বিজ্ঞাপন

‘দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স’ আ.লীগের ইশতেহারে

December 18, 2018 | 1:41 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও আইনের প্রয়োগ মুখ্য হলেও তা বাস্তবায়নে শুধু সরকারের দায় নয়, জনগণেরও দায় রয়েছে। ঘুষ, অনুপার্জিত আয়, কালো টাকা, চাঁদাবাজি, ঋণখেলাপি, টেন্ডারবাজি ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ এবং দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ স্লোগান নিয়ে নির্বাচনি ইশতেহার-২০১৮ ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ২১টি বিশেষ অঙ্গীকারকে গুরুত্ব দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনি ইশতেহার-২০১৮ ঘোষণা করেছে।

‘নৌকায় ভোট দিন, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি দেব’

ইশতেহারের বলা হয়েছে, দুর্নীতি একটি বহুমাত্রিক ব্যাধি। পেশিশক্তির ব্যবহার ও অপরাধের শিকড় হচ্ছে দুর্নীতি। যার ফলে রাষ্ট্র ও সমাজ-জীবনে অবক্ষয় বা পচন শুরু হয়। এর ফলে অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশাসন প্রভৃতি কোনো ক্ষেত্রেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয় না। দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও আইনের প্রয়োগ মুখ্য হলেও তা শুধু সরকারের দায় নয়, জনগণেরও দায় রয়েছে। আমরা মনে করি, দুর্নীতি দমনে প্রয়োজন সরকার ও জনগণের সমন্বিত পদক্ষেপ।

বিজ্ঞাপন

ইশতেহার দেখতে ক্লিক করুন এখানে: আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার

সরকারের সাফল্য ও অর্জনগুলো তুলে ধরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। ফলে জনগণ এর সুফল ভোগ করছে। দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কার্যপরিচালনা করার জন্য সার্বিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগ জনগণ যাতে সহজে দাখিল করতে পারে, সেজন্য দেশের সকল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘অভিযোগ গ্রহণ বক্স’ স্থাপন করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন চাহিদা নিরূপণ করে সরকারের নিকট বাজেট বরাদ্দ চেয়ে থাকে এবং কমিশনের চাহিদা মোতাবেক সরকার বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে অর্থায়ন করে আসছে।

সরকারি চাকরিতে মেধা ও যোগ্যতা বিবেচনার অঙ্গীকার আ.লীগের

আগামী দিনে লক্ষ্য ও পরিকল্পনা তুলে অঙ্গীকারে বলা হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশনকে কর্ম পরিবেশ ও দক্ষতার দিক থেকে যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করা হবে। সে ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় এবং প্রায়োগিক ব্যবহারে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পর্যালোচনা, পর্যবেক্ষণ ও তদারকি ভবিষ্যতে আরও জোরদার করা হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি রাজনৈতিক, সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ জোরদার করা হবে। ঘুষ, অনুপার্জিত আয়, কালো টাকা, চাঁদাবাজি, ঋণখেলাপি, টেন্ডারবাজি ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ এবং দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনী ইশতেহারে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও মাদক নির্মূলের অঙ্গীকারে বলা হয়েছে, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদক মানবতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও প্রগতির পথে অন্তরায়। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি পূর্বাপর পরাজয়ের প্রতিশোধ ও ক্ষমতা দখল করতে সন্ত্রাস-সহিংসতা, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। বিএনপি-জামাত জোট আমলে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবে আমরা নিন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু দেশ এখন জঙ্গিবাদ দমনে বিশ্ব সমাজে প্রশংসিত।

এ ক্ষেত্রে সাফল্য ও অর্জনগুলো তুলে ধরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রম বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে বিশেষভাবে জাতিসংঘের-৭১তম অধিবেশনে প্রশংসিত হয়েছে। উগ্র-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর তৎপরতা এবং জঙ্গিবাদের হাত থেকে দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ সম্পন্ন ও তা বানচালের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল অপচেষ্টা প্রতিহত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। অবৈধ অস্ত্র আমদানি, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান, বেচা-কেনা ও ব্যবহার কঠোর হাতে দমন করা হচ্ছে। দেশব্যাপী জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদক রোধকল্পে সাম্প্রদায়িকতা ও মাদকবিরোধী প্রতিবাদ, তৎপরতা ও সচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

লক্ষ্য ও পরিকল্পনার অঙ্গীকার তুলে ধরে বলা হয়েছে, আগামীতে জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির প্রতি সরকারের দৃঢ় অবস্থান থাকবে। সন্ত্রাসী-গডফাদারদের এবং তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার এবং বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখল, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই বন্ধে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হবে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ও চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি অর্থায়নে সংশোধনাগারের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আধুনিকায়নের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন:

আ.লীগের ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখার অনুরোধ

ব্লু-ইকোনমি অগ্রাধিকার পেয়েছে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন