বিজ্ঞাপন

রাজবাড়ীতে বেআইনিভাবে রেলের ট্রলি তৈরির অভিযোগ, শেষে দুর্ঘটনা

July 20, 2020 | 10:04 pm

মো. আশিকুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজবাড়ী : রাজবাড়ীতে বেআইনিভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে ট্রলি তৈরির প্রথম দিনেই ট্রলির চাকা খুলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান রেলওয়ের ট্রলিম্যান হারুন খান। অভিযোগ উঠেছে, রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (এ.ই.এন) গৌতম বিশ্বাস নিজের সুবিধার্থে ও ভ্রমণ বিলাসের জন্য বেআইনিভাবে টেন্ডার ছাড়াই রেলওয়ের আওতার বাইরের একটি গ্যারেজ থেকে এই ট্রলি তৈরি করেছেন।

বিজ্ঞাপন

রেলওয়ের আইন অনুযায়ী বিভাগীয় কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কর্মকর্তারা ইঞ্জিনচালিত ট্রলি ব্যবহার করতে পারেন না। সেই কারণে রেল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে রাজবাড়ীতে কোন ইঞ্জিনচালিত ট্রলি ছিলনা। স্থানীয়ভাবে রেলওয়ের কাজ পরিদর্শনের একমাত্র ভরসা ছিল ঠেলা ট্রলি। সেটিই ব্যবহার করে আসছিলেন আগের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তরা।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের অভিযোগ, এই আইন ভঙ্গ করেন চলতি বছরের ২৪মার্চ যোগদানকৃত কর্মকর্তা গৌতম বিশ্বাস। ইঞ্জিনচালিত ট্রলি তৈরি বেআইনি জেনেও ৬-৭দিন আগে টেন্ডার ছাড়াই রাজবাড়ী জেলা সদরের গোয়ালন্দ মোড়ে আকমল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে ট্রলিটি তৈরি করতে দেন গৌতম বিশ্বাস ও সিনিয়র সাব-এ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (পি.ডাব্লউ) জিহাদ হোসেন।

তারা জানান, ট্রলি তৈরির কাজ শেষ হলে গত ১৫জুলাই গভীর রাতে সেটি গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ীতে আনা হয়। রাতেই রাজবাড়ী রেলস্টেশন থেকে বেলগাছি পর্যন্ত ট্রলির ট্রায়াল দেওয়া হয়। ১৬জুলাই বেলা ১১টার দিকে ওই ট্রলিতে রাজবাড়ী থেকে মধুখালীর উদ্দেশ্যে কাজ পরিদর্শনের জন্য রওনা হন সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী গৌতম বিশ্বাস। তার সঙ্গে ছিলেন  জিহাদ হোসেন, কুষ্টিয়া রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (কার্য) হাফিজুল ইসলাম, রাজবাড়ী রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত হেডমেট পরিমল অধিকারীসহ আরও কয়েকজন। বহরপুর রেলগেট পার হওয়ার পর ট্রলির একটি চাকা খুলে দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। এতে ট্রলিম্যান হারুন ট্রলি থেকে পড়ে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে গৌতম বিশ্বাস ট্রলি তৈরি করেছেন। যা দন্ডনীয় অপরাধ। বাইরের ওয়ার্কশপ থেকে শ্যালো মেশিন দিয়ে তৈরি এই ট্রলি থেকে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো।

আকমল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক আকমল হোসেন জানান, গত কয়েকদিন আগে গৌতম বিশ্বাস ও  জিহাদ হোসেন এসে ট্রলি তৈরি করতে দেন। ৬০হাজার টাকার বিনিময়ে শ্যালো মেশিন দিয়ে তিনি ট্রলি তৈরি করা হয়। গত ১৫জুলাই রাতে তারা এসে ট্রলিটি নিয়ে যান।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী রেলওয়ের এ.ই.এন গৌতম বিশ্বাস জানান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমানের মৌখিক নির্দেশে তিনি ২২হাজার টাকা দিয়ে ট্রলি তৈরি করেছেন এবং ট্রলির মূল্যও তারা কয়েকজন ব্যক্তিগতভাবে পরিশোধ করেছেন। রেলের ওপর শিশুরা পাথর রেখে দেয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সারাবাংলা/টিসি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন