বিজ্ঞাপন

নতুন ‍ঠিকানায় হলি আর্টিজান,কাটেনি অস্বস্তি!

July 1, 2018 | 12:08 pm

।। মাকসুদা আজীজ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: লেকের পাড়ে দোতলা রেস্টুরেন্ট। সামনে সবুজ লন আর চমৎকার শ্যাওলা ধরা দেয়ালের কম্পোজিশনে ইনটেরিওর। ভিক্টোরিয়ান ধাঁচে ফার্নিচার। মিষ্টি একটা গন্ধ, ওভেনে রুটি তৈরি হওয়ার। সব মিলিয়ে এই ছিল হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট। গুলশান দুইয়ের কূটনীতিক পাড়ার  নিরিবিলি এলাকায় ছিমছাম নান্দনিক একটি খাওয়ার জায়গা।

যে রাস্তায় হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট ছিল তার মুখেই বাস করতেন ফারজানা ঐশী। তার ছোট্ট ছেলেটা খুব ভালোবাসতো হলি আর্টিজান যেতে। অনেকেই সেখানে পোষা প্রাণীদের নিয়ে আসতেন। আদুরে প্রাণীগুলো লনে হুটোপুটি খেয়ে খেলতো। কেউ কেউ আবার মাটিতে চাদর পেতে বেশ পিকনিকের ঢং-এ কাটাতেন সময়।

সকালের নাস্তা হোক কি রাতের ডিনার, সময় কাটানোর জন্য অমন আর একটা জায়গাও ছিল না ঢাকায়, জানান ঐশী।

বিজ্ঞাপন

“এখন হলি আর্টিজানের নাম শুনলেও ভয় হয়। জানি ওরা আর সেখানে নেই, জানি ২০১৬’র পহেলা জুলাইয়ের ঘটনা আর ফিরে আসবে না। আমার ছেলের স্কুলের অনেক বন্ধুর মায়েরাই তো নতুন দোকানটাতে যায়। আমি যাই না। কেন যেন এখনও খুব অস্বস্তি হয়।” বলেন ঐশী।

২০১৬ থেকে ২০১৮। হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট পার করেছে এক কঠিন সময়। সন্ত্রাসী হামলার পরপর স্বাভাবিক নিয়মেই বন্ধ ছিল রেস্টুরেন্টটি। এরপর প্রথমে শুধু হোম ডেলিভারি, এরপর গুলশানের গোরমেট বাজারের ছোট পরিসরে শুরু হয় হলি আর্টিজান বেকারি। তবে দুই বছর হয়ে গেলেও এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি সেই ধাক্কা।

বিজ্ঞাপন

গুলশান দুইয়ের গোলচক্কর পাড় করে পাকিস্তান অ্যাম্বাসির দিকে এগুলে প্রথম যে চেক পোস্টটা পরে সেখানেই গোরমেট বাজার। নিরাপত্তা ব্যবস্থার খুব কড়াকড়ি। এমন কড়াকড়ি ছিল ২০১৬ তেও যখন সন্ত্রাসীরা হামলা করে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে।

গোরমেট বাজারের হলি আর্টিজান বেকারিটা ছোট। এখানে সেই সবুজ লন নেই, রোদ পোহানোর বৃষ্টি দেখার আকাশ নেই। লেকের পাড়ের মিষ্টি বাতাসে নেই আছে শুধু ভিকটোরিয়ান ধাঁচের কিছু ফার্নিচার আর সেই রুটি বানানোর মিষ্টি গন্ধ। ব্যাস!

এ বেকারির নিয়মিত একজন ক্রেতা বলেন, “প্রায়ই আসি এ বেকারিটায়। কখনও বসে খাই, কখনও বাড়িতে নিয়ে যাই। এমনও হয় জায়গা না পেয়ে ফিরে যাই। এই জায়গাটা আসলেই অনেক ছোট। বসার জায়গা পাওয়া সমস্যা। তবে খাবারের স্বাদের জন্য আসি। তাছাড়া একটা মানসিক সংযোগও অনুভব করি এই জায়গাটার সঙ্গে।”

নাম না প্রকাশের শর্তে হলি আর্টিজান বেকারির একজন কর্মী সঙ্গে। তিনি বলেন, “আস্তে আস্তে শুরু করছি আমরা। সেদিনের ঘটনার স্মৃতি এখনও তাড়িয়ে বেড়ায়। তারপরও ঐ যে বলে না সবার শুভ কামনাটা সেটাই হয়তো আমাদের কাজে আসছে।”

বিজ্ঞাপন

খুব সম্প্রতি একটু বড় পরিসরে কাজ শুরু করতে যাচ্ছে হলি আর্টিজান বেকারি। গুলশান এক ও দুইয়ের মধ্যে আগোরার বিল্ডিংয়ে হচ্ছে নতুন হলি আর্টিজান। এখানেই আবার জমে উঠবে খাবার প্রেমিদের পছন্দের একটা জায়গা, এমনটায় আশা করেন হলি আর্টিজানের এই কর্মীর।

সারাবাংলা/এমএ/জেডএফ

আরও পড়ুন

বিভীষিকাময় রাতের ২ বছর

বাড়িটিকে জড়িয়ে রেখেছে শূন্যতা, হাহাকার

‘বাবা কি আর ফিরবে না’

হলি আর্টিজানে জাপানি দূতাবাসের শ্রদ্ধা

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন