বিজ্ঞাপন

সারাদেশে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক তৈরি করছি: প্রধানমন্ত্রী

September 16, 2018 | 4:13 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা যত বেশি উন্নত হবে তত বেশি মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হবে। মানুষ আর্থিকভাবে সচ্ছল হবে। মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সারাদেশে যোগাযোগের নেটওয়ার্ক তৈরি করছি।

রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত ৮৫০ মিটার দীর্ঘ ‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু’ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্চারামপুর উপজেলায় তিতাস নদীর ওপর নির্মিত ৭৭১ মিটার দীর্ঘ ‘শেখ হাসিনা তিতাস সেতু’ উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যকাণ্ডের পর যারা অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করেছিল তারা ধনশালী হয় সম্পদশালী হয়। আর সেই সঙ্গে তাদের আশেপাশের কিছু লোক অর্থশালী হয়ে একটা এলিট শ্রেণি তৈরি হয় কিন্তু বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পড়ে থাকা আপামর জনগোষ্ঠী তারা কিন্তু কষ্ট ভোগ করতে থাকে।’

বিজ্ঞাপন

এরপর ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দেশে ফিরে আসার লক্ষ্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তখন থেকে আমি সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরতাম। ১৯৮১ সাল থেকে বাংলাদেশের এমন কোনো অঞ্চল নেই, আমি না গিয়েছি। প্রতিটি এলাকা যেতাম, ঘুরতাম এবং মানুষের অবস্থাটা জানতাম।’

এই বাংলাদেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কীভাবে গড়ে তুলবেন তিনি সেই কথা সবসময় আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতেন। সেই হিসেবে একটা চিন্তা ছিল, যদি কখনো সরকারে যেতে পারি দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করব এবং দেশের উন্নয়নটা ত্বরান্বিত করব।

২১ বছর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকারে আসার পর থেকেই চেষ্টা করেছি এদেশের মানুষের আর্থসামজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করতে।’

বিজ্ঞাপন

উত্তরবঙ্গে একসময়কার দুর্ভিক্ষ ও হাহাকারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৯৬ সালে যখন সরকারে আসি, বাংলাদেশ প্রথম খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। ওই আমলে আর দুর্ভিক্ষ ছিল না। মঙ্গা শব্দটা উত্তরবঙ্গের লোক ভুলেই গিয়েছিল। কিন্তু ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসতে পারে নাই বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসে, আবার মঙ্গা ফিরে আসে।’

২০০৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে পুনরায় সরকার গঠনের সুযোগ দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল; উত্তরবঙ্গের কোথায় আর মঙ্গা শব্দটা নাই।’

এক্ষেত্রে সরকারের টানা দুই মেয়াদে রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থাকে দ্রুত উন্নতিকরণ, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কথাও তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যার ফলে আজকে সাড়ে নয় বছরে কোনোদিন কেউ আর মঙ্গা শব্দটা শোনে নাই। উত্তরবঙ্গের লোক মোটামুটিভাবে এ শব্দটা ভুলেই গেছে।’

বিজ্ঞাপন

যদিও অনেক বাধা বিঘ্ন অনেক কিছু আমাদের অতিক্রম করতে হয়। তারপরও আমরা দেশের মানুষের উন্নয়নে কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিস্তা নদীর উপর নবনির্মিত সেতুটির কথা তুলে ধরে বলেন, ‘এ সেতুটি হওয়ার ফলে লালমনিরহাট থেকে গঙ্গাচড়া হয়ে রংপুর আসার অনেক পথ কমে যাবে। প্রায় ৪০ কি.মি পথ কমে যাবে। যেখানে আগে ১৩৫ কি.মি পার হয়ে যেতে হতো। এখন মানুষ সহজে যোগাযোগ করতে পারবে। উৎপাদিত পণ্যটা বাজারজাত করতে পারবে। আমাদের আমদানি রফতানিও বৃদ্ধি পাবে। শুধু আমরা না, এর সঙ্গে আঞ্চলিক যে দেশগুলো আছে তারাও ব্যবহার করতে পারবে।’

তিস্তার ওপর নবনির্মিত ওয়াই আকৃতির সেতুর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সেতুটি নিয়ে দুই জেলা এবং উপজেলার মধ্যে খুব দ্বন্দ্ব ছিল।সেতুটা কোথা থেকে কোথায় যাবে? হোমনা বলে আমার এখানে আসবে। মুরাদনগর বলে আমার এখানে আসবে। বাঞ্ছারামপুর বলে আমার এখানে যাবে। এই নিয়ে তাদের মধ্যে যখন খুবই বিতর্ক এবং ঝগড়াঝাটি, সবাই চলে এলো আমার কাছে। আমি সবাইকে নিয়ে বসলাম। ম্যাপ নিয়ে বসে দেখলাম সব থেকে ভাল হয়, এটাকে  যদি বাঞ্ছারামপুর থেকে যেয়ে একটা শাখা চলে যাবে মুরাদনগরে আর একটা চলে যাবে হোমনায়;এটা যদি করে দেই তাহলে একটা নতুন ধরনের হলো। আর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাথে যোগাযোগটাও খুব সহজ হয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে উভয় এলাকার সংসদ সদস্য ও জনপ্রিতিনিধিদের নিয়ে অনেকদিন ধরে বেশ দেনদরবার করতে হয়েছে সে কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।  ডিজাইনটা পরিবর্তন করে দিয়ে, এখন যেটা ওয়াই সেতু হিসেবে বাংলাদেশে পরিচিত হয়ে গেল বলে যোগ করেন তিনি।

‘যোগাযোগ যত বেশি উন্নত হবে তত বেশি মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হবে। মানুষ আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হবে এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। দারিদ্র হ্রাস পাবে।সেইদিকে লক্ষ্য রেখেই সারাদেশে যোগাযোগের নেটওয়ার্ক তৈরি করেছি।’

‘ভবিষ্যতে কোনো একদিন হয়ত এ সেতু দিয়েই যাতায়াত করব। এই আশাটা থাকল। কারণ এই ডিজাইনটা আমি নিজেই করে দিয়েছিলাম বলেই আমার খুব ইচ্ছা।’

‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ যেন এগিয়ে যায়’ এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নৌকা মার্কা সবসময় দেয়। এই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বাঙালি বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আর নৌকা মার্কা ক্ষমতায় আসলেই দেশের উন্নয়ন হয়, এটা আজকে প্রমাণিত সত্য।’

সারাবাংলা/এনআর/একে

আরও পড়ুন

‘দিবার পারি নাই হামা কিছু, এবার ভোট দিমো প্রধানমন্ত্রী’

মুই ক্যাংকরি কমু বাহে, ভোট তো পাই না

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন