বিজ্ঞাপন

পাটুরিয়ায় ভোগান্তি, ‘যানজটে রোহিঙ্গা হয়ে গেছি’

December 29, 2017 | 4:46 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

বিজ্ঞাপন

‘আজকে আমার ছুটি, গাড়ি ঘুরিয়ে বাড়ি চলে যাই’ বলে একটি সিএনজি ঘুরিয়ে বের হয়ে গেলো। সিএনজি ওয়ালারা দিনে আনে দিন খায়, আজ বাড়ি চলে গেলে যে খাওয়া হবে না এই চিন্তাও তার মাথায় নেই। শুধু একটাই চিন্তা, বের হতে হবে এই অন্তহীন জ্যাম থেকে। এক জায়গায় চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে, আর কতক্ষণ পার করতে হবে সেই শঙ্কায় আগে এখান থেকে নিজেকে মুক্ত করেছেন তিনি।

বলছি পাটুরিয়া সড়কের কথা। ঘন কুয়াশার কারণে আজ শুক্রবার সকাল ১১ টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। সেই ফেরি বন্ধ থাকার কারণে একসঙ্গে অনেক গাড়ি জমে পাটুরিয়া সড়কে ১০ কিমি যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এবং সেটা বাড়ছে ক্রমেই।
যানের এ জটও হয়তো খুলে যেত কিন্তু আগে যাওয়ার ফন্দি করে কিছু চালক উল্টো পথে গাড়ি ঢুকিয়ে দিয়েছে। অনেকেই আবার গাড়ি ছেড়ে রওনা হয়েছে পায়ে হেঁটেই। আবার মাথাতেই এক চিন্তা ‘আমি কীভাবে আগে বের হবো’ আর সেই চেষ্টার ফল, দাঁড়িয়ে আছে হাজারো যানবাহন। ভোগান্তি হচ্ছে সবার!

বিজ্ঞাপন

এত বড় জট সামাল দিতে পুলিশেরও বেসামাল অবস্থা! কোথা থেকে শুরু করে কই পৌঁছালে খুলবে এই জট? জানেন না তারাও।
সিএনজির বের হওয়া দেখে দুই একজন বাসের হেল্পারও পথে নেমে পথ মাপছে, কে কতটুকু গাড়ি সরালে তার গাড়িটা বের হতে পারে! মাঝে পড়লো একটা মাইল ফলক। এত লোকের সমাগম না হলে হয়তো সেটাও তুলে ফেলার চেষ্টা করত! যেভাবেই হোক বের তো হতে হবে!

গণ পরিবহণের যাত্রীরা নেমে হাঁটাই ধরেছে। কোলে শিশু, বড় মাল-সামাল, কিছুকেই তোয়াক্কা করছে না তারা। কিছুক্ষণ পরেই নামবে অন্ধকার। সঙ্গে খাবার নেই, বিপদ আপদের ভয়, সময় থাকতে জান বাঁচানোই শ্রেয়। কিন্তু পাটুরিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় আছে তিন শতাধিক পণ্য বোঝাই ট্রাক। তাদের কী হবে? আর যারা নিজেদের যানবাহন নিয়ে বের হয়েছে তাদের? জবাব নেই কারও কাছেই। অগত্যা জ্যামের ভেতরে বসেই স্মরণ করা সৃষ্টিকর্তাকে! যদি এখন তিনি কিছু করতে পারেন!

বাস থেকে নেমে ব্যাগ মাথায় হাঁটতে থাকা পথচারীরা বলতে থাকেন, ‘যানজটে আমরা আজ রোহিঙ্গা হয়ে গেছি।’

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে আজ সকাল ১১টা পর্যন্ত পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এসময় মাঝ নদীতে আটকে ছিল ১১টি ফেরি। দীর্ঘ সময় ফেরি পারাপার বন্ধ থাকায় অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এই নৌ-রুটে চলাচলকারীরা।

আটকে থাকা মানুষেরাই সেখান থেকে তোলা ভিডিও ও ছবি পাঠিয়ে সারাবাংলাকে জানিয়েছে তাদের ভোগান্তির কথা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, শিশু কোলে মায়ের হেঁটে যাওয়া, মুক্তি পাওয়া ভাগ্যবান সিএনজি চালককে আর পথ মেপে মেপে মুক্তির সন্ধান করা বাসের হেলপারদের।

ঘাট কর্তৃপক্ষ থেকে জানা যায়, গত রাত ১১টার দিকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে এই নৌ রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। নৌ-পথ দেখতে না পারায় যাত্রী ও পরিবহণ নিয়ে মাঝ নদীতে আটকে ছিল ১১টি ফেরি।
এখন যদিও স্বাভাবিক হয়েছে নৌপথে চলাচল তবে আটকে আছে দু ধারে যানবাহনের সারি। আবার নামছে সন্ধ্যা। নৌ পথ ঢাকছে কুয়াশার চাদরে। বাড়ি ফেরার অনিশ্চয়তায় ফেরি ঘাটে আটকে আছে নিরুপায় মানুষগুলো!

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরসি/এমএ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন