বিজ্ঞাপন

‘আত্মীয়-স্বজনদের বলবেন যেন নৌকায় ভোট দেয়’

September 24, 2018 | 2:00 pm

।। সাজেদা পারভিন সাজু ।।

বিজ্ঞাপন

নিউইয়র্ক থেকে: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আর যুক্তরাষ্ট্রের যাওয়ার সুযোগ হবে না উল্লেখ করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নতি হয়। আর অন্যরা ক্ষমতায় থাকলে হয় দুর্নীতি। তাই বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে নৌকাকে ভোট দিয়ে জেতাতে হবে। আপনারা আত্মীয়-স্বজনদের বলবেন যেন নৌকায় ভোট দেয়।

আরও পড়ুন- জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী

রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রাতে (বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল) নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের হোটেল হিলটনের গ্র্যান্ড বলরুমে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রবাসী নাগরিক সংবর্ধনায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশে নবগঠিত বিভিন্ন রাজনৈতিক জোটের প্রসঙ্গ টেনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ শান্তিতে আছে। শুধু শান্তিতে নেই বিএনপি, আর নতুন করে যোগ হয়েছে যুক্তফ্রন্ট। বিএনপিসহ খুনী, দুর্নীতিবাজ, সুদখোর, বাড়ি দখলকারী-সুবিধাভোগীরা যুক্তফ্রন্ট করেছে। তারা সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে। এদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির দুঃশাসন ও দুর্নীতির কারণে ইমার্জেন্সি সরকার এসে প্রথমে আমাকে জেলে নিয়েছিল। সেই জেলখানায় বসেই আমি দিন বদলের সনদ তৈরি করেছিলাম। আমরা ক্ষমতায় এসে দিনবদল করেছি, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেছি। এবার ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। কিন্তু ডিজিটাল করে সমস্যাও হয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয়েছে। সেই অপপ্রচার বন্ধে এবং সামাজিক নিরাপত্তায় আমরা ডিজিটাল আইন পাস করেছি। কিন্তু সমস্যা তৈরি করছে সাংবাদিকরা। সাংবাদিকরা নিজের স্বার্থ ছাড়া অন্য কিছু বোঝে না।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের সময় অনেকেই স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করেছে। তিন দিনের মাথায় আমরা দেখলাম বিভিন্ন লেবাসে বুড়া খোকাদের। একজন ফটো সাংবাদিক সরকারের বিরোধিতায় নেমে পড়লেন। পুলিশ তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেন। তিনি পুলিশকেও ধমক দিয়ে বললেন, আমি বলে দেবো আপনারা আমাকে নির্যাতন করছেন। তখন পুলিশ উনাকে চালান করে দেয়। এখন তা নিয়ে দেশে বিদেশে হৈ-চৈ।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার চাচা কামাল হোসেন (গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, তারেকের বদু কাকা (সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী চৌধুরী), এরশাদ-জিয়ার সুনজরে থাকা ডাকসুর নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, সুদখোর ড. ইউনূস, কাকরাইলে বাড়ি দখলকারী ব্যারিস্টার মঈনুল, মৃত ব্যক্তির জাল সাটির্ফিকেট তৈরি করে গুলশানে বাড়ি দখলকারী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদরা যুক্তফ্রন্ট করেছেন। ড. ইউনুস হিলারির সহযোগিতায় আমাদের চোর বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু কানাডার আদালত বিশ্বব্যাংকের সেই অভিযোগ খারিজ করে দেয়।

তিনি বলেন, বিএনপি এত দুর্নীতি করেছে যে তারা এফবিআইয়ের অফিসারকে কিনে নিয়েছিল সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যা করতে। খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তাই জেলে রয়েছে। তারেক রহমান ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এসব মামলা আমার সরকার করেনি। তার পছন্দের লোকজনই করেছিল।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমি বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে এসেছি। জনগণ ভোট দিলে ক্ষমতায় থাকব, না দিলে থাকব না। আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রবাসীরা দেশের দুঃসময়ে সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় তারা সোচ্চার ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আন্দোলন করেছেন, সর্বোপরি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রেখে চলেছেন।’ এ সময় তিনি ফের ঢাকা-নিউইয়র্ক-ঢাকা রুটে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চালুর আশ্বাস দেন।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ফজলুর রহমান, আক্তার হোসেন, সৈয়দ বসারত আলী, লুৎফুল করিম, শামসুদ্দীন আজাদ, আবুল কাশেম ও মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক আইরীন পারভীনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১০ মিনিটে নিউইয়র্ক পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন। ছয় দিনের এই সফরে মোট ২৬টি কর্মসূচিতে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।

(সাজেদা পারভীন সাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, জিটিভি)

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন