বিজ্ঞাপন

এবার ছাত্রীদের ওপর চড়াও ছাত্রলীগ, ঢাবি ক্যাম্পাসে র‌্যাব

April 9, 2018 | 4:39 am

।।  স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

শাহবাগ চত্বর থেকে: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান করার প্রস্তাব দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। শিক্ষার্থীদের হলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনের বিষয়ে জানেন। তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করতে। সোমবার (৯ এপ্রিল) সকাল ১১টায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করতে।

ঘটনাস্থল থেকে তিনি ফিরে আসার পরই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ওপর চড়াও হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল, কুয়েত মৈত্রী হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল ছেড়ে ছাত্রীরা রাস্তায় নেমে আসেন। রাত দেড়টার দিকে শামসুন নাহার হল ও রোকেয়া হলের ছাত্রীরা বের হওয়ার চেষ্টা করলে হল প্রশাসন তাদের বাধা দেয়। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রীরা গেইটের তালা ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসে।

বিজ্ঞাপন

ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে অবস্থান নেয়। রাত ২টা ৪০ মিনিটের দিকে  ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। নেতা-কর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে কমপক্ষে ১৫ ছাত্রী আহত হন। এদের মধ্যে এক অংশ ছাত্রলীগের ধাওয়ায় টিএসসি’র ভেতরে অবস্থান নেয়। কিছু ছাত্রী দোয়েল চত্বর ও নীলক্ষেতের দিকে পালিয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত আড়াইটার দিকে চারুকলার সামনে থাকা পুলিশ ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা টিএসসির দিকে তেড়ে যান। আন্দোলনকারীরাও পাল্টা জবাব দেন। ২টা ৪০ মিনিটে পুলিশ ফের কাঁদুনে গ্যাস ছুড়তে ছুড়তে টিএসসির দিকে এগিয়ে যায়, সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতারা লাঠি-সোঁটা ও রড নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়। এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।

কয়েকজন শিক্ষার্থী সারাবাংলাকে জানান, হল প্রশাসন ছাত্রীদের পরিচয়পত্র কেড়ে নিয়েছে। অনেককে হলে ফিরতে দেওয়া হয়নি। নিরাপত্তার ভয়ে কুয়েত মৈত্রী হলের প্রায় এক শ’ ছাত্রী সুফিয়া কামাল হলে আশ্রয় নেয়।

এরই মধ্যে ১৫ গাড়ি র‌্যাব বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অবস্থান নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে র‍্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে র‌্যাবের উপস্থিতি সম্পর্কে আমার জানা নেই। র‌্যাব-৩ এর ডিউটি অফিসারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, গণমাধ্যম পরিচয় পেয়ে বারবার তিনি ফোন রেখে দেন।

বিজ্ঞাপন

মধ্য রাতে ছাত্রীদের নিরাপদে হলে ফিরিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর টিএসসি’র সামনে আসেন। তবে নিরাপত্তার শঙ্কায় ছাত্রীরা বের হতে অস্বীকৃতি জানান।

ঘটনাস্থলে থাকা শিক্ষার্থীরা সারাবাংলাকে আরও জানান, ছাত্রলীগের ধাওয়ায় অনেক ছাত্রী কার্জন হলের দিকে পালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ এখন সেদিকে যাচ্ছে। মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও সাঁজোয়া যান, জল কামান রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারদিকে।

এদিকে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হামলায় ৯ ছাত্রী আহত হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাদের উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল মেডিকেল ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই বাচ্চু মিয়া জানান, রোববার রাত ৮টার পর থেকে সোমবার রাত সোয়া ৪টা পর্যন্ত মোট ১৪৪ জন আন্দোলনকারী চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে শাকিল নামে এক ছাত্র চিকিৎসাধীন।

বাস ভবনে হামলার প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, মুখোশধারীরা আমার বাস ভবনে হামলা চালিয়েছে। রাত দেড়টার দিকে এক দল দুর্বৃত্ত তার বাস ভবনে হামলা চালায়। মূল ফটক, জানালা, আসবাব ভেঙে ফেলে তারা। বাস ভবনের সামনে থাকা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভায়।

আরও পড়ুন

পুলিশি হামলার প্রতিবাদে হল ছেড়ে রাস্তায় ঢাবি ছাত্রীরা

শাহবাগ থেকে আন্দোলনকারীরা ঢাবিতে, সংঘর্ষ চলছেই

কাঁদুনে গ্যাসে ছত্রভঙ্গ শাহবাগে আন্দোলনকারীরা

কোটা সংস্কার: মহাসড়কে আন্দোলনকারীরা
কোটা সংস্কারের দাবিতে শাহবাগে আন্দোলন

সারাবাংলা/এসআর/এমএইচ/এমআইএস/এটি

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন