বিজ্ঞাপন

যাত্রীর চাপ নেই, তবু ট্রেনে ‘স্বাভাবিক লেট’

June 18, 2018 | 5:35 pm

।। মেসবাহ শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ঈদুল ফিতরের পর ফিরতি ঈদযাত্রা শুরু হলেও এখনও যাত্রীর ততটা চাপ নেই ট্রেনে। তবুও ঈদের শিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারেনি রেলওয়ে। সারাদেশের কোটি যাত্রীকে নিরাপদে-নির্বিঘ্নে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে রাতদিন ক্লান্তিহীন ছুটে চলে ট্রেনগুলো যাওয়া-আসার পথে প্রায় এক ঘণ্টা দেরি করছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, ঈদের সময় ট্রেনের শিডিউলে এটুকু দেরি স্বাভাবিক।

সরেজমিনে কমলাপুর রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, নোয়াখালী থেকে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে থামে উপকূল এক্সপ্রেস। অথচ এটি আসার কথা ছিল আরো এক ঘণ্টা আগে। ট্রেনে যাত্রীদের ঠাসাঠাসি নেই। তাই প্ল্যাটফর্মে থামার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যায় ট্রেনটি।

জানা গেল, একইভাবে সকালে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটিও স্টেশনে পৌঁছেছে অন্তত ঘণ্টাখানেক পরে। দুপুর সাড়ে ১২টায় পৌঁছানোর কথা ছিল ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসের, সেটিও স্টেশনে আসতে আসতে দুপুর দেড়টা। একইভাবে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্ক সিটি ট্রেনটিও নির্ধারিত সময়ের বেশ পরে আসে স্টেশনে।

বিজ্ঞাপন

কমলাপুরে ট্রেনগুলো আসতে যেমন দেরি করছে, একইভাবে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও পড়ছে তার প্রভাব। বলতে গেলে কোনো ট্রেনই নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যেতে পারছে না গন্তব্যের পথে।

ঘড়ির কাটায় সময় তখন দুপুর দেড়টা। শাহীন নামের একজন যাত্রী ছোট্ট বাচ্চা কাঁধে করে প্রবেশ করেন স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তীর কক্ষে। তার অভিযোগ, এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা ঈশা খান এক্সপ্রেসটি সকাল সাড়ে ১১টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এখনো ঠায় দাঁড়িয়ে। সেখানে এমন কেউ নেই, যার কাছে এ বিষয়ে জানা যাবে। তাই বাধ্য হয়ে স্টেশন ম্যানেজারের কাছে গিয়েছেন তিনি।

কয়েক জায়গায় ফোন করার পর স্টেশন ম্যানেজারও তাকে আশ্বস্ত করতে পারলেন না। তাই ক্ষোভ আর হতাশা নিয়ে ম্যানেজারের রুম ছাড়ছের তিনি। কাছে গিয়ে দেখা গেল, ঈশা খান এক্সপ্রেসের সবগুলো বগিই যাত্রীতে ঠাসা। দুপুরের কড়া রোদে যাত্রীরা রীতিমতো হাসফাঁস করছেন।

বিজ্ঞাপন

একইভাবে দুপুর ১টার চট্টলা এক্সপ্রেসটি স্টেশন ছাড়ে ২টার পরে। এছাড়া কুমিল্লা কমিউটার, জয়দেবপুর কমিউটার, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস চট্টগ্রামের সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোও নির্ধারিত সময়ে স্টেশন ছাড়তে পারেনি।

জানতে চাইলে স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী সারাবাংলা’কে বলেন, ‘ঈদে ট্রেনের শিডিউল শতভাগ ঠিক রাখা কঠিন। যতটুকু শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

ঈদের নির্ধারিত তিন দিনের ছুটি শেষে সোমবারই (১৮ জুন) রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। তবে এখনও যাত্রীর চাপ খুব বেশি নয়। বরং যে পরিমাণ মানুষ ঢাকা ফিরছেন, প্রায় সমসংখ্যক মানুষ এখনও ছাড়ছেন কমলাপুর স্টেশন। দিনের হিসাবে এবারের ঈদের ছুটি কম হওয়ায় ঈদের পরেও অনেকে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। স্টেশনের প্রতিটি টিকেট কাউন্টারেই দেখা গেছে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন।

প্ল্যাটফর্মের প্রথম শ্রেণির বিশ্রামাগারে কথা হয় চট্টগ্রামের একটি পরিবারের সঙ্গে। পরিবারের সদস্য আহমেদ উল্লাহ জানান, ঈদের আগে বাড়ি ফেরা অনেক কষ্টের হয়ে যেত। তাই একটু রিলাক্সে এখন যাচ্ছি। ছুটিও বেশি মিলছে বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘ঢাকায় ফেরার জন্য এখনও যাত্রীদের চাপ সেভাবে শুরু হয়নি। মঙ্গলবার (১৯ জুন) থেকে পুরোদমে যাত্রীদের চাপ হবে।’ তিনিও মনে করছেন, এখনও বিপুলসংখ্যক যাত্রী প্রতিদিন স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে। ঢাকার বাইরের কর্মস্থলসহ অনেকে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন ঈদের ছুটি কাটাতে। সব মিলিয়ে এবারের ঈদের যাত্রা এক তরফা হচ্ছে না।

ছবি: হাবীবুর রহমান

সারাবাংলা/এমএস/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন