June 15, 2018 | 6:07 pm
।। উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীনের একমাত্র ছেলে ও মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাক্ষী সুমন জাহিদকে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার (১৫ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তার জানাজা হয়।
বৃহস্পতিবার ঢাকার খিলগাঁওয়ে রেল লাইন এলাকায় সুমন জাহিদের কাটা পড়া লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে তার মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক। এই মৃত্যুর ঘটনা অনুসন্ধানে কমলাপুর থানার এএসআই আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে অপমৃত্যু মামলা করেছেন।
সুমন জাহিদের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি শুক্রবার কমলাপুর রেল স্টেশন পরিদর্শনে গেলে সুমন জাহিদের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা।
আইজিপি বলেন, ‘এটি আমাদের তদন্তের পর্যায়ে আছে এখন পর্যন্ত। এখনই মন্তব্য করার সুযোগ নাই যে এটা হত্যা, না আত্মহত্যা, না কি অন্য কিছু।’
‘আমাদের যেসব ইউনিটগুলো আছে, তারা প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করছে মৃতদেহ থেকে। এছাড়া পারিপার্শ্বিক অবস্থা খতিয়ে দেখছে। চিকিৎসকের কাছ থেকে যে রিপোর্ট পাওয়া যাবে, সব নিয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত বলতে পারব।’
সেলিনা পারভীনকে ১৯৭১ সালে আল বদর বাহিনী ধরে নিয়ে যায়। ওই সময় সুমন জাহিদের বয়স ছিল ১০ বছর। পরে অন্য বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে রায়ের বাজারে সেলিনা পারভীনের লাশ পাওয়া গিয়েছিল।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারে সুমন জাহিদ আল বদর নেতা চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা এই দুই যুদ্ধাপরাধীরই মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।
শুক্রবার খিলগাঁওয়ে রেল লাইন এলাকায় যান সারাবাংলার এ প্রতিনিধি । সেখানে তিনি কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন।
নুরুন্নাহার নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমার মেয়ে রেল লাইন এলাকায় খেলছিল। মেয়ে এসে বলে একটা লোক মারা গেছে।’
এক শিশু বলে, ‘আমার সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল। আমাকে জিজ্ঞাসা করে, ‘তুমি ভালো আছো?’
সুমন জাহিদের বিষয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম শুক্রবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের বলেছেন, সুমন জাহিদ আত্মহত্যা করেছেন নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে সেটি এখনই স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকও এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারেনি। এটি নিয়ে তদন্ত চলছে। এ ঘটনার পর তার প্রোফাইল সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
সেখানে সুমনের আত্মীয় বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘সে আত্মহত্যা কেন করবে? এরকম কোনো কারণ তো আমাদের জানা নেই। তাকে বেশ কয়েকবার হুমকি দেওয়া হয়েছিল সেটা জানতাম।’
‘পুলিশ বাসায় গিয়ে প্রায়ই পাহারা দিয়ে আসত সেটাও জানতাম। তাকে হত্যা করা হয়েছে’ বলেন বুলবুল আহমেদ।
সারাবাংলা/ইউজে/একে