বিজ্ঞাপন

চারতলা ভবনের নিচতলায় ২৪ লাশ, দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল

February 21, 2019 | 8:20 am

।। আব্দুল জাব্বার খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চকবাজার থেকে: রাজধানীর চকবাজারে কেমিক্যাল গোডাউনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে না এলেও আওতাধীন বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এখন চলছে উদ্ধার তৎপরতা।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক দেবাশীষ সারাবাংলার সঙ্গে আলাপকালে অভিযানের অভিজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, আমার জীবনে অনেক ঘটনা দেখেছি। অসংখ্যা আগুন নেভানোর অভিযানে অংশ নিয়েছি। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ আলাদা অভিজ্ঞতা। ভূমিকম্প হলে যেমন মুহূর্তের মধ্যে সব ধ্বংস হয়ে যায়, এখানকার অবস্থাও তেমন। এখানে চারতলা একটি ভবনের নিচতলায় আমরা ২৪টি মরদেহ পেয়েছি আমরা। আগুন লাগার পরে সম্ভবত সবাই নামার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কেমিক্যাল, গ্যাস সিলিন্ডার, ট্রান্সফর্মার, প্লাস্টিক দানা- সমস্ত দাহ্য পদার্থ এক সঙ্গে বিস্ফোরণ হওয়ায় কয়েক মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: ধসে পড়তে পারে ওয়াহেদ ম্যানসন, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭

বিজ্ঞাপন

মোট ছয়টি ভবনে আগুন লেগেছে। একটি পুরো পুড়ে গেছে, বাকিগুলো আংশিক। ভবনগুলোতে যারা আটকে পড়েছিলেন তারা মারা গেছেন। এখানে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, ওয়াহেদ ম্যানসন, এর পাশে ফুটপাত, চায়ের দোকান, যেখানে যারা ছিলেন সবাই ঝলসে গেছে। সারি সারি লাশ আমরা উদ্ধার করেছি। মোটরসাইকেল, পিকআপ ভ্যান, প্রাইভেট কার সব যেমন ছিল তেমন আছে। ধ্বংসস্তূপে আমরা কঙ্কাল পেয়েছি। অনেকে হয়তো উদ্ধার পেয়েছেন, বলেন তিনি।

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এমন ঘটনা আমরা পেয়েছি, পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়েছিলেন। বাইরে থেকে গৃহকর্তা এসে সবাইকে বের করে নিরাপদে সরিয়ে নিতে পেরেছেন। এখানে আমরাও অসহায় হয়ে পড়েছিলাম। গলিটা এত সরু, আমাদের আধুনিক গাড়িগুলো একটাও কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। আগুন নেভানোর জন্য পর্যাপ্ত পানিও পাওয়া যায়নি।

এর আগে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে ছুড়িহাট্টা জামে মসজিদের পাশে ওয়াহেদ ম্যানসন নামে একটি পাঁচতলা ভবনে আগুন লাগে। এর পাশের আরও একটি চারতলা ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আরও তিনটি ভবনে ছড়ায় আগুন।

বিজ্ঞাপন

ওয়াহেদ ম্যানসনের পেছনেই রয়েছে বড় কাটারা কমিউনিটি সেন্টার। সেই কমিউনিটি সেন্টার এবং এর পূর্ব পাশের প্লাস্টিক কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রাত সোয়া ৩টায় আগুন নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) একেএম শাকিল নেওয়াজ। এরপর আবারও বাড়তে শুরু করে আগুন। নতুন করে তিনটি আবাসিক ভবনে আগুন লেগে যায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪টার দিকে ফায়ারকর্মীদের সহায়তা দিতে যোগ দেয় বিমান বাহিনীর সদস্যরা। আগুনের ভয়াবহতা কমে আসার পর শুরু হয় উদ্ধার তৎপরতা। ওয়াহেদ ম্যানসনের প্রতিটি তলা থেকে বের করা হচ্ছে পুড়ে যাওয়া মরদেহ।

এদিকে নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধান পেতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে এবং স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে জড়ো হচ্ছেন চকবাজারবাসী।

সারাবাংলা/এটি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন