বিজ্ঞাপন

সুস্পষ্ট ভোট কারচুপির আভাস দিলেন ওবায়দুল কাদের : রিজভী

July 16, 2018 | 1:43 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।। 

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: খুলনা ও গাজীপুরের মতো তিন সিটিতেও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যে মন্তব্য করেছেন, তার সমালোচনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (১৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টন কার্যালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ওবায়দুল কাদের সাহেব সুষ্ঠু ভোট কারচুপির সুস্পষ্ট আভাস দিলেন। তিন সিটিতেই চলছে নৌকা মার্কার পক্ষে নির্বাচনী অনাচার আর ক্ষমতাসীনদের অবৈধ দাপট। গ্রেফতার, গ্রেফতারের হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শনের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য প্রচণ্ড মহড়া চলছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে চলছে শাসক দলের পক্ষে আওয়ামী নেতাদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক। এমনকি জেলা প্রশাসক নৌকা মার্কার অনুকূলে চরম পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন।’

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তি এবং সকল রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে আগামী ২০ জুলাই ২০১৮, শুক্রবার বেলা ৩টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অথবা প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

এ ছাড়া একই দাবিতে ওইদিন দেশব্যাপী সবগুলো জেলা, মহানগর ও উপজেলা সদরে বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে সমাবেশ সফল করার জন্য অনুরোধও জানান তিনি।

নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ধানের শীষের অফিস ভাংচুর, নেতা-কর্মী-সমর্থকদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে আওয়ামী ক্যাডাররা এক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পুলিশও বসে নেই। খুলনা ও গাজীপুরের মতো আওয়ামী প্রার্থীর পক্ষে পুরোদমে নেমে পড়েছে। রাজশাহী মহানগরীর হাদির মোড় এলাকায় খাদেমুল ইসলাম স্কুলের সামনে ধানের শীষের প্রচার অফিস আওয়ামী ক্যাডারদের কর্তৃক ভাঙচুর হওয়ার পর পুলিশ এসে তালা লাগিয়ে দেয়। বরিশাল ও সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাতে চলছে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে হুমকি-ধামকি।’

বিজ্ঞাপন

‘মন্ত্রীর পদমর্যাদায় দায়িত্বে থাকার পরও আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ তার ছেলেকে বিজয়ী করার জন্য নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন এবং তিনি কোনো নির্বাচনী আচরণবিধিই মানছেন না। তা ছাড়া তিনি ভোটারদের ওপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন। মোট কথা তিন সিটিতেই সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ বিদ্যমান নেই, নিরাপদে ভোট দিতে পারবে কী-না সেটি নিয়ে ভোটারদের মধ্যে এখনও শঙ্কা কাটেনি। নির্বাচন কমিশনের কাছে উল্লিখিত বিষয়ে ধানের শীষের প্রার্থীদের পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ করা হলেও সেগুলো আমলে নেওয়া হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো মানে অরণ্যে রোদন।’

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আরও বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের নামে কিছু হচ্ছে কী-না জানতে হবে। নিজ দলের অনাচার ও অপকর্ম তার না জানারই কথা, চোখে না পড়ারই কথা। ছাত্রলীগকে রক্তের নেশা পাইয়ে দিতে উৎসাহিত করেছে আওয়ামী নেতারাই। সুতরাং তাদের রক্তাক্ত আক্রমণ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাহেবের দৃষ্টিগোচর না হবারই কথা। আপনারা যদি জনসমর্থিত সরকার হতেন তাহলে বুঝতেন যে দেশের সর্বত্র ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে জনগণের কী পরিমাণ ধিক্কার উঠেছে। নির্যাতিত ছাত্রীদের মুখ থেকে মর্মস্পর্শী বর্ণনা আক্রমণকারীদের সম্পর্কে জনগণের ঘৃণার প্রকাশ তীব্র মাত্রা লাভ করেছে।’

এ সময়, রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ওপর ছাত্রলীগের পৈশাচিক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে কতটুকু গুরুতর সে খবর কারা কর্তৃপক্ষ জানতেও দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন রিজভী৷ তিনি বলেন, গত পরশু পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে কারাকর্তৃপক্ষ বাধা দেয়। অসুস্থতার খবর জানতে পারার পরও তার পরিবারের সদস্যদের কারা ভবনের দ্বিতীয় তলায় গেলেও দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কারা কর্তৃপক্ষ দেশনেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে শুধু উদাসীনই নয়, সরকারের নির্দেশে কোনো ভয়ঙ্কর মাস্টারপ্ল্যানের দিকে এগুচ্ছে কী-না তা নিয়ে জনমনে এক বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসও/এমআই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন