বিজ্ঞাপন

‘স্ট্রোক রোগীর চিকিৎসায় বছরে ৬৪ লাখ মানুষ দরিদ্র হচ্ছে’

October 26, 2022 | 11:15 am

সারাবাংলা ডেস্ক

ঢাকা: দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগতই বাড়ছে। এক বছরে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে স্ট্রোকে মৃত্যুর সংখ্যা। সচেতনতা এবং সমন্বিত চিকিৎসা কার্যক্রমের মাধ্যমে এই মৃত্যুঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি রোগীর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠা সম্বভ।

বিজ্ঞাপন

২০১৯ সালে দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৪৫ হাজার ৫০২ জন। ২০২০ সালে স্ট্রোকের মৃত্যু ৮৫ হাজারে উঠেছে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী, দেশে প্রতি হাজারে স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন ১১.৩৯ জন। প্রায় ২০ লাখ স্ট্রোকের রোগী রয়েছে বাংলাদেশে।

স্ট্রোকের ঝুঁকি ৬০ বছরের বেশি মানুষের মধ্যে ৭ গুণ বেশি। নারীর চেয়ে পুরুষের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ। স্ট্রোকের প্রকোপ শহরের চেয়ে গ্রামে কিছুটা বেশি।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে সাম্প্রতিক দেশকালের সম্মেলন কক্ষে ‘স্ট্রোক প্রতিরোধে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে সমন্বিত কার্যক্রমের গুরুত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

আগামী ২৯ অক্টোবর বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মূল্যবান সময় বাঁচানোর গুরুত্ব’। আয়োজনে সহযোগিতায় ছিলে আইএসও সনদপ্রাপ্ত পেইন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন কেয়ার প্রতিষ্ঠান ইমপালা পেইন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন কেয়ার, টিএমএসএস, পিএইচএফ, বাংলাদেশ স্ট্রোক এসোসিয়েশন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সূচনা বক্তব্য রাখেন সাম্প্রতিক দেশকালের সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ স্ট্রোক অ্যাসোশিয়েশনের ট্রাস্টি কাউসার মাহমুদ।

বৈঠকে আলোচনা করেন পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম মোজাহেরুল হক, টিএমএমএস’র প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শিরাজী শাফিকুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল্লাহ আল মুজাহিদ, বাংলাদেশ স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ট্রাস্টি ওসমান গণি, বাংলাদেশ ফিজিক্যাল থেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহ-সভাপতি ইয়াসমিন আরা ডলি, অকুপেশনাল থেরাপি বিশেষজ্ঞ উম্মে সায়কা নিলা, সোসাইটি অব স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপিস্টস’র সভাপতি ফিদা আল শামস, ইমপালা পেইন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন কেয়ারের চীফ অপারেটিং অফিসার সৈয়দ মো. জাকারিয়া ফারুক, বাংলাদেশ স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের ট্রাস্ট্রি আসিফ বিন ইসলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশে স্ট্রোক চিকিৎসার ব্যয় সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. এম মোজাহেরুল হক বলেন, চিকিৎসার জনগণ ৬৩ শতাংশ নিজের পকেট থেকে দেয়, বাকি ৩৭ শতাংশ সরকার দেয়। স্ট্রোকের অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কারণ বিরাজমান সরকারি চিকিৎসা যা আছে সেটা স্ট্রোকের জন্য অপ্রতুল। কারণ স্ট্রোক ডায়গনসিস হওয়ার পরবর্তী ৬৩ শতাংশ ব্যয় নিজের পকেট থেকে যায়। কিন্তু সবাই এ ব্যয় বহন করতে পারেন না। এই কারণে স্ট্রোকের রোগীদের অনেকের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে চিকিৎসা করতে গিয়ে প্রতি বছর ৬৪ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বলেন, চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া উত্তম। তাহলে খরচ কমে যাবে আমাদের খাদ্যাভ্যাস, লাইফ স্টাইল, পরিবর্তন করতে পারলে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব । ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ বলেন, স্ট্রোক মরণঘাতি একটি রোগ। অন্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে মানুষের কাছে পরিষ্কার ধারণা থাকলেও স্ট্রোক সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। একইসাথে মানুষ স্ট্রোক হওয়ার পরপরই কোথায় গেলে চিকিৎসা পাবে এবং কী চিকিৎসা হতে পারে সে বিষয়ে বুঝে উঠতে পারে না।

সারাবাংলা/এনইউ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন