বিজ্ঞাপন

অ্যাভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংসদে ৩ বিল পাস

February 28, 2019 | 10:01 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদের আগে অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করা তিনটি বিল সংসদে পাস করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বিল তিনটি আইনে পরিণত হতে যাচ্ছে। এখন রাষ্ট্রপতি সই করলেই বিল তিনটি আইনে পরিণত হবে। সংসদে পাস হওয়া তিনটি বিল হচ্ছে— বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যাল বিল, গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) (আরপিও) বিল ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি অধিগ্রহণ বিল ২০১৯।

বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা বিল তিনটি পাসের প্রস্তাব করেন। যদিও বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও সংসদ সদস্যরা জনমত যাচাই করার প্রস্তাব দিলে সেসব প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

এর আগে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ সংক্রান্ত পৃথক তিনটি অধ্যাদেশ জারি করেন। সংসদের চলতি অধিবেশনে অধ্যাদেশ তিনটি উপস্থাপন করা হয়। এরপর সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী তা বিল আকারে সংসদে উত্থাপন করা হয়। পরে তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয় এবং কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে বিল তিনটি পাসের সুপারিশ করে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেয়।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, সংবিধানে অধ্যাদেশ জারির পর সংসদ অধিবেশন শুরুর ৩০ দিনের মধ্যে অধ্যাদেশটি বিল আকারে সংসদে পাসের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই বাধ্যবাধকতার কারণেই বিল তিনটি পাস করা হয়েছে।

এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় বিল

অ্যাভিয়েশন সংশ্লিষ্ট উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে অগ্রসর বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে এভিয়েশন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা, আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও পঠন-পাঠনে সুযোগ তৈরি ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় বিল-২০১৯’ পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এর আগে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি সংসদে বিলটি  উত্থাপন করেন।

বিজ্ঞাপন

প্রস্তাবিত আইনের বিধান অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকায় ওই এভিয়েশন  অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর, ভাইস চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার, সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যদের সমন্বয়ে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা থাকবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত এবং অঙ্গীভূত ইনস্টিটিউট, একাডেমি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একাডেমিক কার্যক্রম তদারকিকরণ, ব্যবস্থাপনা, উন্নয়নে কাজ করবে।

বিলের বিধান অনুযায়ী, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে থাকবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পরিচালিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমি, ফ্লাইং ইনস্ট্রাকটর স্কুল, ফ্লাইট সেফটি ইনস্টিটিউট, অ্যারো মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, অফিসার্স ট্রেনিং স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বীকৃত অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান। এছাড়া সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টার এবং বিমান বাংলাদেশ ট্রেনিং সেন্টারসহ এভিয়েশন শিক্ষা সংক্রান্ত সরকার ও বেসরকারি ইনস্টিটিউট, কলেজ, একাডেমি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের আদেশের বিধান অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হবে।

গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) বিল

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্র প্রসারিত ও সহজ এবং দ্রুততার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনার সহায়ক বিধানের প্রস্তাব করে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) (আরপিও) বিল-২০১৯’ পাসের প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি সংসদে বিলটি  উত্থাপন করেন।

বিজ্ঞাপন

পাস হওয়া বিলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার, মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন খেলাপি ঋণ পরিশোধের সুয়োগ দান, অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ এবং ইভিএম সংশ্লিষ্ট অপরাধের শাস্তির বিধান সংযোজন করা হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি অধিগ্রহণ বিল

সমতলের মতো পার্বত্য অঞ্চলের ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণে সমতা আনতে সংসদে একটি বিল পাস হয়েছে। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এ সংক্রান্ত ‘দ্য চিটাগং হিল ট্র্যাকস (ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন) রেগুলেশন (সংশোধন) বিল-২০১৯’ পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন।

পাস হওয়া বিলের বিধান অনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সরকারি কাজে ভূমি অধিগ্রহণ করলে ক্ষতিগ্রস্তরা বাজার মূল্যের অতিরিক্ত আরও দুইশ শতাংশ ক্ষতিপূরণ পাবেন। বেসরকারি কাজে অধিগ্রহণ করলে ক্ষতিপূরণ পাবেন বাজারমূল্যের সঙ্গে আরও তিনশ শতাংশ। বিদ্যমান আইনে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ একশ টাকায় ১১৫ টাকা। অর্থাৎ বাজার মূল্যের পাশাপাশি মাত্র ১৫ শতাংশ বেশি দেওয়ার কথা ছিল। নতুন বিলে সমতলে ৬১টি জেলার সঙ্গে মিল রেখে এই ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণটা বাড়ানো হয়েছে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন