বিজ্ঞাপন

ঈদের ছুটিতেও ব্যাহত হবে না চিকিৎসাসেবা

June 15, 2018 | 7:22 pm

।। জাকিয়া আহমেদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ঈদের ছুটিতে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা ব্যহত হয় বলে অভিযোগ থাকে রোগীদের। তবে গত কয়েকবছর ধরেই এ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে, হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে পৃথক রোস্টার করা হয়। তাতে রোগীদের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত থাকে, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের এই সময়ে সাধারণত অমুসলিমদের নিয়ে বিশেষ রোস্টার করা হয়। এর ফলে রোগীদের কোনও ধরনের সমস্যা হবে না।

ঈদ উল ফিতরের ছুটির মাঝে আগামী ১৮ জুন বিশেষ ব্যবস্থায় রোগীদের সুবিধার্থে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্বিভাগ খোলা থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস, অফিস ও বৈকালিক স্পেশালাইজড কনসালটেশন সার্ভিস বন্ধ থাকবে।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ( হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগামী ১৬ জুন শনিবার ও ১৭ জুন রবিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাশ, অফিস, হাসপাতালের বহির্বিভাগ বৈকালিক স্পেশালাইজড কনসালটেশন সার্ভিস বন্ধ থাকবে। এছাড়াও, ১৫ জুন শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি হওয়াতে সেদিনও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস, অফিস ও হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ থাকবে। তবে বন্ধের দিনগুলোতে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ বিভাগ সমূহ ও হাসপাতালের ইনডোর সেবা প্রচলিত নিয়মে চালু থাকবে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিশেষ ব্যবস্থায় আমাদের হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রোস্টার করে দেওয়া হয়েছে। আমি নিজে তার তদারকি করছি। তাদের ঈদের দিন, ঈদের পরের দিন এবং তার পরের দিনের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে, যেহেতু ছুটির এ সময়টাতে বাইরের খাবার পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। একইসঙ্গে রোগীদের জন্যও ঈদের দিন থাকছে উন্নত মানের খাবার।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ১১’শ এর মতো রোগী রয়েছেন। ছুটি শুরু হবার পর থেকে আমরা রোস্টার নিজেরাই পর্যবেক্ষণ করছি, কঠোর নজরদারি রেখেছি হাসপাতালে, এই রোগীদের যেন কোনোরকমের অসুবিধা না হয় সেজন্য আমরা বদ্ধ পরিকর।’

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের লায়ন্স আই ইন্সটিটিউট অ্যান্ড হসপিটালের চিকিৎসক শুভ বড়ুয়া জানালেন, ছুটি শুরু হবার দিন এবং ঈদের দিন সকালে তিনি ডিউটিতে থাকবেন।

আবার হাজারীবাগ নগর মাতৃসদনের চিকিৎসক ফারজানা ববিও জানালেন, ঈদের দিন তিনি হাসপাতালে থাকবেন। ফারজানা জানান, ঈদের আগের দিন এবং ঈদের দিনে ডিউটি করবেন। তবে এ নিয়ে তার কোনও আক্ষেপ নেই। বরং হাসপাতালেই তার ডিউটি করতে ভালো লাগে অসুস্থ এই মানুষগুলোর সঙ্গে।

বার্ন ইউনিট সবসময় ২৪ ঘণ্টা সারাবছর খোলা থাকে-জানালেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘জরুরি যেকোনো প্রয়োজনে যেকোনো চিকিৎসককে ডাকলেই আমরা পাই এবং পেয়েছি। এবাররও তার ব্যতয় হবে না।’

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ দিনের বিশেষ রোস্টার করা হয়েছে জানালেন, পরিচালক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া। একই সঙ্গে, সার্জারি, মেডিসিন, পেডিয়াট্রিক এবং নিউরো সার্জারি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দল করা হয়েছে, আর এসব কিছুর তদারকি তিনি নিজেই পরিচালনা করবেন।

বিজ্ঞাপন

ঈদের দিনে রোগীদের জন্য উন্নত মানের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে জানালেন, ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আব্দুর হানিফ টাবলু বলেন, ‘আমাদের বিভাগে সারাবছর যেভাবে কার্যক্রম চলে এই ছুটিতেও তার ব্যতিক্রম হবে না।’ ছুটির কোনও প্রভাব পরবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জরুরি কার্যক্রম যেভাবে চলছে সেভাবে ছুটির সময়েও চলবে।’

জাতীয় ক্যান্সার ইন্সটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ঈদের সময়ে খুব বেশি জটিল না হলে রোগীরা থাকেন না, তাই সব হাসপাতালেই ছুটির সময়ে রোগী সংখ্যা কম থাকে। কিন্তু সেজন্য আমাদের ব্যবস্থাপনায় কোনো ঘাটতি থাকে না বা চিকিৎসক কম রাখা হয় না।’

একইকথা বলেন জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রশীর আহমদ। তিনি বলেন, ‘রোগীর চাপ কমে গিয়েছে, খুব জরুরি না হলে রোগীরা এই সময়টাতে হাসপাতালে থাকেন না। তবে রোগী সংখ্যা যাই হোক না কেন ঈদের বিশেষ রোস্টার ১৫ জুন থেকে করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসক-নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করছেন। ছুটির সময়ে জরুরি, অভ্যন্তরীণ, সার্জারি বিভাগ চালু থাকবে। সমানহারে চিকিৎসকরা থাকবেন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ( নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র)। সুতরাং, রোগীদের কোনো সমস্যা হবে না বলেই আশা করছি, একইসঙ্গে জেষ্ঠ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অন কলে থাকবেন। যেকোনো প্রয়োজনে তারা হাসপাতালে আসবেন।’

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. নাহিদুজ্জামান রিমন বলেন, ‘ঈদের দিন এবং ঈদের পর দিন অমুসলিমদের নিয়ে সেন্ট্রাল রোস্টার করে রোগীদের সেবা কার্ক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। সোমবার থেকে আবার রেগুলার রোস্টারে হাসপাতাল চলবে।’

সারাবাংলা/জেএ/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন