বিজ্ঞাপন

নদীপথ সচল রাখতে কেনা হবে ৩৫টি ড্রেজার

October 15, 2018 | 8:16 am

।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দেশের নৌপথগুলো আন্তর্জাতিক পরিবহন ব্যবস্থার আওতায় নেওয়া সম্ভব হলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। কিন্তু নাব্য সংকটে নৌরুটগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে ওঠে। ফলে অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যবস্থাতেও নৌপথের কার্যকর ব্যবহার সম্ভব হয় না। এ পরিস্থিতিতে দেশের নৌপথ সচল রাখতে ৩৫টি ড্রেজার কেনার উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। সেইসঙ্গে সহায়ক জলযান ও আনুষাঙ্গিক সরঞ্জাম সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামোও নির্মাণ করা হবে।

জানা গেছে, এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় উপস্থাপন করা হতে পারে  ‘৩৫টি ড্রেজার ও সহায়ক জলযানসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ’ শীর্ষক নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্প। অনুমোদন পেলে চলতি মাস থেকে ২০২৩ সালের জুনে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৪ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে অভ্যন্তরীণ নৌপথের একশটি নদী খনন করে প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার নৌপথের নাব্য উন্নয়ন ও সংরক্ষণের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌরুট  ও ফেরি রুটগুলোর সারাবছর ফেরি, লঞ্চ, কার্গো ভেসেল ও অন্যান্য নৌযান নির্বিঘ্নে চলাচলের উপযোগী করা হবে। পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান ড্রেজিং চাহিদা মেটানোর জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং সক্ষমতাও বাড়বে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সুবীর কিশোর চৌধুরী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ক্রমবর্ধমান ড্রেজিং চাহিদা মেটানোর জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং সক্ষমতা বাড়বে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের নদীগুলোর নাব্য সংরক্ষণের জন্য বছরে যে পরিমাণ ড্রেজিং করা প্রয়োজন, বিআইডব্লিউটিএ’র পর্যাপ্ত ড্রেজার ও সহায়ক জলযান না থাকায় সে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশ নৌপথে যাতায়াতের জন্য আন্তর্জাতিক নৌরুট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এর আওতায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথও রয়েছে। দেশের নৌপথগুলো আন্তর্জাতিক পরিবহন ব্যবস্থার আওতায় নেওয়া সম্ভব হলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। কিন্তু নৌরুটগুলো নাব্য সংকটের মুখে পড়লে তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে ওঠে। তাই নৌরুটগুলোর নাব্য উন্নয়ন ও সংরক্ষণ ড্রেজিং কার্যক্রম আরও জোরদার করা প্রয়োজন।

বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার বহরে বর্তমানে ২৫টি ড্রেজার রয়েছে, যা দিয়ে বছরে প্রায় ১১৪ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করা যায়। চলমান একটি প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সালে ১০টি এবং ২০১৯ সালে ১০টি ড্রেজার সংগ্রহ হবে। ফলে ২০১৯ সালে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং ক্ষমতা বেড়ে প্রায় ৩৪৬ লাখ ৫০ হাজার ঘনমিটার হবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, বেসরকারি ড্রেজার সংখ্যাসহ বর্তমানে দেশের মোট ড্রেজিং সক্ষমতা বছরে প্রায় ৮৪৬ লাখ ৫০ হাজার ঘনমিটার। অন্যদিকে বিআইডব্লিউটিএ’র বার্ষিক ড্রেজিং চাহিদা প্রায় ১ হাজার ৬৫৫ লাখ ১০ হাজার ঘনমিটার। অর্থাৎ, বর্তমানে বার্ষিক ড্রেজিং ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৮০৮ লাখ ৬০ হাজার ঘনমিটার। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্প সেই ঘাটতি অনেকটাই পূরণে সক্ষম হবে।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছে— দুইটি ২৮ ইঞ্চি কাটার সাকশন ড্রেজার সংগ্রহ; আটটি ২৪ ইঞ্চি কাটার সাকশন ড্রেজার সংগ্রহ; ৩০টি ক্রু-হাউজবোট, ১৫টি পাইপ কেরিং ডার্ম্ব, ১৭টি বিভিন্ন ক্ষমতার বোলার্ড পুলের টাগবোট সংগ্রহ; ৮৬ হাজার বর্গমিটার অফিসার কোয়ার্টার, স্টাফ কোয়ার্টার ও ডরমিটরি নির্মাণ। এছাড়া, পাঁচটি করে ওয়েল ও ওয়াটার বার্জ, ছয়টি সার্ভে ওয়ার্কবোট, চারটি সার্ভে অ্যালুমিনিয়াম ওয়ার্কবোট, ১২টি লং বুম এক্সক্যাভেটর ও ১২টি ফর্ক লিফট দেওয়া হবে এই প্রকল্পের আওতায়।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

আরও পড়ুন: দেড় লাখ ইভিএম মেশিন কেনার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

বিজ্ঞাপন

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন