বিজ্ঞাপন

‘তালেবানি কালচারে’ গৌরবান্বিত শাবি ভিসি, ‘ওপেন কালচার’ চান না

September 20, 2023 | 9:15 pm

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হলে ঢোকার নিয়ম করে দিয়েছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। শিক্ষার্থীরা এই নিয়মকে ‘তালেবানি কালচার’ অভিহিত করলেও উপাচার্য বলছেন, তিনি এই ‘তালেবানি কালচার’ নিয়েই গৌরব বোধ করেন। তিনি ‘ওপেন কালচার’ চান না।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত তথ্য অধিকারবিষয়ক এক সেমিনারে শাবি উপাচার্য এসব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করছিলেন তিনি।

উপাচার্য ফরিদ বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়, এখানে (বিশ্ববিদ্যালয়) ওপেন কালচার ছিল, ছেলেমেয়েরা যা খুশি, তাই করতে পারত। কেউ কিছু বলতে পারত না। কারণ, তাদের বয়স ১৮ বছর। কিন্তু আমি সাড়ে ১০টার মধ্যে হলে ঢুকতে হবে বলেছি।

আরও পড়ুন- ভিসি ফরিদের বক্তব্যে অনেক মেয়ের উচ্চ শিক্ষার পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে

বিজ্ঞাপন

উপাচার্য বলেন, ‘তারা (শিক্ষার্থী) এটার (হলের ঢোকার সময় নির্ধারণ) নাম দিয়েছে তালেবানি কালচার। তালেবানি কালচার নিয়ে আমি খুবই গৌরবান্বিত, এটা নিয়ে থাকতে চাই। আমি ওপেন কালচার চাই না।’

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য আরও বলেন, ‘আপনারা চান কি না, আমি জানি না। তবে আমি চাই না, আমার ছেলেমেয়েরা, সন্তানেরা… ঘুরে বেড়াক। তাদের মা-বাবারা সারারাত ঘুরে বেড়ানোর জন্য পাঠাননি।’

‘মা-বাবারা কিন্তু উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকেন, টেনশনে থাকেন— আমার মেয়ে কোথায় আছে, ছেলে কোথায় আছে। সে জন্য তাদের দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। আমরা তাদের গার্ডিয়ান, আমরা তাদের হেফাজতকারী। আমরা কিন্তু ওই জিনিসটা অ্যালাউ করব না, কোনোভাবেই করব না,’— বলেন উপাচার্য ফরিদ।

বিজ্ঞাপন

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলমগীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য মো. কবির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আমিনা পারভীন ও ইউজিসির সচিব ফেরদৌস জামান। মূল আলোচক ছিলেন ইউজিসির জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের উপপরিচালক মো. আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ভিসি ফরিদ উদ্দিনের ‘রক্ষণশীল’ অবস্থান অবশ্য নতুন কিছু নয়। গত বছরের জানুয়ারিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘অবমাননাকর’ বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগরের (বিশ্ববিদ্যালয়) মেয়েদের কেউ সহজে বউ হিসেবে নিতে চায় না। কারণ সারারাত এরা ঘোরাফিরা করে।’

এ বক্তব্যে অনলাইন-অফলাইনে তুমুল সমালোচনা হয়। শাবি উপাচার্যকে আইনি নোটিশও পাঠানো হয়। পরে তিনি ওই বক্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামকে ফোন করে ক্ষমা চান তিনি।

এ ছাড়া গত বছরের ১৩ জানুয়ারি রাতে শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের ছাত্রীরা। পরে এ ঘটনায় প্রতিকার না পেয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এক দফা আন্দোলন গড়ে তোলেন। অনশনেও নামেন শিক্ষার্থীরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ভিসিকে পদত্যাগে বাধ্য করাতে পারেননি তারা।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

 

 

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন