বিজ্ঞাপন

সালাহ থাকলে ম্যাচটা অন্যরকম হতে পারতো

June 15, 2018 | 9:36 pm

আব্দুল আজীজ, সাবেক ফিফা রেফারি

বিজ্ঞাপন

এবারে বিশ্বকাপের এ গ্রুপের ২য় ম্যাচ ছিল মিশর বনাম উরুগুয়ের। দুটি দলেরই ইতিহাস আছে বিশ্বকাপের। উরুগুয়ে তো বিশ্বকাপের প্রথম চ্যাম্পিয়ন। প্রথম চারটি বিশ্বকাপের দুটি ছিল উরুগুয়ের দখলে দুটো ইতালির।

মিশর হচ্ছে আফ্রিকা মহাদেশের প্রথম দল যারা বিশ্বকাপে খেলেছে, সালটি ছিল ১৯৩৪। পরের বিশ্বকাপ খেলতে তারা সময় লাগায় ৫৬ বছর, ১৯৯০ সালের ইতালি বিশ্বকাপে তাদের দেখা যায়। আফ্রিকা অঞ্চলের মহাদেশীয় ফুটবলে অত্যন্ত সফল এই দলটি ১৯৯০ এর পর বিশ্বকাপে খেলতে আসল আরও ২৮ বছর পর। মিশরের এই ইতিহাস রচিত করার পেছনের মহানায়ক হচ্ছেন মোহাম্মদ আল সালাহ। মিশরে কয়েকদিন আগে লাখ লাখ মানুষ ভোটের ব্যালট বাক্সে ভোটের সিল না দিয়ে লিখে এসেছে মোহাম্মদ আল সালাহ এর নাম। কয়দিন আগে লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেলতে গিয়ে রিয়েল মাদ্রিদের সার্জিও র‍্যামোসের ফাউলের শিকার হয়ে যার বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল।

মোহাম্মদ সালাহ প্লেনে করে দলের সাথে রাশিয়ায় এসেছেন। কিন্তু বিশ্বের কোটি দর্শকের যে প্রত্যাশা ছিল তা আজ পূরণ হয়নি। সালাহকে টিভি পর্দায় কয়েকবার দেখালেও কোনবারই তিনি মাঠে ছিলেন না, ছিলেন সাইড বেঞ্চে।

বিজ্ঞাপন

গতকালের রাশিয়া বনাম সৌদি আরবের খেলায় র‍্যাংকের দূরত্ব কম থাকলেও রাশিয়া সৌদির থেকে অনেক শক্তিশালী দল ছিল। আজকের খেলায় উরুগুয়েকে আমি সামান্য এগিয়ে রেখেছিলাম, কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে সালাহ বিহীন মিশর কিছুটা হলেও পিছিয়ে থাকবে। হয়েছেও তাই। খেলার রেজাল্ট শেষ পর্যন্ত উরুগুয়ের পক্ষেই গিয়েছে। গোল হয়েছে খেলার অন্তিম মুহুর্তে। কমেন্ট্রিতে মাত্রই বলছিল, খেলা এখন শেষ হলে মিশর বেঁচে যায়, ঠিক তখনই কর্নার পেল উরুগুয়ে। চমৎকার হেড দিয়ে গোল দিল অ্যাথলেটিক মাদ্রিদের হয়ে খেলা হেমিনেজ। হেডের বলটি দ্রুত গতিতে পোস্টের কোন দিয়ে ঢুকলো যেখানে গোলকিপারের করার মতো কিছুই ছিল না। কিছু করার থাকলে গোলকিপার শেনাওয়ারি অবশ্যই করতো, যা এই গোল খাওয়ার আগ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে সে করেছে, সুয়ারেজ আর কাভানির নিশ্চিত কিছু এটাক বাঁচিয়েছেন। কাভানির শটটা যেভাবে বাঁচিয়েছে তা যারা দেখেছে বহুদিন মনে রাখার কথা। আমার দৃষ্টিতে অন্তত ৩ টি গোল সে বাঁচিয়েছে।

খেলা বেশিরভাগ সময়ে উরুগুয়ের দখলে থাকলেও মিশির খারাপ খেলেনি। মাঝে মাঝেই কাউন্টার এটাকের চেষ্টা করেছে তবে সালাহ এর অভাব স্পষ্ট অনুভূত হয়েছে। মনে হচ্ছিল ফিনিশিং দেওয়ার কেউ নেই। অনেকটা আন্ডার কন্সট্রাকশন সেই বিল্ডিং এর মত যা শেষ হবে রং করার মাধ্যমে। কিন্তু রং করার শিল্পী সেই সালাহ যে আজকে মাঠে নামতেই পারে নি।

মিশরের পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য পরের খেলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্বাগতিক রাশিয়ার সাথে সেদিন হেরে গেলে টুর্নামেন্ট থেকেই বিদায় নিতে হবে। সেই ম্যাওই আসলে গ্রুপের পজিশন নির্ধারণী ম্যাচ। সৌদি আরবকে আমি উরুগুয়ের কাছে পরাজিত অবস্থাতেই দেখতে পাচ্ছি, তাদের কোন সম্ভাবনা অন্তত আমার চোখে নেই, দুনিয়াতে হিসাবের বাইরে অনেক কিছু ঘটে, এখানে অঘটনের সম্ভাবনা কম দেখতে পাচ্ছি।

বিজ্ঞাপন

শ্রুতিলিখনরাসয়াত রহমান জিকো

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন