বিজ্ঞাপন

জাতীয় দলে খেলা গর্বের, ফিফাকে বাংলাদেশ ফুটবল অধিনায়ক

May 1, 2019 | 3:02 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রতিটি ফুটবলারের স্বপ্ন থাকে নিজ দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার। মূল ইভেন্টে না খেললেও স্বপ্ন থাকে অন্তত প্রাক-বাছাইয়ে খেলার। বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে খেলেছেন লাল-সবুজের এই দলপতি। ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার কাছে সেই গল্পই শুনিয়েছেন ডেনমার্কে বেড়ে ওঠা জামাল ভূঁইয়া।

বিজ্ঞাপন

কাতার ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাইয়ে আবারো খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ১৮৮ নম্বর র‌্যাংকিংয়ে থাকা লাল-সবুজদের রাউন্ড ওয়ানে প্রতিপক্ষ এবার লাওস। ৬ জুন লাওসের বিপক্ষে বাংলাদেশ খেলবে কাতার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম পর্বের অ্যাওয়ে ম্যাচ।

ফিফার কাছে দেওয়া সাক্ষাতকারে ২৯ বছর বয়সী জামাল ভূঁইয়া জানান, ‘এ বছর আমাদের হোম এবং অ্যাওয়ে দুটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যদি আমরা দুটি ম্যাচেই জিততে পারি তাহলে পরের রাউন্ডে যেতে পারবো। তাতে করে বিশ্বকাপের বাছাইয়ে আরও বেশি ম্যাচ হাতে পাব। আমাদের লক্ষ্য সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি লাওসের বিপক্ষে আমরা ভালো কিছু করেই পরের রাউন্ডের টিকিট কাটবো। এটাও জানি লাওস শক্তিশালী দল, তাই আমাদের শতভাগ না, ১১০ ভাগ ঢেলে দিতে হবে।‘

লাওসের বিপক্ষে ম্যাচ দুটি শুধু কাতার বিশ্বকাপের বাছাইয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এই বাছাইয়ে বাংলাদেশ এএফসি এশিয়ান কাপ-২০২৩ এর টিকিট কাটার সুযোগ পাবে। ৬ জুন প্রথম লেগের পর ১১ জুন দ্বিতীয় লেগে নামবে জামাল ভূঁইয়ার দল।

বিজ্ঞাপন

গত এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ শেষ ষোলোতে খেলেছিল। সেবার ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় পর্বে উঠে। বাংলাদেশ ১-১ গোলে ড্র করেছিল থাইল্যান্ডের বিপক্ষে। কাতারকে ১-০ ব্যবধানে হারানোর ম্যাচে গোলটি করেছিলেন জামাল ভূঁইয়া। অতিরিক্ত সময়ে তিনি জয়সূচক গোলটি করেন। শেষ ষোলোতে বাংলাদেশ ৩-০ গোলে হেরেছিল উজবেকিস্তানের বিপক্ষে।

এশিয়ান গেমস নিয়ে জামাল ভূঁইয়া ফিফাকে বলেন, ‘আমরা গত এশিয়ান গেমসে ভালো খেলেছি। প্রতিপক্ষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলাম। কাতারের বিপক্ষে আমি যে গোলটি করেছিলাম, সেটি অবশ্যই আমার কাছে বিশেষ কিছু হয়ে থাকবে। কারণ, ওই গোলেই আমাদের দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত হয়েছিল।’

এক বছর আগে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব নেন জেমি ডে। আর্সেনালের সাবেক এই খেলোয়াড় লাল-সবুজের জার্সিধারীদের উন্নতিতে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কোচ প্রসঙ্গে জামাল ভূঁইয়া জানান, ‘আমি মনে করি, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে যে বিদেশি কোচরা এসেছেন, তাদের মধ্যে জেমিই সেরা। সব খেলোয়াড় তাকে সম্মান করে এবং তার চাওয়া বুঝতে পারে। জেমি দায়িত্ব নেয়ার পর আমাদের খেলার অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। এখন আমরা নিজেদের ফিটনেস এবং কৌশল নিয়ে আশাবাদী। দল হিসেবে আমরা আগের চেয়ে মানসিকভাবে অনেক শক্তিশালী হয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের জনপ্রিয় খেলা ফুটবল হলেও এখন ক্রিকেটের দিকেই মানুষের ফোকাসটা বেশি। জামাল ভূঁইয়া সেটি নিয়েও কথা বলেছেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের দলপতি জামাল ফিফার কাছে জানান, ‘ফুটবল এখনও বাংলাদেশের জনপ্রিয় খেলা। এখন ফুটবলের ক্লাবগুলোর জন্য বেশ ভালোমানের স্পন্সর পাওয়া যায়, পৃষ্ঠপোষকরা এগিয়ে আসছে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দ্রুত অগ্রগতিতে ফুটবলও সবাইকে আকৃষ্ট করছে। ঘরোয়া লিগ গুলো এখন আরও বেশি আকর্ষণীয়। কারণ এখন বেশ কিছু ক্লাব শিরোপার জন্য লড়াই করে। রাজধানী ঢাকায় হয়তো ক্রিকেট জনপ্রিয়, কিন্তু ঢাকার বাইরে ফুটবলটাই এক নম্বরে। বাংলাদেশের ফুটবল ভালোভাবেই এগুচ্ছে।’

ডেনমার্কের নাগরিকত্ব পাওয়া জামাল ভূঁইয়ার হাতে বাংলাদেশ জাতীয় দলকে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি ড্যানিশ সেকেন্ড টায়ারের লিগে খেলেছেন হেলারআপে। নিজের অধিনায়কত্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেকে দলের একজন নেতা হিসেবে দেখি। এটা আমাকে নেতৃত্ব দিতে সাহায্য করে। অধিনায়কত্বটা আমার কাছে বিশেষ দায়িত্ব পালনের মতো। যদি কখনো চাপে থাকি তখন দলকে সহযোগিতা করার দায়িত্ব আমার।’

দেশের তরুণ ফুটবলারদের নিয়েও ফিফার সঙ্গে কথা বলেছেন জামাল ভূঁইয়া, ‘আমি তরুণদের দিক নির্দেশনা দিতে পারি। তাদের বোঝাতে পারি যে আমি কোথায় ব্যর্থ হয়েছি। তারা আমার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে। আমি আমার অভিজ্ঞতা তাদের সাথে শেয়ার করি। আমি মনে করি দলে আমার ভূমিকা দলকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করে। জাতীয় দলে খেলাটা আমার জন্য গর্বের। দেশের ১৬৫ মিলিয়ন মানুষের প্রতিনিধি হয়ে খেলি। এটা আমার কাছে অন্যরকম একটা অনুভূতি।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমআরপি

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন