বিজ্ঞাপন

ক্যাসিনো খালেদের বিরুদ্ধে ৯ মাস পর অর্থপাচার ও চাঁদাবাজির মামলা

June 8, 2020 | 3:25 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ক্যাসিনোকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেফতারের প্রায় ৯ মাস পর বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও চাঁদাবাজির অভিযোগে সিআইডির পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৮ জুন) সকালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন মামলার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে, রোববার (৭ জুন) বিকেলে ডিএমপির মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের (ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াড) পুলিশ পরিদর্শক ইব্রাহিম হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলার বাদী বলেন, ‘খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া গ্রেফতারের পর অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত শুরু করে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে খালেদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও চাঁদাবাজির বিষয়টি প্রমাণ পায়। এরপর সিআইডির পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। এ বিষয়ে খালেদকে জিজ্ঞাসাবাদ ও আরও তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

মামলা সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, কমলাপুর, মতিঝিল, খিলগাঁও, সবুজবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ মাছের হাট, পশুর হাট, গণপরিবহন সিএনজি স্টেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি করতেন। শাহাজাহানপুরে রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণ করার পর তা বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ টাকা উপার্জন করে। এ ছাড়া মতিঝিল ফকিরাপুলে ইয়ং ক্লাবে অবৈধভাবে ক্যাসিনো চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন। এ সব টাকা দিয়ে তার নামে ভূঁইয়া অ্যান্ড ভূঁইয়া ডেভেলপারস লিমিটেড, অর্ক বিল্ডার্স ও অর্পণ প্রোপার্টিজ নামে তিনটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন।

জানা যায়, অবৈধ আয়ের টাকা দিয়ে গুলশানে একটি, শাহজাহানপুরে একটি এবং মোহাম্মদপুর কাদেরিয়া হাউজিংয়ে একটিসহ মোট তিনটি ফ্ল্যাট কিনেছেন তিনি। যা তার নামে রয়েছে। এ ছাড়া তার নামে একটি প্রাডো এবং একটি নোহা গাড়ি রয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, খালেদ মাহমুদ অবৈধ অর্থ জনৈক আইয়ুব রহমানকে ব্যবহার করে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে টাকা পাচার করেছেন। তদন্তকালে খালেদের মালয়েশিয়ার মাই ব্যাংকের একটি, আরএইচবি ব্যাংকের একটি, সিঙ্গাপুরের ইউওবি ব্যাংকের একটি ও থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ব্যাংকের একটিসহ মোট চারটি এটিএম ডেবিট কার্ড জব্দ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

তদন্তে বেরিয়ে আসে, ২০১৮ সালের মে মাসে খোলা মালয়েশিয়ার মাই ব্যাংক ও আরএইচবি ব্যাংকে হিসেব খোলেন মাহমুদ। এই দুটি ব্যাংকের মালয়শিয়ায় কেএলসিসি শাখায় ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট টাকা জমা দেখা যায়, ২৫ লাখ ৫৭ হাজার মালয়শিয়ান রিঙ্গিত। যার দুটি হিসেবে ২২ লাখ ৫৭ হাজার রিঙ্গিত এবং দুটি এফডিআরে তিন লাখ রিঙ্গিত পাওয়া যায়। তার জব্দকৃত পাসপোর্টের ভিসায় মিস মাই টু হোম লেখা আছে। তার মানে সেকেন্ড হোম ভিসা প্রমাণিত হয়েছে। সেকেন্ড হোম ভিসার পূর্ব শর্ত হলো মালয়েশিয়ায় ব্যাংকে তার নামে এফডিআর রয়েছে।

জানা যায়, সিঙ্গাপুরে খালেদ অর্পণ ট্রেডার্স পিটিসি লিমিটেড নামে একটি ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য বিপণনী প্রতিষ্ঠান খোলেন। যার রেজিস্ট্রেশন হয় ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর। ওই মাসেই সিঙ্গাপুর ইউনাইটেড ওভারসিজ ব্যাংকে তার মালিকানাধীন কোম্পানির নামে একটি হিসেব খোলেন। ওই অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ লাখ ৫ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার জমা থাকার হিসাব পাওয়া যায়। এসব টাকা বাংলাদেশ থেকে আরেক আসামি আইয়ুব রহমানের মাধ্যমে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে বলে উঠে এসেছে তদন্তে।

থাইল্যান্ডের ব্যাংকক ব্যাংকে ২০১৮ সালে খালেদের নামে খোলা অ্যাকাউন্টে ১০ লাখ থাই বাথ জমা রাখার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব টাকাও আইয়ুব রহমানের মাধ্যমে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে। তিন দেশের চার ব্যাংকে মোট ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করেছেন।

২০১৯ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে ক্যাসিনো গডফাদার যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাব। তখন থেকে খালেদ একাধিক মামলায় এখনও কারাগারে রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন
হত্যা মামলায় ক্যাসিনো খালেদ ৭ দিনের রিমান্ডে
খালেদের ক্যাসিনো থেকে আটক ১৪২, জব্দ ২৪ লাখ টাকা
খালেদের ক্যাসিনোতে প্রতি রাতে লেনদেন হতো কোটি টাকা!
ক্যাসিনোয় জড়িত ২ এমপিসহ ২২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ক্যাসিনোকাণ্ড: ৪৩ জনের বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক

সারাবাংলা/ইউজে/একে

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন