বিজ্ঞাপন

আগস্টজুড়ে মানবিক সহায়তার কল্যাণমুখী রাজনীতির প্রত্যয় আ.লীগের

August 1, 2021 | 12:32 am

নৃপেন রায়, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: শোকের মাস আগস্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। আবার ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক জনসভায় গ্রেনেড হামলা করা হয়। যে হামলায় ২৪ জন নিহত হয় এবং তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাসহ তিন শতাধিক লোক আহত হন। এছাড়া ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা চালায় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। যা পুরো বাংলাদেশে আতঙ্কের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এই মাসেই বাংলাদেশের মানুষ শুধু রক্তঝরা দেখেছে। আর কেটেছে আতঙ্কে।

বিজ্ঞাপন

সেজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই মাসটিতে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি যথাযথ মর্যাদায় পালনের পাশাপাশি বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি পরিস্থিতিতে অসহায়-কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়াবে। এর মধ্য দিয়ে মানবিক সহায়তার রাজনীতি, মানুষের জন্য কল্যাণমুখী রাজনীতির প্রত্যয় নিয়ে কর্মসূচি পালন করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

পুরো জুলাইজুড়ে ছিল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির ঊর্ধ্বগতি। মাসটিতে দেশেজুড়ে সংক্রমণ পরিস্থিতির সঙ্গে মৃত্যুর হার পাল্লা দিয়ে ওঠানামা করেছে। জুলাই মাসে দেশজুড়ে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ ছিল কয়েক ধাপে। তবে আগস্টের ৫ তারিখ থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণের এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে বিগত বছরের ন্যায় এবারও আগস্ট মাসের কর্মসূচি পালন করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। শোকার্ত বাঙালি জাতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে আওয়ামী লীগ জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে দলটি। করোনা মহামারির সংক্রমণ রোধে সীমিত পরিসরে যথাযথ স্বাস্থ্যসুরক্ষা বিধি মেনে মাসব্যাপী শোক দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলের সব সাংগঠনিক জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড শাখাগুলোকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছে দলটির সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শোকের মাসের প্রথম প্রহরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কসহ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবক লীগের আলোক প্রজ্জলনের মধ্য দিয়ে শোকের মাসের কর্মসূচি শুরু হবে। রোববার (১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় ‘জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত ‘স্বেচ্ছায় রক্ত ও প্লাজমা দান কর্মসূচি’র উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর চত্বরে এই কর্মসূচি হবে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাঙালির জাতীয় জীবনে আগস্ট মাসকে ঘিরে একটি আতঙ্ক-আশঙ্কা এবং শোক মিশে থাকে। এর কারণ এই আগস্ট মাসে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারবর্গকে আমরা হারিয়েছি। আমরা হারিয়েছি যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণি, কৃষক লীগ নেতা আব্দুর রব সেরনিয়াবাতসহ অনেককে। এই আগস্ট মাসেই ২০০৪ সালে আরেক ষড়যন্ত্র করা হয় জননেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতাদের হত্যা করে বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বে শূন্য করার।’

নানক বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আগস্টে শুধু রক্তঝরা দেখেছে। আগস্ট এলেই যেমন দেশবাসী শোকে মূহ্যমান হয়ে যায়, তেমনিভাবে আতঙ্কিতও থাকে। কারণ আগস্টেই সমস্ত দুর্ঘটনাগুলি ঘটিয়েছে ষড়যন্ত্রকারীরা। কেন যে তারা আগস্ট মাসটাকেই ধারণ করে আমি ঠিক জানি না। তবে এই মাসটি পাকিস্তানের স্বাধীনতার মাস। সেই মাসটিকে ঘিরেই পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের একটা পরিকল্পনা থাকতেই পারে। এই মাসটি এলে আমরা শোকে মূহ্যমান হয়ে যাই। তেমনি আমরা আতঙ্কিতও থাকি। আতঙ্কের ব্যাপার রয়েছে বলেই আমরা এই মাসটিতে অত্যন্ত সতর্ক থাকি। এই মাসটিতে নতুন ষড়যন্ত্র হয়, নতুন পরিকল্পনা হয় অপরাজনীতিকদের। সেই কারণে আমরা এই মাসটিতে একটু বেশি সতর্ক থাকি।’

আগস্ট মাসজুড়ে করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের পাশে মানবিক সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর মার্চ থেকে করোনায় আক্রান্ত দেশ। করোনার ছোবলে তছনছ জনজীবন। এরই মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের জীবন এবং জীবিকা উভয়কে পরিচালনা করে অর্থনৈতিক প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য চেষ্টা করছেন। মানুষের জীবন-জীবিকা একসঙ্গে চালানোর চেষ্টা করছেন। এরই মাঝে আগস্ট মাস এসে গেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎবাষির্কীর এই মাসটিতে আমরা অত্যন্ত সতর্ক এবং আমরা সবদিকে চোখ কান খোলা রাখছি।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাক এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শুধু নয়, বাঙালি জাতির জন্য একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক শোকাবহ মাস আগস্ট। করোনা মহামারির কারণে আমরা সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত করেছি। যেসব কর্মসূচিতে অধিক জনসমাগম হয় সরকারি বিধিবিধানের কারণে সেসব কর্মসূচি আমরা পরিহার করছি। করোনা মহামারি সংক্রমণের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করেই আমরা সব কর্মসূচি পালন করব। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ এই মাসে অন্যান্য যেসব কর্মসূচি আছে সেগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার যদি বেড়ে যায় তাহলে কর্মসূচি সীমিত করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ করে শোকের মাসে কাঙালি ভোজ, দুঃস্থদের খাবার বিতরণের একটি বড় কর্মসূচি থাকে সারাদেশে। আমরা করোনা মহামারিতেও দুঃস্থ মানুষের দুর্ভোগ কীভাবে কমানো যায়, খাদ্য সহায়তাসহ অন্যান্য সহযোগিতা কীভাবে বাড়ানো যায়- সেইসব কর্মসূচির উপর জোর দিয়েছি। এটাই জাতির পিতার রাজনীতি ছিল। এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও একই ধরনের কল্যাণমূলক রাজনীতি করেন।’

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সারাদেশে সবস্তরের নেতাদের শোকাবহ আগস্ট মাসজুড়ে করোনা মহামারির এই সংকটে মানবিক সহায়তার রাজনীতি এবং মানুষের জন্য কল্যাণমুখী কর্মসূচি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন