বিজ্ঞাপন

মানুষের জন্য ছুটে চলা চার্লি

May 21, 2021 | 12:56 pm

জোহরা শিউলী

গভীর রাতে প্রতিবেশি অসুস্থ, তাকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি কিংবা কয়েকবাড়ি পরে কিশোরী মেয়েটির বিয়ের আয়োজন, নিজ উদ্যোগে সেই বিয়ে বন্ধ করা এমন কাজ নিয়মিত করে যাচ্ছেন নাসরিন আক্তার চার্লি। এভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি। দিন-রাত, ঝড়-বৃষ্টি কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি তার কাজে। বন্ধু হয়ে মানুষের পাশে থাকেন নাসরীন আক্তার চার্লি।

বিজ্ঞাপন

তিনি মানুষের বিপদের বন্ধু। মানবিক আচরণে সবার প্রতি থাকে তার সাহায্যের হাত। শুধু তাই নয়, চার্লি একজন সফল উদ্যোক্তাও। বাড়িতে পোল্ট্রি খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন নিজে এবং গ্রামের অন্য সকল নারীদেরও উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছেন তার মতো আত্মনির্ভরশীল উদ্যোক্তা হতে।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার কেওড়া ইউনিয়নের উত্তর পিপলিতা এলাকার চৌদ্দগ্রামের মেয়ে নাসরীন আক্তার চার্লি। আব্দুল হাই হাওলাদারের বড় মেয়ে চার্লি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন ২০০৯ সালে। বিয়ে হয় এরও আগে ২০০৩ সালে। বর্তমানে তার ১২ বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। চার্লি তার ছোট ভাই জুয়েলকে সাথে নিয়ে প্রথমে ২০০ মুরগীর বাচ্চা নিয়ে খামার করেন ২০১৮ সালে। এরপরে প্রতি চালানে ৩০০ মুরগী যুক্ত করার পাশাপাশি বর্তমানে ৮০ টি লেয়ার মুরগীও পালন করছেন। কবুতর পালন করছেন ৩০ টি। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসায় পরীক্ষামূলক ১০ টি কোয়েল পাখিসহ মুরগী বিক্রিতে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বর্তমানে তিনি স্যান্ডেল তৈরির কারখানা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বাড়ির সামনে জুতা ও কাপড়ের দুটি দোকান খোলারও পরিকল্পনা করছেন চার্লি।

বিজ্ঞাপন

একজন সাধারণ নারী, যিনি নিজ ইচ্ছায় নিজের জীবনে এনেছেন ইতিবাচক পরিবর্তন। সেইসঙ্গে স্বাবলম্বী করে তুলছেন গ্রামের নারীদের। কীভাবে তিনি তার পথচলা শুরু করলেন? সেই প্রশ্ন ছিল তার কাছে। চার্লি জানান – ‘ছোটকাল থেকেই আমি স্বাধীনচেতা একজন মানুষ, নিজেকে নারী মনে না করে একজন মানুষ মনে করতাম। পুরুষের সমান মনে করতাম। পুরুষের মতই সব ধরনের কাজ করার চেষ্টা করেছি। এখনও এলাকার মানুষের যেকোনো প্রয়োজনে সাধ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসি। নিজের স্বল্প সাধ্যে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়, নিজের জীবনের মোড় ঘোরানো যায় এমনটা আমরা জানা ছিল না। কিন্তু দি হাঙ্গার প্রজেক্টের নারী নেতৃত্ব বিকাশের জন্য যে প্রশিক্ষণ এই প্রশিক্ষণ একজন নারীর জীবন বদলে দিতে পারে। যেমন বদলিয়েছি আমি। ’

১১৯ তম ব্যাচে নারী নেতৃত্ব বিকাশ শীর্ষক ট্রেনিং করেন তিনি। ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে শুধু নিজের ব্যবসা ভালো করা নয়, এই উদ্যোগগুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান তিনি। নিজে সবার বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তার মত বা অন্য যে কিছু করার উৎসাহ যোগান এলাকার অন্য নারীদের। মানুষের জন্য কিছু করতে চান সব সময়। নাসরিন আক্তার চার্লির মতে গ্রামে দেখা যায় চায়ের দোকানের সামনে মানুষ বসে আড্ডা দেয়। সময় নষ্ট করে। তাদের মাঝেও কিছু একটা করার, নিজেকে স্বাবলম্বী করার ভাবনা ছড়িয়ে দেন তিনি। তিনি বলেন-‘নারীকে গ্রামাঞ্চলে সংসারের বোঝা মনে করা হয়। কত নারীর র্দুভাগ্যের জীবন। কিন্তু সংসারের বোঝা না হয়ে নারীরা নিজেদের বদলে একটু পরিশ্রম করলেই বদলে ফেলতে পারেন নিজেদের ভাগ্য। ছোট ছোট উদ্যোগের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হলে নারী তখন আর সংসারের বোঝা হয়ে দাঁড়াবেন না।’

মানসিক শক্তিতে ঘুরে দাঁড়ানো আনোয়ারা বেগম

শূন্য থেকে শুরু…

 

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরএফ/

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন