বিজ্ঞাপন

ছোট মাঠে ঐক্যফ্রন্টের ‘বড়’ সমাবেশ

October 24, 2018 | 2:03 pm

।। আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

সিলেট থেকে: সিলেট শহরের সব চেয়ে ‘ছোট’ মাঠে সব চেয়ে ‘বড়’ সমাবেশ আয়োজন করেছে স্থানীয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট! আর এই সমাবেশে যোগ দিতে এরইমধ্যে ঢাকা থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ‘বড়’ নেতারা হাজির হয়েছেন সিলেটে।

শহরের বন্দরবাজার সুরমা পয়েন্টের যে রেজিস্ট্রারি মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের প্রথম সমাবেশ আয়োজন করেছে সেখানে সর্বসাকুল্যে পাঁচ হাজার লোক ধরতে পারে—এমনটিই ধারণা দিয়েছেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী, রাজনীতিক, পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষ। কারো কারো মতে, এই মাঠের ধারণ ক্ষমতা তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার লোকের।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি রেজিস্ট্রি অফিসের এই ‍উন্মুক্ত মাঠটিতেই সিলেট শহরের ছোট-খাটো রাজনৈতিক কর্মসূচি, সভা-সমাবেশ, ধর্মীয়-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। আর বড় সভা-সমাবেশের জন্য আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ ব্যবহার করে সবাই। ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকা-সিলেট রোডমার্চ শেষে এই আলিয়া মাদ্রাসা মাঠেই জনসভা করেছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু এবার ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না ও জাফরুল্লাহ চৌধুরীদের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভা করার জন্য আলিয়া মাদ্রাসার মাঠ পায়নি স্থানীয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।

ফলে পাঁচ হাজার লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন রেজিস্টারি মাঠে আয়োজন করতে হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রথম সমাবেশ। যেখানে ৫০ হাজার লোকের সমাগম ঘটানোর স্বপ্ন দেখছে তারা।


সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে বুধবার বেলা ১২টায় রেজিস্টারি মাঠে গিয়ে দেখা যায় তিন দিকে সরকারি অফিসের বিল্ডিং এবং একদিকে উঁচু দেয়াল ঘেরা মাঠে বেশ কয়েকজন মিডিয়াকর্মী, উৎসুক কিছু লোক ও রেজিস্ট্রি অফিসের কয়েকজন কর্মচারী গাছের ছায়ায় জটলা বেঁধেছেন। আর মাঠের উত্তর পাশে নির্মিত মঞ্চ থেকে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা মাইকে কথা বলছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে বেলা ১টা পর্যন্ত সমাবেশ স্থলে বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাকর্মী-সমর্থকদের খুব একটা দেখা যায়নি। শহরের সড়কগুলোতে দেখা যায়নি সমাবেশের পক্ষে মিছিল-স্লোগান। বরং শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে চলছে আওয়ামী লীগের গণসংযোগ কর্মসূচি।

স্থানীয়রা বলছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ ঘিরে মঙ্গলবার পুলিশি তৎপরতার কারণে আজ খুব একটা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না বিএনপি নেতাকর্মী-সমর্থকরা। তবে দুপুর ২টার পর কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশ স্থলে পৌঁছালে স্থানীয় নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসতে শুরু করবে।

রেজিস্টারি মাঠের চায়ের দোকানি বেলায়েত হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল পুলিশের ধরপাকড়ে ভয় পেয়ে গেছে সবাই। সে কারণে আজ একটু ভেবে-চিন্তে বের হচ্ছে। তবে সময় মতো সবাই চলে আসবে। সিলেটে বিএনপির প্রচুর লোক আছে।’

রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মচারী মো. আকবর বলেন, ‘বিএনপির লোকজন এলে এই মাঠ ভরতে কয়েক মিনিট লাগেব। কিন্তু তারা সহসায় আসবে না। সবার মনেই ভয় আছে।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে রেজিস্টারি মাঠে ঢোকার পথে সকাল থেকেই পুলিশে কড়া অবস্থান দেখা গেছে। সমাবেশ স্থালে আসা প্রত্যেকের দেহ তল্লাশি করছেন পুলিশ সদস্যরা। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেও রয়েছে পুলিশের সতর্ক অবস্থান।


নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া ও সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, ইভএম ব্যবহার না করা, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, খলেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি এবং নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার না করার দাবিতে এ সমাবেশ করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

সমাবেশে যোগ দিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা এরইমধ্যে আকাশ ও সড়কপথে সিলেটে পৌঁছেছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান উদ্যোক্তা ড. কামাল হোসেন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আকাশপথে সিলেট পৌঁছান। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বুধবার সকালে আকাশপথে সিলেট পৌঁছান।

তবে মানহানির মামলায় গ্রেফতার হওয়ায় সিলেট জনসভায় যেতে পারছেন না জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন।

এদিকে, বুধবার সকালে সিলেট পৌঁছেই হযরত শাহ জালাল (রহ.) ও শাহ পরান (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

আরও পড়ুন: প্রথম সমাবেশেই বিশেষ বার্তা দিতে চায় ঐক্যফ্রন্ট

সারাবাংলা/এজেড/এমও

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন