বিজ্ঞাপন

‘জ্বালানি উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার থেকে বেরিয়ে আসব’

June 2, 2021 | 8:20 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশ আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে। পাশাপাশি জ্বালানি উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার ধীরে ধীরে বন্ধ করবে সরকার।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ সফররত জলবায়ুবিষয়ক বৈশ্বিক সম্মেলন-কপ২৬ এর প্রেসিডেন্ট এবং ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা অলক শর্মার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে যৌথ প্রেস কনফারেন্সে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বুধবার (২ জুন) এমন মন্তব্য করেন।

যৌথ প্রেস কনফারেন্সে জানান হয়, বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলা এবং এই গ্রহকে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। এই ইস্যুতে দুইদেশ পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করবে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে দুইদেশ একসঙ্গে কাজ করবে।

কপ২৬ এর প্রেসিডেন্ট এবং ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা অলক শর্মার কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন যে, বাংলাদেশে পাঁচটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় এই বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা? জবাবে কপ২৬-এর প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের কয়লার ব্যবহার কমাতে হবে এবং তা জীবন, জীবিকা ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থেই জরুরি। এটা শুধু বাংলাদেশকেই নয়, আমরা পুরো বিশ্বকেই কয়লার ব্যবহার কমানোর অনুরোধ করেছি। আমাদের এ বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, ধীরে ধীরে কয়লার ব্যবহার থেকে বেরিয়ে আসব।’ জলবায়ু ইস্যুতে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সম্পর্কে ঢাকার যুক্তরাজ্য দূতাবাস জানিয়েছে, কপ২৬ প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের অভিযোজন ও সহনশীলনতা সম্পর্কে আরও বেশি ধারণা লাভ করেন। তিনি আশা করেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে কপ২৬-এর আগে বাংলাদেশ আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন কপ২৬ প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মা। এই তথ্য জানিয়ে যুক্তরাজ্য দূতাবাস আরও জানায়, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় ব্যবস্থা গ্রহণ, অভিযোজন, অর্থ সাহায্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে দুইদেশ এক সঙ্গে কাজ করবে।

কপ২৬ এর প্রেসিডেন্ট এবং ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা অলক শর্মা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খুব ভালো বৈঠক হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় এবং তাপমাত্রা কমাতে আমরা দুই দেশ এক সঙ্গে কাজ করব। ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা বৈশ্বিক তাপ নির্গমন মাত্রা শূন্যের কোঠায় আনতে চাই। আসন্ন কপ২৬ বৈঠকে এই বার্তা দিতে চাই।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ুসংক্রান্ত ক্ষতি মোকাবিলায় আমরা ১০০ মিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল গঠন করব। জি-২০ জোটের সদস্যরা এই তহবিলের জোগাড় করবে। বিশ্বের ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোকে এই তহবিল থেকে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহায়তা করা কবে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বৈশ্বিক জনগণ এবং এই বিশ্বকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে জলবায়ু ইস্যুতে আমরা এক সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের বিশেষ দূত জন কেরি জন কেরি ঢাকা সফর করেন। জলবায়ু ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাই ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এর ২০২০-২০২২ মেয়াদের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। বৈশ্বিকভাবে অভিযোজন ও সামর্থ্য অর্জন প্রচেষ্টাগুলোতে আরও বেশি অর্থায়ন এবং প্রযুক্তির প্রাপ্যতা নিশ্চিতের ওপর জোর দিতে আমরা সবাই কাজ করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘কপ২৬-এর প্রেসিডেন্টকে বলেছি যে, আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং প্রযুক্তি বিষয়ে সহযোগিতা করতে হবে। আমরা নদীতীরের বাঁধ উঁচু করব, দুই ধারে গাছ লাগাব, সোলার লাগাব,। এই বিষয়ে তাদের কাছ থেকে সরকারি এবং বেসরকারি খাতের সহায়তা চেয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআইএল/পিটিএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন