বিজ্ঞাপন

‘ইংরেজিমাধ্যমে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোটা কেন?’

February 13, 2020 | 9:01 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ইংরেজিমাধ্যমে যারা পড়ছে তাদের জন্য উচ্চ শিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কেন কোটা রাখতে হবে? আমি এর কোনো যৌক্তিকতা বুঝি না।’

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হয়।

প্রশ্নকর্তা হারুনুর রশীদ বলেন, ‘কয়েক বছর আগে আমাদের উচ্চ আদালত যে একটি নির্দেশনা দিয়েছিল, ইংরেজিমাধ্যমে যারা ‘এ’ লেভেল, ‘ও’ লেভেল পাস করছে—বুয়েট ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের জন্য যেন অন্তত পাঁচ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা করা হোক। এখন পর্যন্ত এটা কার্যকর করা হয়নি। যার ফলে লক্ষ্য করছি, অনেক মেধাবী ছেলে-মেয়ে দেশ ছেড়ে বাইরে চলে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জবাবে বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্যের কথায় মনে হচ্ছে, ইংলিশ মিডিয়ামে পড়লেই তারা মেধাবী। আর বাংলা মিডিয়ামে যারা পড়ে, তারা মেধাবী না। আমরা কিন্তু নিরেট বাংলা মিডিয়ামেই পড়ে আসছি। হয়তো মেধাবী না। তবে একেবারে খারাপ যে, তাও না। হয়তো ভালো সুযোগ পেলে ভালো রেজাল্ট করতে পারতাম। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে—ইংলিশ মিডিয়ামে যারা পড়ছে, তাদের জন্য কেনো কোটা রাখতে হবে? আমি এর কোনো যৌক্তিকতা বুঝি না। আর বিদেশে যাওয়া, এটা একটা প্রবণতা। এটা অনেক মানুষের মাঝে আছে।’

বিজ্ঞাপন

হারুনুর রশীদকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা ৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় এসেছি, তখনই কিন্তু শিক্ষার কারিকুলাম ও  পদ্ধতিতে অনেক পরিবর্তন এনেছিলাম। যাতে আমাদের দেশের যে শিক্ষাপদ্ধতি, সেটা যেন বাইরের বিশ্ববিদ্যাল বা কলেজগুলি গ্রহণ করে। সেটা যেন গ্রহণযোগ্য হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে অনেকগুলি পরিবর্তন, সংস্কার আমরা করি।’ তাছাড়া আমরা শিক্ষা নীতিমালা নিয়েছি’—বলেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। তার ওপর আমরা শিল্পায়ন করছি। সবকিছু এখন বেসরকারিখাতে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এখানে চাকরির যে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে, তা কিন্তু না। আমরা সরকারে আসার পর প্রায় ২ কোটির মতো মানুষকে চাকরির সুযোগ করে দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটা প্রবণতা আমাদের আছে। যেনতেন একটা পাস করে মনে করা হয় একটা চাকরির প্রয়োজন। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় তারা টিকতে পারে না বা চাকরি পায় না।’

বর্তমান প্রজন্মের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সবাইকে শুধু চাকরির পিছনে ছুটতে হবে কেন। বরং ছেলে-মেয়েরা যারা মেধাবী তারা নিজেরাই ব্যবসা-বাণিজ্য বা এমন কিছু করবে, যাতে আরও দশজনকে চাকরি দিতে পারে। স্টার্ট-আপ বলে একটা আইন করে আমরা কিন্তু সেখানে অর্থ রেখেছি। সেখান থেকে টাকা নিয়ে বেকাররা নিজেরাও উপার্জনের পথ করতে পারে। কিন্তু আমরা দেখছি  তারা ভাবে কোনোমতে একটু পড়লেই বোধহয় চাকরি পাবে, এই যে প্রবণতাটা এটা কিন্তু বিদেশে খুব একটা বেশি নেই।’

বিজ্ঞাপন

অনেকে বিদেশে গিয়ে লেখাপড়া শেষ করে আবার দেশে ফিরে আসে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের তো ১৬ কোটির ওপরে মানুষ। এত বিশাল জনসংখ্যা। সেখান থেকে যদি বাইরে কর্মসংস্থানের জন্য যায়, এটা তো আমরা এমনিই উৎসাহিত করি। পৃথিবীটা এখন একটা দেশে সীমাবদ্ধ থাকে না। পৃথিবীটা এখন গ্লোবাল ভিলেজ হয়ে গেছে। এটাও মাথায় রাখতে হবে। কাজেই আমাদের যারা বিদেশ যাচ্ছে, তাতে আমাদের যে আবার মেধাবীর অভাব হচ্ছে তা কিন্তু না। আমি মনে করি আমাদের ছেলে-মেয়েরা যথেষ্ট মেধাবী। এখন পড়াশোনার ভালো সুযোগ আমরা দিচ্ছি। কাজেই এখন তারা ভালোভাবে সুযোগ নিচ্ছে।’

এছাড়া বিএনপির শাসনামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্ররাজনীতির নামে আধিপত্য বিস্তার ও অরাজক পরিস্থতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অন্তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অতীতের মতো অস্ত্র প্রতিযোগিতা, বোমাবাজি ও অস্ত্রের ঝনঝনানি নেই।সেটা আমরা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। শিক্ষার একটা পরিবেশ এসেছে। সেশনজট আমরা কমিয়ে এনেছি।’

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন