June 18, 2018 | 8:15 pm
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে করের চেয়ে ভ্যাটের পরিমাণ বেশি হওয়ায় ‘কর বাহাদুর’ সম্মাননার পরিবর্তে ‘ভ্যাট বাহাদুর’ সম্মাননা চালুর জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গৃণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে করের চেয়ে ভ্যাটের পরিমাণ বেশি হয়। উনি ভ্যাট থেকে বেশি পান। কিন্তু তিনি তো কর বাহাদুর উপাধি দেন। আমি এবার থেকে উনাকে বলব— কর বাহাদুর বাদ দিয়ে ভ্যাট বাহাদুর চালু করুন। ভ্যাট যখন বেশি পান, তখন ভ্যাট বাহাদুরই করুন, কর বাহাদুর বাদ দিন।’
সোমবার (১৮ জুন) বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনার শুরুতে ৮৬ বছর বয়সে বাজেট পেশ করায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান গৃহায়ন ও গৃণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, বিরোধী দল ব্যাংকিং খাত নিয়ে মনগড়া কিছু কথা বলে গেছে। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর বলিষ্ঠ পদক্ষেপের কারণেই ব্যাংকিং খাত সচল আছে। কোনো ব্যাংক এখনও বন্ধ হয়নি।
তিনি বলেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি আজ অনেক শক্তিশালী। ২০০৯-১০ সালে আমাদের জিডিপি ছিল ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। তারপর থেকে অব্যাহতভাবে জিডিপি ঊর্ধ্বমুখী। পাশাপাশি বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে উন্নয়নের ধারাবাহিকতাও অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গৃহায়ন মন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি। অথচ টিন (ট্যাক্স আইডেন্টিটি নম্বর) আছে মাত্র ৩৫ লাখ মানুষের। এর মধ্যে রিটার্ন দাখিল করেন মাত্র ১৫ লাখ। উচ্চ করদাতার সংখ্যা খুবই কম। যখন আমরা উন্নয়নশীল দেশের শর্ত পূরণ করেছি, তখন করদাতার এই হার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি মনে করি, করদাতার হার বাড়ানো উচিত এবং কমপেক্ষ দুই কোটি লোককে করের আওতায় আনতে হবে।
এ জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঊর্ধ্বে রেখে করবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান গৃহায়নমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে করের আওতা সম্প্রসারণ করা হলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে। ভ্যাট আদায়ে ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে না লাগাতে পারলে ভ্যাট আদায়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে না। বর্তমান সরকার তথ্য প্রযুক্তিতে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। আমার প্রস্তাব হলো— প্রতিটি দোকান ও সেবাকেন্দ্রকে ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার দেওয়া হোক। এই ক্যাশ রেজিস্ট্রারকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের প্রধান সার্ভারের সাথে সংযুক্ত করে দিলেই জনগণের দেওয়া ভ্যাট সরাসরি সার্ভারে জমা হবে। এতে ভ্যাট আদায়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে এবং সিস্টেম লস বন্ধ হয়ে যাবে।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর