বিজ্ঞাপন

মাদক: ভৈরবে পরিদর্শককে শোকজ, উপপরিদর্শককে বদলি

August 18, 2019 | 7:18 pm

এম.এ হালিম, লোকাল করেসপন্ডেন্ট

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ): নানা অনিয়ম ও আটক বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠায় ভৈরবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সার্কেল ইনস্পেকটর মাসুদুর রহমান ও এক সিপাহীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। একই অভিযোগে সেন্টু রঞ্জন নাথ নামে এক উপপরিদর্শককে বদলি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কিশোরগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. হাবীব তৌহিদ ইমাম জানিয়েছেন, দুইজনকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সূত্র জানায়, জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ৬টি উপজেলায় কাজ করে ভৈরব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সার্কেল অফিস। এগুলো হলো— ভৈরব, কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, নিকলী, অষ্টগ্রাম ও কটিয়াদী উপজেলা।

সড়ক, রেল ও নৌপথে মাদক পাচারে ট্রানজিট হিসেবে ভৈরবকে ব্যবহার করা হয়। যে কারণে শহরের আমলাপাড়ায় সার্কেল অফিস স্থাপন করা হয়। সেখানে একজন ইনস্পেকটর, একজন সাব ইনস্পেকটর এবং তিনজন নারী সিপাহী নিয়োগ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভৈরবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সার্কেল অফিস থাকলেও শহরের কমলপুর, পঞ্চবটি, চণ্ডিবের, কালীপুর, শ্রীনগর, আগানগর, সাদেকপুর, গজারিয়া, শিবপুর, শিমুলকান্দি ও কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নে মাদকের ছড়াছড়ি। হাত বাড়ালেই মেলে ইয়াবা। কয়েক মাসেই সার্কেল অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাদক বিক্রেতাদের সখ্যতা গড়ে ওঠে। মাঝে মাঝে যে অভিযান পরিচালনা করা হয় তা-ও লোক দেখানো।

তারা বলেন, সার্কেল অফিসের বাইরে কোনো সাইনবোর্ড নেই। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান।

তারা জানান, তিনমাস আগে শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভূপুর গ্রামের কালা মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালান সার্কেল অফিসের কর্মকর্তারা। কালা মিয়া অনুপস্থিত ছিলেন। তার ঘরে তল্লাশি করার সময় আলমিরাতে রাখা তার মেয়ের বেতনের ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে উপপরিদর্শক সেন্টু রঞ্জন নাথ ও তার সহকর্মী সিপাহীদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার পরদিন কালা মিয়ার মেয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট অধিদফতরে লিখিত অভিযোগ করে।

বিজ্ঞাপন

প্রায় এক বছর আগে ভৈরব সার্কেল অফিসে কর্মরত ইনস্পেকটর কামনাশীষ সরকার অবৈধ মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। মাদকসহ তিনি গ্রেফতার হন এবং কারাগারে যান।

মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা বলতে দু’সপ্তাহে তিনবার ভৈরব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

কিশোরগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. হাবীব তৌহিদ ইমাম মোবাইল ফোনে জানান, মাসুদুর রহমান এবং একজন সিপাহীকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া উপপরিদর্শক সেন্টু রঞ্জন নাথকে বদলি করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। তিন কর্মদিবসের মধ্যে সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারলে দুইজনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হবে।

এ সময় তিনি ভৈরব সার্কেল অফিসের নানা অনিয়মের কথা অকপটে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, তাদের জন্য আমাকে চাপে থাকতে হয়। আগেও এই অফিসের ইনস্পেকটর কামনাশীষ সরকারের কারণে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বদনাম হয়েছে। তার বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এটি

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন