বিজ্ঞাপন

‘সৌদিতে নারীদের গৃহকর্মী হিসেবে পাঠানোর দরকার নেই’

June 11, 2018 | 1:48 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেছেন, সৌদি আরবে নারীদের গৃহকর্মী হিসেবে পাঠানোর দরকার নেই। সরকারকে বলবো, আপনারা সৌদিতে নারীদের পাঠাবেন না। সেখানে পাঠানোর চেয়ে আমরা দেশেই তাদের চাকরির ব্যবস্থা করতে পারবো।

সোমবার (১১ জুন) সকালে মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক এবং লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচারর্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশেন অব বাংলাদেশের (এলএফএমএবি) যৌথ উদ্যোগে বিদেশ ফেরত ২২ জন নারীকে আর্থিক সহায়তা কার্যযক্রম অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সৌদি ফেরত নারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে রয়েছি। আপনাদের দেশের কলকারখানাগুলোতে সম্মানের সঙ্গে কাজ দেওয়া হবে। আমাদের একটা সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়ে গেছে, আমরা তা অস্বীকার করতে পারবো না।’

বিজ্ঞাপন

মানুষ কিভাবে এতো দানব হতে পারে প্রশ্ন রেখে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ফেরত আসার এসব শ্রমিকরা বাড়ি যেতে পারছে না, নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে তারা। দুটো পলিথিন ব্যাগ আর দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে তারা কোনোরকমে দেশে ফিরে এসেছেন। আমাদের সুযোগ আছে, আমরা সম্মানের সঙ্গে তাদের চাকরিতে নিবো। আমাদের দেশের নারীরা গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরব যাবে না। আমরা তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরি দেবো। আমার সঙ্গে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ সবার যোগাযোগ রয়েছে। আমি তাদেরও আহ্বান জানাবো এসব শ্রমিকদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজের ব্যবস্থা করার জন্য।’

ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের হেড শরিফুল হাসান বলেন, ‘এয়ারপোর্টে মধ্যরাতে ফিরে আসে আমাদের এই মেয়েরা। তাদের যাওয়ার কোনো জায়গা থাকেনা। দুঃসহ অবস্থার এমন এমন বর্ণনা তারা দেয় যে আপনারা রাতে ঘুমাতে পারবেন না। আমি আমার বাসার মেয়েটাকে সৌদি আরব পাঠাবো না, তাহলে এদের কেন পাঠাচ্ছি? আমাদের মন্ত্রী-সচিবরা কেন সৌদি আরবের সুরে কথা বলে? কিছু করতে না পারুক অন্তত এই মেয়েগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে বলতে তো পারে আমরা দুঃখিত। আমাদের মেয়েদের আমরা গৃহকর্মী হিসেবে পাঠাবো কি না তার সিদ্ধান্ত আপনাদের।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘আমরা বছরে ১৪-১৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাই। এতগুলো মানুষ ফিরে আসে কতো টাকা সঙ্গে নিয়ে? যেই টাকা পায় সেই টাকায় চাকরি তো আমরা এখানেই দিতে পারি। এসব বিষয় সরকারকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। শুধু নারীদের না পুরুষ শ্রমিকদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পাঠাতে হবে। আমাদের দেশের মেগা প্রজেক্ট পদ্মা ব্রিজ কাদের টাকায় হচ্ছে? আমাদের এই শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের টাকায়।’

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠান শেষে ২২ জন ভুক্তভোগী নারীকে ১ লাখ টাকা করে এককালীন অনুদান দেওয়া হয় এবং ৫০ জন নারী শ্রমিককে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাকরির নিশ্চয়তা প্রদানের লক্ষে এক সমঝোতা স্বাক্ষর করে ব্র্যাক এবং লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সারাবাংলা/জেএ/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন