বিজ্ঞাপন

সরকারি অর্থেই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পুনর্বাসন

November 28, 2017 | 7:26 am

সারাবাংলা প্রতিবেদক

বিজ্ঞাপন

সরকারি অর্থেই এক লাখ রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে নোয়াখালী জেলার ভাসানচরে ২ হাজার ৩১২ কোটি ১৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। প্রকল্পটি চলতি বছর থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী।

বিজ্ঞাপন

একনেক বৈঠক পরবর্তী ব্রিফিং এ পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘ইতোমধ্যেই মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। আশা করছি, ২-৩ মাসের মধ্যেই সে দেশের নাগরিকরা ফেরত যাবে। তারপরও তারা যতদিন এখানে অবস্থান করবেন, তাদের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে ভাসানচরে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার সব সময় বাণিজ্যিক লাভ দেখে প্রকল্প হাতে নেয় না। মায়ানমারের নাগরিকরা কষ্টে আছেন। তাদের জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিশ^াস করি, আমরা নিজেদের টাকায় কাজ শুরু করলেও বিদেশিরা সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসবে।’

প্রকল্প এলাকা: নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার চর-ঈশ^র ইউনিয়নের ভাসানচর দ্বীপ। দ্বীপটি নোয়াখালী থেকে প্রায় ২১ নটিক্যাল মাইল, জাহাজ্জাইর চর থেকে ১১ নটিক্যাল মাইল, সন্দ্বীপ থেকে ৪ দশমিক ২ নটিক্যাল মাইল, পতেঙ্গা পয়েন্ট থেকে ২৮ নটিক্যাল মাইল এবং হাতিয়া থেকে ১৩ দশমিক ২ নটিক্যাল মাইল দূরত্বে অবস্থিত।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের বিশাল স্রোতে দেশের নিরাপত্তা ও পরিবেশ দুটোর জন্যই হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত অসহায় মায়ানমারের নাগরিকদের কক্সবাজারের বিভিন্নস্থানে বসবাসের স্থান সংকুলান করা দুরূহ হয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত পাহাড়ি জমি ও বনাঞ্চল নষ্ট হচ্ছে। টেকনাফ ও উখিয়ার স্থানীয় অধিবাসী ৫ লাখ ৭০ হাজার, কিন্তু বর্তমানে নতুন-পুরাতন মিলে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় গ্রহণ করায় নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। পৃথিবী বিখ্যাত পর্যটন এলাকা কক্সবাজারের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে বলে ইতোমধ্যে অভিযোগ উঠেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে নোয়াখালী জেলার হাতিয় উপজেলাধীন চর-ঈশ^র ভাসনচর দ্বীপটিকে জরুরিভিত্তিতে বসবাসের উপযোগী করে সেখানে এক লাখ বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিকদের পুনর্বাসনের জন্য এই প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়েছে।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানার চর-ঈশর ইউনিয়নস্থ ভাসানচরে এক লাখ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মায়ানমারের নাগরিকদের বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলা এবং দ্বীপটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করাই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, ভূমি উন্নয়ন ও শোর প্রোটেকশন ওয়ার্ক, বাধ নির্মাণ, ১ লাখ ৩ হাজার ২০০ জন মানুষের বসবাসের জন্য ১২০টি গুচ্ছগ্রামে ১ হাজার ৪৪০টি ব্যারাক হাউজ ও ১২০টি শেল্টার স্টেশন নির্মাণ, উপসনালয় নির্মাণ, দ্বীপটির নিরাপত্তার জন্য নৌ বাহিনীর অফিস ভবন ও বাস ভবন নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ সড়ক, পানি নিস্কাশন অবকাঠামো, নলকূপ ও পানি সরবরাহ অবকাঠামো নির্মাণ, পেরিমিটার ফেন্সিং ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ, একটি মাইক্রোবাস, ১২টি মটর সাইকেল, ২৩টি হিউম্যান হলার, ৪০টি ঠেলাগাড়ী, ৪৩টি ভ্যানগাড়ী, ৪ চারটি এলসিইউ এবং ৮টি হাই স্প্রিড বোট ক্রয়, গুদাম ঘর, জ¦ালানি ট্যাঙ্ক, হেলিপ্যাড, চ্যানেল মার্কিং ও মুরিং বয়, বোট ল্যান্ডিং সাইট, মোবাইল টাওয়ার, রাডার স্টেশন, সিসি টিভি, সোলার প্যানেল, জেনারেটর ও বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন ইত্যাদি নিমাণ করা হবে।

সারাবাংলা/জেজে/আইজেকে/নভেম্বর ২৮, ২০১৭

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন