বিজ্ঞাপন

আরও ২ সপ্তাহ সময় চেয়েছেন রবি প্রভাষক ফারহানা বাতেন

October 7, 2021 | 7:38 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেয়ার ঘটনায় ফের তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হয়ে বক্তব্য উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছেন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রভাষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পাঠানো এক ইমেইলে নিজেকে অসুস্থ দাবি করেছেন তিনি। তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হতে আরও দুই সপ্তাহ সময় প্রার্থনা করেছেন।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের উপস্থিত হয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করা ছিল। তদন্ত কমিটির সদস্যরা বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার জন্য অপেক্ষা করেন। তবে দ্বিতীয় দফায় তাকে এ সুযোগ দেওয়া হলেও সে সুযোগ নেননি প্রভাষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন।

বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে গত ৩ অক্টোবর দুপুর ১২টায় তদন্ত কমিটির কাছে এসে তার বক্তব্য উপস্থাপন করার সময় দেওয়া হয়েছিল। তিনি মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে উপস্থিত না হয়ে একটি মেইলে ১৪ দিন সময় দরকার বলে জানিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি তাকে তিন দিনের সময় দিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২টায় হাজির হওয়ার জন্য নতুন সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি আজও উপস্থিত না হয়ে একই কারণ দেখিয়ে আবারও ১৪ দিন সময় প্রয়োজন বলে ইমেইল করেছেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

তদন্ত কমিটির প্রধান আরও বলেন, তিনি (ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন) আসবেন না— এমন কিছু গতকাল পর্যন্ত আমাদের জানাননি। তাই আমরা স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিয়েছিলাম তিনি আসবেন। অসুস্থতার কারণে উপস্থিত হতে না পারলে এ সংক্রান্ত নথি তদন্ত কমিটির কাছে পাঠানো উচিত ছিল। কিন্তু তিনি সেটি করেননি।

বিজ্ঞাপন

এ পরিস্থিতিতে তদন্ত কমিটি কী সিদ্ধান্ত নেবে— এমন প্রশ্নের লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, রাতে আমাদের একটি ভার্চুয়াল মিটিং আছে। সেই মিটিংয়েই পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নানা বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে তবেই এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ বলেন, যদি অভিযুক্ত শিক্ষক বার বার না আসেন, তাহলে তো তার জন্য সবকিছু ঝুলিয়ে রাখা যাবে না। প্রকৃত ঘটনা জানতে রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সিনেট সদস্য লায়লা ফেরদৌস হিমেলকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তারা যে প্রতিবেদন দেবেন, তার ভিত্তিতেই সিন্ডিকেট করণীয় নির্ধারণ করবে।

যদি এতে অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে কি ব্যাবস্থা নেয়া হবে এটাও সুপারিশ করা হবে এই সিনেট সভা থেকেই। এবং সেই সুপারিশ অনুযায়ীই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ৩ অক্টোবর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরাসহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সাক্ষ্য নিয়েছে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সেমিনার কক্ষে সকাল ৯টা থেকে শুরু করে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সাক্ষ্য নেন তারা। সেদিন দুপুর ১২টায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনেরও উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। তবে সেদিনও উপস্থিত না হয়ে ১৪ দিন সময় প্রার্থনা করেন তিনি। ওই দিন তদন্ত কমিটি তাকে তিন দিন সময় দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হাজির হতে বলা হয়েছিল।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের ১৪ জন শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন তুহিন (২৫) ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শিক্ষক ফারহানা বাতেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেলকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে দায়িত্বে থাকা তিন পদ থেকে সরে দাঁড়ান।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন