June 12, 2018 | 10:19 am
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরগুলোতে কর্মরত বিদেশি ত্রাণকর্মীদের ভিসা সমস্যা সমাধান করা হবে বলে কানাডার মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত বব রে’কে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সরকার ত্রাণকর্মীদের জন্য বিশেষ ক্যাটাগরির ভিসা ইস্যু করছে। এ বিষয়ে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা সরকারকে জানানোর জন্য তিনি বিশেষ দূতকে অনুরোধ করেন।
কানাডার স্থানীয় সময় সোমবার (১১ জুন) সকালে (বাংলাদেশ সময় সোমবার দিবাগত মধ্যরাত) বব রে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার হোটেল স্যুটে দেখা যান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাকে এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সতর্কতার সঙ্গে বিষয়টি দেখাশোনা করছে। কারণ অনেক বিদেশি নাগরিক ট্যুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গা শিবিরে কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, ত্রাণকর্মীর বেশে বহু বিদেশি নাগরিকের অনুপ্রবেশ নিয়ে সরকার শঙ্কিত; যা নারী ও শিশু পাচার, যৌন অপব্যবহার, সন্ত্রাস এবং অন্যান্য সামাজিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, বব রে প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তিনি ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেছেন। ওই সময় তিনি সহিংসতার কারণে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলমানদের দুর্দশা প্রত্যক্ষ করেছেন।
রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের ওপর বব রে একটি প্রতিবেদন তৈরি করছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ১০ লাখ মানুষকে আশ্রয় দেওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ। মানবিক এই ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কানাডা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও বব রে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য ভোগান্তির বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন। ওই এলাকায় ভূমিধস, বন্যা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূতকে জানান, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বর্ডার গার্ড, সেনাবাহিনী ও রাজনৈতিক দলের কর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত প্রশিক্ষিত লোকজনের একটি দল যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
পরে সাসকাটচেওয়ান প্রদেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং বাণিজ্য ও রফতানি উন্নয়ন মন্ত্রী গর্ডন ওয়েন্ট কিউসি এবং অভিবাসন ও ক্যারিয়ার ট্রেনিং মন্ত্রী জেরেমি হ্যারিসন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে আলোচনা করেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বহু বছর ধরে কানাডার বিশেষ বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্যের জন্য তাকে অভিনন্দন জানান কানাডা সরকারের মন্ত্রীরা। তারা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ ও প্রযুক্তি স্থানান্তরে আগ্রহের কথাও জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের কথা স্মরণ করে বলেন, শিক্ষা ও নার্সিং খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরো জোরদারের অনেক সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া কমার্শিয়াল করপোরেশন অব কানাডার প্রেসিডেন্ট ও সিইও’র নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। প্রতিনিধিদলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যবসায়ীরাও ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডের (বিডা) চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং কানাডায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মিজানুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বাসস।
সারাবাংলা/টিআর