বিজ্ঞাপন

সাকিব বলছেন ‘মানসিক বাধা’, আসলেই কি তাই?

June 8, 2018 | 1:04 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

আরও একবার শেষ মুহূর্তে এসে স্বপ্নভঙ্গ, আরও একবার তীরে এসে তরী ডুবে যাওয়া। আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজের শেষ ম্যাচেও পারেনি বাংলাদেশ, তিনটি টি-টোয়েন্টিই হেরে হতে হয়েছে ধবলধোলাই। তবে আগের দুবারের চেয়ে কাল অনেক বেশি কাছাকাছি গিয়েছিল বাংলাদেশ, শেষ পর্যন্ত হেরে গেছে এক রশিদ খানের কাছেই। সাকিব আল হাসান অবশ্য ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে দাবি করে গেলেন, ‘মানসিক বাধার’ কারণেই বার বার এমন হচ্ছে।

অথচ কাল সিরিজে প্রথমবারের মতো মনে হচ্ছিল, কিছু জিনিস বাংলাদেশ ঠিকঠাক করতে পেরেছে। আগের দুই ম্যাচেই শেষ দিকে এসে পেসাররা ডুবিয়েছেন দলকে। কাল শেষ দুই ওভারে সাকিব দায়িত্ব নিয়ে বল করেছেন, অন্য পাশ থেকেও এনেছেন স্পিন। সেই জুয়াটাও বিফলে যায়নি, আফগানিস্তান তাই ১৫০ ও করতে পারেনি। এরপর এক ওভারে পাগুলে ওই দুই রান আউট বাদ দিলে বাকি সব কিছু ঠিকঠাক মতোই চলছিল। শেষ দুই ওভারে ম্যাচ তখন মুঠোর বাইরে চলে যাচ্ছে, মুশফিক এক ওভারেই ২১ রান নিয়ে আবার ধরে ফেলেছিলেন তা। কিন্তু রশিদ খানের শেষ ওভারেই এলোমেলো হয়ে গেল সবকিছু। নয় রানও নিতে পারল না বাংলাদেশ।

কিন্তু তারপরও থাকে অনেক প্রশ্ন। এই রশিদকে সামলাতেই সিরিজের আগে থেকে নানান রকম পরিকল্পনা করে আসছে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ম্যাচে তার কিছুই কাজে লাগেনি, রশিদ ঠিকই অপ্রতিরোধ্য ছিলেন। কাল প্রথম দুই ওভারে দিলেন ১৫ রান, মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ বাড়ির কাজটা এবার একটু ভালোমতো করেছে। কিন্তু শেষ ওভারে আবারও রশিদ হয়ে গেলেন দুর্বোধ্য এক ধাঁধাঁ। একটা বাউন্ডারিই খেলাটা যখন নিশ্চিত করতে পারত, সেখানে হলো না একটিও। শেষ বলে তিন রানও যখন হওয়ার কথা ছিল, কোনো এক বিচিত্র কারণে ব্যাটসম্যানরা সেটিও নিতে পারলেন না। তাহলে অন্তত ম্যাচটা সুপার ওভারেও যেত।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু শেষে এসে খেই হারানোর এই রোগ সারবে কবে? শেষের নাটকীয়তায় হার এখন বাংলাদেশের জন্য একদমই জলবত তরলং হয়ে গেছে। সাকিব নিজেও এই প্রশ্নের জবাব খুঁজে ফিরছেন, ‘আমি আসলে জানি না কেন এরকম হয়। আমি নিজে কখনো এরকম পরিস্থিতিতে পড়িনি, ব্যাটে বা বলে কোনোটাতেই নয়। আমার মনে হয় মানসিক বাধার জন্য এমন হচ্ছে।’

সেই বাধাটা তো এতোদিন ধরে নিয়মিত এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার পর কেটে যাওয়ার কথা। বরং এসব পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানেরই বেশি থাকা উচিত। কিন্তু আগের ম্যাচে মোহাম্মদ নবী যেমন ম্যাচটা বের করে নিয়েছিলেন, কাল রশীদ খান পরিকল্পনা করে বল করে ঠিকই ম্যাচ জেতালেন। শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক স্ট্রাইকে থাকার পরও রানটা হলো না। অথচ এই দুজন এমন স্নায়ুক্ষয়ী মুহূর্ত কম দেখেননি। নিদাহাস ট্রফিতেই তো দুই ভায়রা দুই ম্যাচে বলতে গেলে একাই দলকে জিতিয়ে এনেছেন। তাহলে কি সেই মানসিক বাধার নাম রশিদ খানই ছিল?

তবে আপাতত শুধু এই ম্যাচ বাদ দিয়ে সাকিবকে খুঁজতে হচ্ছে আরও অনেক প্রশ্ন। যেভাবে তিনটি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ, তাতে প্রশ্ন উঠে গেছে টি-টোয়েন্টিতে সামর্থ্য নিয়েই। সাকিব অবশ্য বলছেন, তিন বিভাগেই তারা আরও ভালো করতে পারতেন, সবগুলোতেই ব্যর্থ হয়েছেন। এমনক শরীরী ভাষাও ঠিক ছিল না। বিশেষ করে ফিল্ডিং নিয়ে নিজের অসন্তোষও বলেছেন অকপটে।

বিজ্ঞাপন

এসব কিছুই অবশ্য অধিনায়ক হিসেবেই বলবেন স্বাভাবিকভাবে। দায়টাও নিতে হবে তাঁকেই বেশি। তবে সামনেই যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর কড়া নাড়ছে, খুব দ্রুতই এসব ‘মানসিক বাধার’ উৎসটা খুঁজে বের করতে হবে। নইলে দেরাদুন-বিপর্যয় ফিরে ফিরে আসবেই।

সারাবাংলা/ এএম/এসএন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন