বিজ্ঞাপন

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আপিলের রায় আজ

October 30, 2018 | 9:03 am

।। আব্দুল জাব্বার খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আপিল, একই মামলায় অন্যান্য আসামিদের আপিল এবং সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আপিলের বিষয়ে আজ রায় দেবেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেবেন।

গতকাল সোমবার (২৯ অক্টোবর) এ মামলায় যুক্তিতর্ক সমাপ্তি ঘোষণা করে আজ রায়ের দিন ঠিক করে দেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, সোমবার সকালে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে এ মামলার আপিল নিষ্পত্তির আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

পরে বিকেলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত না থাকায় বাকি আসামিদের পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে আদালত রায়ের দিন ঠিক করেন দেন।

আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জেল আরও ৭ বছর

বিজ্ঞাপন

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সারাবাংলাকে বলেন, আপিল বিভাগের আদেশ মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগ গ্রহণ করেছেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে কেউ ছিলেন না। আসামি সালিমুল হকের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন তার আইনজীবী। আমরা কিছু পাল্টা ব্যাখ্যা দিয়েছি এবং বিকেল ৪টার সময় যুক্তিতর্ক শেষ করে মঙ্গলবার রায়ের জন্য দিন ঠিক করেছেন আদালত।

এর আগে, গত ২৩ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা যাবজ্জীবন চেয়ে দুদকের আইনজীবী ও বিচারিক আদালতের দেওয়া পাঁচ বছর সাজা বহাল রাখার আর্জি জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ তাদের বক্তব্য শেষ করেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই দিনই তাকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।

এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিন জন কারাবন্দি, তিন আসামি পলাতক। খালেদা জিয়া ছাড়া কারাগারে থাকা বাকি দু’জন হলেন— মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। পলাতক তিনজন হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি তারা খালেদা জিয়ার সাজা কমানোর আবেদন করেন।

২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করা হয়। এরপর ৭ মার্চ অন্য আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। ১২ মার্চ বেশ কয়েকটি শর্তে খালেদা জিয়াকে জামিন দেন হাইকোর্ট।

এদিকে, ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। সব মিলিয়ে এ মামলায় তিন আসামির আপিল ও দুদকের আবেদনের ওপর শুনানি সমাপ্তি করে রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক করেছেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়। এরপর এ বিচারকের উপর অনাস্থা জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে খালেদা জিয়া। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলাটি স্থানান্তর করে বিশেষ জজ আদালত ৫-এ দেওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত রায় দেন।

মামলার এজাহারে জানা যায়, ১৯৯১-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন রমনা শাখার সোনালী ব্যাংকে প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন, যার নম্বর ৫৪১৬। ওই হিসাবে ইউনাইটেড সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ডি ডি নম্বর ১৫৩৩৬৭৯৭০-তে ১৯৯১ সালের ৯ জুন ১২ লাখ ৫৫ হাজার মার্কিন ডলার (তৎকালীন বাংলাদেশি মুদ্রায় চার কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ টাকা) জমা হয়।

পরে খালেদা জিয়া বিভিন্ন সময়ে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন আসামির নামে ‘এফডিআর’ করে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে উত্তোলন করেন, যা দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং ১০৯ ধারা ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ ২ নম্বর আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধ করেছেন।

সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন