বিজ্ঞাপন

কিছু লোক প্রধানমন্ত্রীর কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন: মেয়র জাহাঙ্গীর

November 20, 2021 | 3:31 pm

ডিস্ট্রিক্ট করসেপন্ডেন্ট

গাজীপুর: আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘কতিপয় লোক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তি করার দায়ে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হওয়ার পরদিন শনিবার (২০ নভেম্বর) সকালে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।

তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীরা আমার সম্পর্কে ভুলভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করেছেন। আমি যদি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি আমার ওই অডিও/ভিডিওর বিষয়ে কথা বলতে পারতাম, তবে প্রধানমন্ত্রী সবকিছু বুঝতে পারতেন। তখন তিনি হয়ত আমার ব্যাপারে এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেন না।’

এ সময় মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছাত্র জীবনের হাইস্কুল থেকে আমি ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। কলেজে সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলাম ছাত্র সংসদে। জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বে ছিলাম তিন টার্ম। আমার রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার বাইরে যাই নাই এবং যাব না।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আমি আজকে নগরবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছি। কারণ এটি গাজীপুরের অনেক বড় একটি সিটি করপোরেশন। প্রথম ধাপে ৩২ হাজার বাড়িঘর, দোকানপাট, কবরস্থান, মসজিদ এবং ৮ হাজার বিঘা জায়গা স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছি। ৮০০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ৭০০ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা ২০ ফুট থেকে শুরু করে ৮০ ফুট রাস্তা পর্যন্ত করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি আমার মায়ের স্থানে রয়েছেন। কতিপয় কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিয়েছেন। তাই নেত্রী এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নয়তো কখনোই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিতেন না।

আরও পড়ুন:

কান্নায় ভেঙে পড়লেন মেয়র জাহাঙ্গীর

বিজ্ঞাপন

এখনই মেয়র পদ হারাচ্ছেন না দল থেকে বহিষ্কৃত জাহাঙ্গীর

মেয়র জাহাঙ্গীরের উপযুক্ত শাস্তি হয়েছে: আজমত উল্লাহ

জাহাঙ্গীর বহিষ্কারে বিতরণ হলো মিষ্টি, ফুটলো আতশবাজি

মেয়র জাহাঙ্গীর আজীবন বহিষ্কার, নেওয়া হচ্ছে আইনি ব্যবস্থা

বিজ্ঞাপন

গত ৩ অক্টোবর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় কেন্দ্র থেকে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে সে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়— সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত আপনার বক্তব্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে, যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বার্থ পরিপন্থি কর্মকাণ্ড ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সামিল। এটি সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ৪৭ ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

মেয়র জাহাঙ্গীর সে নোটিশের জবাব দিলে ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে সেটি নিয়ে আলোচনা হয়। তবে মেয়রের জবাব যুক্তিসঙ্গত মনে হয়নি।

জাহাঙ্গীর আলম চিঠিতে দাবি করেছেন— তার বক্তব্যগুলো জোড়াতালি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এরপর বিষয়টির জন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন দলের কাছে।

এদিকে সারাবাংলার গাজীপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন— গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মেয়রের ‘কটূক্তি’ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে গাজীপুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করে তার ছবির ওপর ‘ক্রস চিহ্ন’ দিয়ে পোস্টার ছাপিয়েও সেগুলো বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় দেয়ালে দেয়ালে লাগানো হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আগের অনেক অভিযোগও রয়েছে। সেগুলো নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামেও আলোচনা হয়েছে। তাকে ছাড় দেওয়া উচিত হবে না।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল বলেন, ‘মেয়র জাহাঙ্গীরের কথাগুলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর প্রভাব ফেলেছে। তার এমন কটূক্তির কারণে সাধারণ জনগণের মনেও অনেক ক্ষোভ জন্মেছে।’

সারাবাংলা/এএম

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন