বিজ্ঞাপন

নতুন চাঁদের হাসি আকাশে, রাত পোহালেই ঈদ

June 15, 2018 | 7:30 pm

।। সারাবাংলা ডেস্ক।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: এক মাস সিয়াম সাধনার পর খুশির বার্তা নিয়ে মুসলিম উম্মার ঘরে আনন্দের ঝর্নাধারায় সমাগত ঈদ। আকাশে-বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে সেই সুর-লহরি ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’…।

শুক্রবার শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ায় শনিবার সারাদেশে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনায় উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদ উল ফিতর।

শুক্রবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় ইসলামিক বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানানো হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।

বিজ্ঞাপন

বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে মতিউর রহমান জানান, বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। সেই অনুযায়ী, আগামীকাল শনিবার সারা দেশে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদ উল ফিতর উদযাপিত হবে। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।

 শুক্রবার সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, সিঙ্গাপুরসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। তার সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশেও বিভিন্ন গ্রামে ঈদ উদযাপিত হয়েছে। সাধারণত সৌদি আরবে যেদিন ঈদ হয়, তার পরের দিন বাংলাদেশে ঈদ হয়। সেই সুবাদে শনিবার ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি ছিল দেশবাসীর মধ্যে। চাঁদ দেখা কমিটির ঘোষণার মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত হলো।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে দেশবাসীর সুখ-সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করেছেন। পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহ’র ঐক্য, বিশ্বভ্রাতৃত্ব, সুখ-সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানান এবং পরস্পরের সঙ্গে মিলে-মিশে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানান।

এদিকে পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সেড়ে ফেলেছে দেশবাসী। নতুন জামা-কাপড় কেনা থেকে শুরু করে সব আয়োজন শেষ। এখন শুধু অপেক্ষা ঈদগাহে গিয়ে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়, পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়ানো, শিশুদের নিয়ে বিনেদন কেন্দ্রে আনন্দময় সময় কাটানো, আত্মীয় স্বজনকে সময় দেওয়া।

এরইমধ্যে নাড়ির টানে ঢাকা ছেড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। ধীর গতির কারণে দুর্ভোগ হলেও অন্যবারের তুলনায় তা কম বলেই জানাচ্ছেন ঘরমুখো মানুষেরা। দুর্ভোগসঙ্গী করে নিজ নিজ গ্রামে ফিরেছেন শহরবাসী মানুষ। ঢাকা হারিয়েছে চিরচেনা রূপ। ফাঁকা ঢাকায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গুরুত্বপূর্ণ স্থান মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
ঈদের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ বিনেদন কেন্দ্রে ঘুরাঘুরি। রাজধানী ঢাকার প্রধান প্রধান বিনোদন কেন্দ্র তাদের প্রস্তুতি শেষ করেছে। ধুয়ে-মুছে ছাপ করা হয়েছে বিনোদন কেন্দ্রের রাইডস, চত্বর এবং এর আশপাশ। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।

এবার রাজধানীতে মোট ৪০৯টি স্থানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ভিন্নভিন্ন ভাবে এসব জামাতের ব্যবস্থা করবে। এরইমধ্যে সবগুলো স্থানে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দুই সিটি করপোরেশন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ২২৯টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সকাল সাড়ে ৮টায় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। এছাড়া বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭টা থেকে মোটি পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৮০টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। মন্ত্রিসভার সদস্য, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ, সংসদ সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ এলাকার মুসল্লিরা এ জামাতে অংশ নেবেন।

ঈদ উল ফিতরের দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআয় ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল ৮টায় এবং দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

ঈদ উল ফিতর আরবি শব্দ। ঈদ অর্থ আনন্দ, উৎসব, খুশি। আর ফিতর অর্থ ভাঙা, চিড়, ভাঙন। ঈদুল ফিতর অর্থ হলো রোজা ভাঙার পর্ব বা উৎসব। ঈদের শাব্দিক অর্থ হলো ‘বারবার ফিরে আসা’। এ দিনটি বারবার ফিরে আসে বলে এর নামকরণ হয়েছে ঈদ। আল্লাহ তা‘আলা এদিনে তার বান্দাকে নি‘আমাত ও অনুগ্রহ দ্বারা বারবার ধন্য করে থাকেন, বারবার ইহসান করেন।

রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস রমজানের অবসানে নতুন চাঁদ দেখামাত্র ছোট-বড়, ধনী-গরিব, প্রতিটি মুসলমানের হূদয় আনন্দে উদ্বেল হয়ে ওঠে। এই দিনে ধনী-গরিব, বাদশা-ফকির নির্বিশেষে সব মুসলমান এক কাতারে ঈদের নামাজ আদায় করে, একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে।

ঈদ মুসলিম উম্মাহর জাতীয় উৎসব। ঈদ উল ফিতরের দিনটি প্রতিটি মুসলমান নারী ও পুরুষের জীবনে তাৎপর্যে ও মহিমায় অনন্য। আইয়্যামে জাহেলিয়াত বা ইসলাম প্রাক্কালীন যুগেও আরবে ‘নওরোয’ ও ‘মেহেরজান’ নামক দুইটি বা উৎসব ছিল অধিক জনপ্রিয়।

সারাবাংলা/এজেড/এজেডকে/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন