বিজ্ঞাপন

রাশিয়া যাদের মিস করবে

June 12, 2018 | 2:32 pm

সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বকাপে দেশের জার্সিতে মাঠ মাতানো অনেকেই সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছেন ভিন্ন ভিন্ন কারণে। রাশিয়া বিশ্বকাপে ফর্মহীনতার পাশাপাশি বেশ কজন মহারথীর বিশ্বকাপ স্বপ্নের সমাধি হয়েছে দলের ভরাডুবিতে, এমনকি ইনজুরিতেও। দেখে নেয়া যাক উল্লেখযোগ্য তেমনি কয়েকজন তারকা যাদের অনেকের জন্যে রাশিয়া বিশ্বকাপই ছিল বিশ্বমঞ্চে নিজেদের শেষ সুযোগ।

জিয়ানলুইজি বুফন (ইতালি): ১৯৫৮ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে নেই আজ্জুরিরা। বাছাইপর্বের প্লে-অফে সুইডেনের কাছে পরাজয় এঁকে দিয়েছিল ইতালির বর্ষীয়ান কিছু তারকাদের সমাপ্তিরেখা। তার মাঝে উল্লেখযোগ্য গত দুই যুগ ধরে ইতালীয় ফুটবলের প্রতীক হয়ে যাওয়া গোলকরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন। সুইডেনের বিপক্ষে সেদিনের পরাজয়ের পরপরই দিয়েছিলেন অবসরের ঘোষণা। তবে দ্রুতই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে আবারো ফেরেন জাতীয় দলে। বিশ্বকাপে সর্বকালের অন্যতম সেরা এই গোলরক্ষকের অনুপস্থিতি ফুটবল ভক্তদের জন্য হবে বেশ পীড়াদায়ক।

মারিও গোতজে (জার্মানি): ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জার্মানির জয়ের নায়ক মারিও গোতজের জীবনটা বদলে গেছে আকাশ পাতাল। সুপার-সাব হিসেবে নেমে সেই গোলের পর গোতজের ক্যারিযারের যাত্রাটা হয় উল্টোপথে। বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দিয়ে ক্রমেই হারাতে থাকেন ছন্দ। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ২০১৬তে আবারো ডর্টমুন্ডে ফিরে আসলেও অনুজ্জ্বল দুটি মৌসুমের পর হারিয়েছেন জার্মান কোচ জোয়াকিম লো‘র আস্থা। ফলাফল জায়গা পাননি জার্মানির প্রাথমিক বিশ্বকাপ স্কোয়াডেও।

বিজ্ঞাপন

দানি আলভেস (ব্রাজিল): তারুণ্যনির্ভর ব্রাজিল দলটিকে ধরা হচ্ছে এবারের আসরের ফেভারিট হিসেবেই। তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগেই সেলেসাওদের হেক্সা জয়ের মিশনে বড় ধাক্কা হয়ে আসে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার দানি আলভেসের ইনজুরি। পিএসজির হয়ে কোপা দে ফ্রান্সের ফাইনালে খেলার সময় পাওয়া আঘাতটা এতোটাই গুরুতর ছিল যে তাতে বিশ্বকাপই শেষ হয়ে যায় সাবেক এই বার্সা তারকার।

আরিয়েন রোবেন (নেদারল্যান্ডস): ইতালির মতো এবারের বিশ্বকাপে নেই আরেক বড় দল নেদারল্যান্ডস। ২০১০ বিশ্বকাপে আরিয়েন রোবেনদের ফিরতে হয়েছিল শিরোপার খুব কাছ থেকে। সেবার ফাইনালে স্পেনের বিপক্ষে রোবেন মিস করেছিলেন গোলের কিছু সহজ সুযোগ। যার বদলা নেন চার বছর পর, গ্রুপ পর্বের ম্যাচে প্রায় একাই ভিসেন্তে দেল বস্কের দলকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়ে। রাশিয়া বিশ্বকাপে বাছাইপর্ব থেকে বিদায়ের পর নেদারল্যান্ডসের হয়ে ১৫ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানেন রোবেন।

সার্জিও রোমেরো (আর্জেন্টিনা): মেসিময় আর্জেন্টিনা দলটির আলোচনা করতে গেলেই সবার প্রথমেই চলে আসে দুর্দান্ত এক আক্রমণভাগের। আর তাতে অনেকটাই আড়ালে ঢাকা পরে যায় দীর্ঘদিন ধরে লা বিয়েসেলেস্তাদের রক্ষণভাগের অতন্দ্র প্রহরী হয়ে থাকা রোমেরোর কীর্তি। ২০১৫ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেয়ার পর থেকে সেভাবে খেলার সুযোগ পেয়েছেন কমই। তবু জর্জ সাম্পাওলির বিশ্বকাপ স্কোয়াডের প্রথম পছন্দ ছিলেন রোমেরোই। দল ঘোষণার দিনদুয়েক পরই দুর্ভাগ্যজনক ইনজুরির শিকার হয়ে ছিটকে গেছেন বিশ্বকাপ থেকেই।

বিজ্ঞাপন

অ্যালেক্সিস সানচেজ (চিলি): এবারের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের অন্যতম চমক ছিল বর্তমান কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন চিলির বাদ পড়া। দলটির অন্যতম বড় তারকা সানচেজ চেষ্টা করেছিলেন দেশকে বাছাইপর্বের বৈতরণী পার করার। যদিও শেষ পর্যন্ত গোলপার্থক্যে চিলিকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয় পেরু। সাথে স্বপ্নভঙ্গ হয় সানচেজেরও। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেয়া ২৯ বছর বয়সী এই তারকা হয়তো কাতার বিশ্বকাপে (২০২২ সাল) আবারো সুযোগ পাবেন নিজের ঝলক দেখানোর।

ম্যানুয়েল লানজিনি (আর্জেন্টিনা): গত মাসে আর্জেন্টিনা কোচ জর্জ সাম্পাওলির ২৩ সদস্যের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা করে নেন ওয়েস্টহাম ইউনাইটেডের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ম্যানুয়েল লানজিনি। হাইতির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ খেলেছিলেন তিনি। কিন্তু, বিশ্বকাপের একদম আগমুহূর্তে অনুশীলনে ডান হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ায় রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছেন। যেন ডান হাঁটুর ব্যথা এখন তার বুকের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছে। এভাবে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হওয়াটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে তার। ৮ থেকে ৯ মাসের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন তিনি। কিন্তু এমন অবস্থাতেও দলের জন্য শুভকামনায় কোনো ঘাটতি নেই ওয়েস্টহাম মিডফিল্ডারের।

এছাড়াও স্লোভেনিয়ার গোলরক্ষক জন ওব্লাক, ইতালির লিওনার্দো বনুচ্চি, জিওরজিও চিয়েলিনি, মার্কো ভেরাত্তি, নেদারল্যান্ডসের স্টিফান ডি ভার্জ, ভারজিল ভ্যান জিক, চিলির আরতুরো ভিদাল, স্লোভাকিয়ার মারেক হামসিক, আমেরিকার ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক, ওয়েলসের গ্যারেথ বেল, বসনিয়ার ইডেন জেকো, গ্যাবনের এমেরিক আওবামেয়াংকে দেখা যাবে না রাশিয়ার বিশ্বকাপ স্টেডিয়াম মাতাতে।

সারাবাংলা/এমআরপি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন