বিজ্ঞাপন

দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু: ওসি ছুটিতে, পরিদর্শক বদলি

October 17, 2023 | 8:11 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: পুলিশ হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যুর পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নগরীর চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম ছুটিতে গেছেন। একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিবুর রহমানকে বদলি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে সোমবার (১৬ অক্টোবর) দুদক কর্মকর্তার পরিবারের পক্ষ থেকে চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলার আসামিরা হলেন— ওসি খাইরুল হক, পরিদর্শক (তদন্ত) মনিবুর রহমান এবং এএসআই ইউসুফ আলী ও সোহেল রানা।

জানা গেছে, মামলা হওয়ার পরই সোমবার সন্ধ্যায় ছুটিতে চলে যান ওসি খাইরুল হক। একইদিন পরিদর্শক (তদন্ত) মনিবুরকে পশ্চিম জোনের উপকমিশনার কার্যালয়ে পরিদর্শক (অপরাধ) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। একই দায়িত্বে থাকা মো. ছবেদ আলীকে চান্দগাঁও থানার পরদর্শক (তদন্ত) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। তিনি একইসঙ্গে ওসির দায়িত্বও পালন করবেন।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোখলেছুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ওসি খাইরুলের স্ত্রী অসুস্থ। সেজন্য তিনি ছুটি নিয়েছেন। পরিদর্শককে স্বাভাবিক নিয়মে বদলি করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

দুদক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় মামলার পর এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না— জানতে চাইলে উপকমিশনার বলেন, ‘ছুটি স্বাভাবিক নিয়মে হয়েছে। বদলিও স্বাভাবিক নিয়মে হয়েছে। আমরা মামলার আদেশ আজ (মঙ্গলবার) পেয়েছি। আর ছুটি ও বদলির অর্ডার হয়েছে গতকাল।’

মামলায় অভিযুক্ত এএসআই ইউসুফ আলী ও সোহেল রানাকে ঘটনার পরই চান্দগাঁও থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

আদালতের পরোয়ানামূলে গত ৩ অক্টোবর রাতে নগরীর চান্দগাঁও থানা পুলিশ দুদকের অবসরপ্রাপ্ত উপপরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে (৬৪) গ্রেফতার করে। তার বাসা নগরীর চান্দগাঁও থানার এক কিলোমিটার এলাকায়।

গ্রেফতার করে শহীদুল্লাহকে থানায় নিয়ে ওসির কক্ষে বসানোর পরই তিনি অসুস্থবোধ করতে থাকেন। হৃদরোগে আক্রান্ত শহীদুল্লাহর মুখে এ সময় ইনহেলার স্প্রে করেন তার সঙ্গে যাওয়া ছোট ভাই। কিন্তু অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে শুরু করলে ছোট ভাইয়ের চাহিদা অনুযায়ী পুলিশ শহীদুল্লাহকে বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, জায়গা-জমি দখলের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জসিম উদ্দিন নামে তাদের এক প্রতিবেশী গত ২৯ আগস্ট রণি আক্তার তানিয়া নামে এক নারীকে দিয়ে শহীদুল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করান। পুলিশ এ ষড়যন্ত্রে তাদের প্রত্যক্ষ সহায়তা দেয়। যে আদালতে মামলা হয়েছিল, ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন উর রশীদ সমন আটকে রেখে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করান। সেই পরোয়ানামূলে গ্রেফতারের সময় পুলিশের মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে শহীদুল্লাহ মারা যান।

বিজ্ঞাপন

পরিবারের অভিযোগ তদন্তে সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর জোনের উপকমিশনারকে প্রধান করে কমিটিতে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) ও বিশেষ শাখার সহকারী কমিশনারকে সদস্য করা হয়েছে।

জানতে চাইলে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) নিহাদ আদনান তাহিয়ান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের প্রথমে তিন কার্যদিবস সময় দেয়া হয়েছিল। আমরা আরও ১০ কার্যদিবস সময় নিয়েছি। আমাদের হাতে আরও পাঁচ দিন সময় আছে। আশা করি, আগামী সপ্তাহে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।’

এদিকে বেঞ্চ সহকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে এক সদস্যের কমিটি গঠন করেন চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম। এ অভিযোগে সংশ্লিষ্ট চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম-৬ আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন উর রশিদকে বিচার সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম থেকে সরিয়ে ‘ক্যাশিয়ার’ পদে বদলি করা হয়।

এরপর ১৬ অক্টোবর শহীদুল্লাহর স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন। মামলায় চান্দগাঁও থানার ওসিসহ চার পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরও পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়। অভিযুক্তরা হলেন— এস এম আসাদুজ্জামান, জসিম উদ্দিন, মো. লিটন, রণি আক্তার তানিয়া ও কলি আক্তার।

আদালত মামলা গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন