেন বুটের অন্যতম দাবীদার। গেল মৌসুমে ৪২ ম্যাচে সিটির হয়ে মাঠে নেমে বল জালে জড়িয়েছে ১৭ বার। দলগতভাবে খেলে গোল দিয়ে আসায় বিশ্বাসী হেসুস ব্রাজিলের জার্সি গায়ে ১৫ বার মাঠে নেমে ৯ বার গোল করেছে।

টিমো ওয়ার্নার

বিশ্বকাপে জার্মানদের কেউ পাঁচ গোল করবে না তা কি আর হয় নাকি! মিরোস্লাভ ক্লোসা আর মুলার দুইজনেই দুইবার করে পাঁচটি করে গোল দিয়েছে বিশ্বকাপে। এবার জার্মানীর গোলমুখে মুলারের সঙ্গী হবে টিমো ওয়ার্নার। ২২ বছর বয়সী এ জার্মান ২০১৭ সালে জার্মানীর জার্সি গাঁয়ে ১০ ম্যাচ খেলে ৭ গোল করে বিশ্বকাপ দলে নিজের জায়গা অনেকটাই পাকা করে রেখেছে। একই বছরে জার্মানীর হয়ে ৬ ম্যাচে মুলারের গোল সংখ্যা মাত্র ১। যদিও প্রথম একাদশে জায়গা পেতে মারিও গোমেজের সঙ্গে লড়াই করতে হবে তাঁকে। তবে ওয়ার্নার আগেও দেখিয়েছেন, কেন তিনি ব্যবধান গড়ে দিতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

 

আঁতোইন গ্রিজমান

বিশ্বকাপ জেতার দৌড়ে খাতা কলমে বেশ এগিয়ে ফ্রান্স। তবে বিশ্বকাপ জিতে ফিরতে চাইলে অবশ্যই ইউরো ২০১৬ এর গ্রিজম্যানকেই দেখতে চাইবে সবাই। সেবার ইউরোতে ৬ গোল করে গোল্ডেন বুট জিতে দলকে ফাইনালে তোলা গ্রিজমান কয়েক দিন প্রীতি ম্যাচেও ইতালির বিপক্ষে গোল করেছেন। এবারও স্বাভাবিকভাবে দলের আক্রমণের বড় ভরসা।  ২০১৭-১৮ মৌসুমে নিজের ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে ৪৮ ম্যাচে ২৯ গোল করেছিলেন গ্রিজমান, এবারও বুটের বড় দাবিদার।

 

হ্যারি কেইন

প্রতিবারের মত এবারও ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের অন্যতম দাবীদার। এ দাবীর পেছনে তরুণ এ দলটির মূল কারণ কেইনের মত একজন তারকা। টটেনহ্যামের হয়ে গেল মৌসুমে ৪৮ ম্যাচে ৪১ গোল করা এ ইংলিশ স্ট্রাইকার  দেশের জার্সি গায়েও বেশ উজ্জ্বল।  ২৩ ম্যাচে বল জালে জড়িয়েছেন ১২ বার। এর মধ্যে ইউরোপের ক্লাবগুলোর হট কেক হয়ে যাওয়া কেইনের ফর্মের ওপর অনেকটুকুই নির্ভর করছে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ ভাগ্য। শুধু তো একজন স্ট্রাইকার নন, তিনি যে দলের অধিনায়কও।

 

রোমেলু লুকাকু

গত বিশ্বকাপ আর ইউরো শেষে বেলজিয়ামের সোনালী প্রজন্মের পুনরায় সুযোগ এসেছে এবার বিশ্বকাপে কিছু করে দেখানোর।  ডি ব্রুইন-হ্যাজার্ডের মাঝমাঠের সামনে থাকবেন ২৪ বছর বয়সী রোমেলু লুকাকু। নিজের ক্লাব ম্যানইউর জার্সি  গায়ে গেল মৌসুমে ৫১ ম্যাচে করেছে ২৭ গোল সে। তবে দেশের হয়ে বিগত ৩ বছরে খুবই ভাল সময় যাচ্ছে লুকাকুর। এ সময়ে ২৪ ম্যাচে মাঠে নেমে দেশের হয়ে গোল করেছে ২২ টি।

 

মো সালাহ

মিশরের জার্সি গায়ে ৫৭ ম্যাচে ৩৩ গোল করা সালাহ বিশ্বকাপে কতটা কী করতে পারবেন, সেটা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। চোট থেকে সেরে ওঠার পথে থাকলেও বিশ্বকাপে শুরু থেকে খেলবেন, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে গোল্ডেন বুটের সম্ভাবনা তো বটেই, মিশরের বিশ্বকাপ স্বপ্নও খাবে ধাক্কা।  এই মৌসুমে লিভারপুলের জার্সি গায়ে ৫২ ম্যাচে গোল করেছে অবিশ্বাস্য ৪৪ টি।

 

লুইস সুয়ারেজ

সময়টা মাঠে খুব একটা ভাল না গেলেও গেল মৌসুমে বার্সার হয়ে ৫১ ম্যাচে ৩১ গোল করেছেন সুয়ারেজ। উরুগুয়ে দলকে যদি কেউ কিছু এবার বিশ্বকাপে এনে দিতে পারে সেটা সুয়ারেজের ওপরেই অনেকটুকু নির্ভরশীল। দেশের হয়ে উরুগুয়ের খেলোয়াড়দের শেষ বয়সে জ্বলে উঠার ইতিহাস সবারই জানা। ৯৭ ম্যাচে ৫০ গোল করা সুয়ারেজ তাই নিজের সেরাটা রাশিয়ায় দিতে পারলে গোল্ডেন বুটের তালিকায় উঠে আসবেই।

রবার্ট লেভানডফস্কি

এই মুহুর্তে বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন। বায়ার্নেও হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভালো কিছু করতে না পারলেও বুন্দেসলিগায় ছিলেন যথারীতি দুর্দান্ত।  এই মৌসুমে জার্মান লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাও ছিলেন তিনি। পোল্যান্ডের হয়েও দারুণ উজ্জ্বল। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দেশের হয়ে ১৬ গোল শুধু এই বিশ্বকাপের নয়, ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বাছাইপর্বেও ইতিহাসেরই রেকর্ড। সাত বার পোলিশ বর্ষসেরা ফুটবলার লেভানডফস্কির ওপর এবার থাকবে আলাদা চোখ।

বিশ্বকাপের পরতে পরতে উত্তেজনা। সেই উত্তেজনার এক বড় অংশ জুড়েই থাকবে গোল। কে হবে সবচেয়ে বেশি গোলের মালিক এবার বিশ্বকাপে, তা জানতে আপাতত অপেক্ষা ছাড়া আর উপায় নেই। তবে যেই সবচেয়ে বেশি গোল করে জিতে নিক গোল্ডেন বুট, লড়াইটা জমবে ভালোই।

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন