বিজ্ঞাপন

সম্মিলিত উদ্যোগে শিশুশ্রম প্রতিরোধের আহ্বান

June 12, 2018 | 9:02 am

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস আজ (১২ জুন)। ‘প্রজন্মের জন্য নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বের  ৮০টি দেশের সাথে বাংলাদেশেও পালিত হবে এই দিবস।

শিশুর অধিকার সুরক্ষা ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম প্রতিরোধের লক্ষ্যে আইএলও ২০০২ সাল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে আসছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে বর্তমানে ১২ লাখ ৮০ হাজার শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। তবে সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুদের প্রত্যাহারের লক্ষ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণের জন্য প্রায় ২৮৫ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছে। এরই মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্প ও চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পকে শতভাগ শিশুশ্রম মুক্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে শ্রম মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম নিরাসনে সম্প্রতি নতুন করে কর্মপরিকল্পানা প্রণয়ন করেছে। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, জাতীয় পর্যায় থেকে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে শিশুশ্রম নিরসনে কমিটি কাজ করছে।

দিবসটির গুরুত্ব বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি শিশুশ্রম প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি শিশুদের কল্যাণে নিয়োজিত বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সিভিল সোসাইটি ও গণমাধ্যম, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরো কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ সরকার শিশুদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় আন্তরিক জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, সরকার জাতীয় ‘শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০’, ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫’ প্রণয়ন করেছে। শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ৩৮ ধরনের কাজ চিহ্নিত করে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত শিশুদের প্রত্যাহার করে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বিষয়ক আইএলও কনভেনশন অনুসমর্থন করেছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এর ফলে দেশে শিশুশ্রমের হার ক্রমশ কমে আসছে। আগামী প্রজন্মের নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে এ দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন।

শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসের বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা কমেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর শিশুশ্রম সমীক্ষা ২০০৩ অনুযায়ী বাংলাদেশে শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা ছিল ৩২ লাখ। ২০১৩ সালে শিশুশ্রম সমীক্ষায় তা ১৭ লাখে নেমে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

বাণীতে শেখ হাসিনা বলেন, শিশুদের উন্নয়ন ও কল্যাণে ‘সবার জন্য শিক্ষা’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি দারিদ্র্য দূরীকরণের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনেও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বিষয়ক আইএলও কনভেনশন অনুসমর্থন করেছে। আমরা শিশুশ্রম নিরসনের লক্ষ্যে বিভিন্ন নীতি ও পরিকল্পনা নিয়েছি। এসব কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদ কাজ করছে। এই পরিষদ শিশুশ্রম নিরসনে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কমিটিগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ৩৮ ধরনের কাজ চিহ্নিত করে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত শিশুদের প্রত্যাহার করে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। শিশুশ্রম প্রতিরোধ ও শিশুদের কল্যাণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সব ধরনের সংস্থা ও ব্যক্তিকে আরো কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রীও।

দিবসটি উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইএলও, সেভ দ্য চিলড্রেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম এবং ওয়ার্ল্ড ভিশনের সহযোগিতায় শিশুশ্রম প্রতিরোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক আলোচনা সভা, সারাদেশে পোস্টারিং ও লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বাসস।

সারাবাংলা/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন