বিজ্ঞাপন

বাজেট প্রতিবছরই বড়লোকদের দিকে হেলে পড়ছে : মেনন

June 25, 2018 | 8:45 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বাজেটের সমালাচনা করে বলেছেন, প্রতিবছরই বাজেট বড়লোকদের দিকে হেলে পড়ছে। এবার আরও বেশি করে হেলে পড়েছে। তাদের জন্য বড় ছাড় দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৫ জুন) বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

সরকারের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন উন্নয়ন ও অগ্রগতিগুলো তুলে ধরে রাশেদ খান মেনন বলেছেন, সব কিছু থেমে যাবে। উল্টে যাবে। যদি বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিরা একবার ক্ষমতার চাবিকাঠি হাতে পায়। রক্তগঙ্গা বহাবে তারা। তাদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। থেমে নেই মওদুদীবাদী ষড়যন্ত্র। যাকে কিছু বাঙালির যা কিছু বাঙালির তার বিরুদ্ধেই তাদের জিহাদ। সামাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ন্যায় যুদ্ধের (মুক্তিযুদ্ধ) সময় সমাজতন্ত্রকে ঠেকাতে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মাধ্যমে আমাদের এখানে পাঠিয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

বাঙালির সম্প্রীতির সহাবস্থানের বন্ধন রক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নকে বহুদূর এগিয়ে নিয়েছেন। এটাকে রক্ষা করতে। এটাকে এগিয়ে নিতে সর্বোপরি শান্তি সমৃদ্ধি সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে আগামী নির্বাচনে বিজয়ের কোনো বিকল্প নাই। এর জন্য প্রয়োজন একাত্তরের মতো, আশির দশকের মতো, ২০০৪ থেকে গড়ে ওঠা অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ও উন্নয়নের শক্তির রোধ করা। ভোটের হিসাব করতে গিয়ে হেফাজতকে তোষণ, কারিকুলাম পাল্টে দেওয়া, ভাস্কর্য অপসারণ এবং সংসদের কিছু আসন দিয়ে খুশি-এ সবি হবে নিবুদ্ধিতা। সাপ খোলস পাল্টায় কিন্তু দাঁতে বিষ থেকে যায়।

বিএনপি নির্বাচনে আসছে এবং আসবে। গর্জন করবে, বর্ষাতে পারবে না দাবি করে তিনি আরও বলেন, এতিমের টাকা কেবল নয় আরও অন্যান্য সব অপরাধের কারণেই বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলন গড়ে উঠেনি।

আর সরকারি দলের কতিপয় নেতা-কর্মীদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, বাড়ি, জমি প্রতিষ্ঠান দখল, মানুষের সঙ্গে অন্যায় আচরণ টেন্ডারবাজি, চাকরিবাণিজ্য, ঘুষ দুর্নীতি মানুষকে তীক্ত-বিরক্ত করে ফেলেছে। অসৎ ব্যবসায়ী, অসৎ আমলা, অসৎ রাজনীতিদদের চক্র; সব জায়গায়। আর শুভচর ক্রমাগত নির্বাসনে। উন্নয়ন যেমন জনগণকে আস্থাশীল করে। তেমনি এই ধরনের আচরণ মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ২৩ জুন গণভবনে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বিশেত বর্ধিত সভায় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানের সূত্রধরে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর এই দেশের মানুষের উপর অগাধ আস্থা ও বিশ্বাস আছে। ২০০৮ এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজয় এসেছে এবং এবারও আসবে। তার জন্য সম্মিলিত প্রয়াসের কোনো বিকল্প নেই।
অর্থমন্ত্রীর এটাই হয়ত শেষ বাজেট নিজের ধারণা পোষণ করে তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন কামনাও করেন তিনি।

রাশেদ খান মেনন বলেন, ২০০৯-১০ সালের বাজেট বক্ততায় আমি সেই বাজেটকে প্রো-পিপল প্রো-পুওর বলেছিলাম। কিন্তু তারপর প্রতিবছরই বাজেট বড়লোকদের দিকে হেলে পেেড়ছে। এবার আরও বেশি করে হেলে পড়েছে। তাদের জন্য বড় ছাড় দেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী করপোরেট ট্যাক্স কমিয়েছেন। এ কথাটি বিশেষভাবে খাঁটে ব্যাংক সেক্টর সম্পর্কে। বাজেটে সবচেয়ে সুবিধা পেয়েছে, এই ব্যাংক মালিকরা। অথচ এই ব্যাংক সেক্টরে চলছে অবাধে লুটপাট, ঋণখেলাপী ও অর্থপাচারের মহোৎসোব। আর এই লুটপাটের খেসারত দিচ্ছে দেশের মানুষ। করের টাকা থেকে ব্যাংকের ঘাটতি মূল্য পূরণ করা হচ্ছে। ব্যাংকের ক্ষেত্রে করপোরেট হার কমানো হয়েছে।

এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, সম্প্রতিকালে আমরা দেখেছি, এই ব্যাংকগুলোকে আইন সংশোধন করে পারিবারিক মালিকানায় তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যাংক মালিকরাই গার্মেন্টেসের মালিক, ওই ব্যাংক মালিকরাই বীমার মালিক। ওই ব্যাংক মালিকরাই আবাসন কোম্পানির মালিক। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান আমলে ২২ পরিবারের কাছে মাথা নত করেননি। আর এখন ব্যাংকের মালিকরা নির্ধারণ করে দিচ্ছে, শেয়ারার কতো হবে? ঋণের সুদ কতো হবে? আমানতের সুদ কতো হবে। অর্থমন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ঠুঁঠো জগন্নাথ।

এ ছাড়া নতুন নেতৃত্ব বিকশিত করার জন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আগেও বলেছি ছাত্র সংসদগুলোতে নির্বাচন দিন এবং এখনো বলছি, ছাত্রসংসদগুলোকে চালু করুন। যার মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব এদেশে গড়ে উঠতে পারে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন