December 31, 2022 | 1:18 pm
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্তরিকতার সঙ্গে যদি আমাদের ছেলে-মেয়েদের তৈরি করতে পারি তাহলে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার পর প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ের শাপলা হলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে বিনামূল্যে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। ১ জানুয়ারি থেকে স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীর মাঝে নতুন পাঠ্যবই নিতরণ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা হচ্ছে জাতিকে দারিদ্রমুক্ত করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। অতীতের কোনো সরকার শিক্ষার জন্য তেমন কিছুই করেনি। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলা গড়ার জন্য শিক্ষাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।’
২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে ২ কোটি ১৯ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৩ জন শিক্ষার্থীকে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ০৮ হাজার ২৪৫টি বই বিতরণ করা হবে। এছাড়া সরকারের টানা মেয়াদে ২০১০ সাল হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের সংখ্যা হবে সর্বমোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লক্ষ ৮০ হাজার ২১১ কপি বিতরণন করা হয় বলেও জানান তিনি।
উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ার প্রসঙ্গ পুর্নব্যক্ত ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বাংলাদেশকে কেউ আর নিচু চোখে দেখতে পারবে না। বাংলাদেশ বিশ্বে তার একটা স্থান করে নিয়েছে। ২০৪১ এ বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ এবং যেটা হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।’
নতুন বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই উৎসব সকল করার কাজে সম্পৃক্ত সকলের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আন্তরিকতার সঙ্গে আজকে যদি আমাদের ছেলে-মেয়েদের তৈরি করতে পারি তাহলে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। যদিও সরকারে থেকে এতো কাজ করার পরও কিছু লোকের মন ভরে না। তারা বলে আমরা কিছুই করি নাই? এই যে কিছুই করি নাই যাদের সিলটা আছে, তারা আসলে চোখ থাকতেও দেখে না। তাদের মাথার মধ্যে ওই ‘নাই’ শব্দটা ঢুকেই আছে। আমরা ‘নাই তে’ থাকতে চাই না। আমরা পারি বাংলাদেশের মানুষ পারে, আমরা সেটাই প্রমাণ করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, নাই নাই শুনবো না। নাই আবার কি? বাংলাদেশ পারে। জাতির পিতা বলেছেন, এই বাঙালিকে কেউ আর দাবায়ে রাখতে পারবে না। তাই কেউ আর বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবেনা। আমাদের বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বই উৎসবে অংশ নিতে কার্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীরা গরম কাপড় পড়ে নাই সেদিকেও খেয়াল করেন এবং শীতে যেনো গরম কাপর পরে সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান করেন।
প্রতি বছর বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পেরে নিজেও খুশি প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই যে আজকে আমাদের বাচ্চারা নতুন বই পেল, তোমাদের ভালো লাগছে না? বইয়ের পাতা খুলতে কত ভালো লাগে? দেখতে ভালো লাগে? এরপর বাড়িতে গিয়ে মলাট দিতে হবে, নাম লিখতে হবে, কত কাজ? তাই না! এই কাজটা আমরা তোমাদের দিলাম।’
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের নতুন বই ছাপানোকে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনাসহ নানা ঝামেলা, ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ। এখন তো সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সারা বিশ্বব্যাপী কষ্ট। তার মধ্যেও কিন্তু আমরা শিশুদের কথা বলিনি। তাদের বই ছাপানোর কাজটার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে যাচ্ছি।’
শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি শিক্ষায় দক্ষতা বৃদ্ধির উপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের ছেলে মেয়েরা কেন পিছিয়ে পড়ে থাকবে? আমরা কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা করে যাচ্ছি।’
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযুক্ত জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেন আজকের শিশুরাই আগামী দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে।’
পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের সুযোগ দিয়ে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দিপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
আরও পড়ুন: বই উৎসব উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী, স্কুলে বিতরণ রোববার থেকে
সারাবাংলা/এনআর/ইআ