বিজ্ঞাপন

দেশে সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত সাড়ে ৩ কোটি শিশু

October 22, 2023 | 11:07 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সিসা বিষক্রিয়া একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা শিশুদের মারাত্বক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। বাংলাদেশে অন্তত ৩৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন (৩ কোটি ৫৫ লাখ) শিশু সিসার বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত। প্রতি বছর প্রায় ৩১ হাজার মৃত্যু হয় যা দেশের মোট মৃত্যুর ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

এই উদ্বেগজনক সংকটের মধ্যে দেশে আন্তর্জাতিক সিসা বিষাক্ততা প্রতিরোধ সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে প্রথমদিন শনিবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে একটি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডো, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি এবং ডিজিএইচএস, ইউনিসেফ, আইসিডিডিআর’বি, আইইডিসিআর এবং আইপেনের সহায়তায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে

২০১২ সাল থেকে প্রতি বছর এসডো আন্তর্জাতিক সিসা বিষাক্ততা প্রতিরোধ সপ্তাহ পালন করে আসছে। সিসার বিষাক্ততার মারাত্মক সমস্যা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো এবং স্বাস্থ্য, বিশেষ করে শিশুদের শরীরে সিসার বিষাক্ততার বিরূপ প্রভাব নিয়ে জনসাধারণকে জানানোই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। এরই ধারাবাহিকতায় এসডো, তরুণ সমাজকে এই সমস্যা সমাধানে উদ্বুদ্ধ করতে এবং ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শিশুদের সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশ ঘটায়। এটি তরুণ শিল্পীদের সিসার বিষাক্ততার বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে এবং বুঝতে সাহায্য করে। প্রতিযোগিতা শেষে বিচারকদের একটি বিশিষ্ট প্যানেল বাছাই প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষতা এবং দক্ষতা নিশ্চিতের মাধ্যমে ১০০ জন প্রতিযোগির কাজ মূল্যায়ন করে। বিচারকদের একটি প্যানেল সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় বস্তুনিষ্ঠতা এবং দক্ষতাসহ নিশ্চয়তা দিয়ে জমা দেওয়া বিষয়গুলোর মূল্যায়ন করে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজির লিটন বলেন, ‘এসডো এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সিসাযুক্ত রং নিষিদ্ধ করার একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। এটি করার মাধ্যমে তারা শুধু সৃজনশীলতার বিকাশ করছে না বরং সিসার বিষক্রিয়া এবং এর মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতাও বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায় এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।’

ড. মো. মুসা বাকের, আইসিডিডিআর, বি-এর গবেষণা তদন্তকারী বলেন, ‘সিসার বিষক্রিয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়, যার মধ্যে রয়েছে আচরণগত সমস্যা, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, পেটে ব্যথা, মাথাব্যথা এবং রক্তস্বল্পতা।’

বাংলাদেশ ইউনিসেফের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রিসিলা ওয়াবিল বলেন, ‘আমাদের শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ এবং তাদের সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য সিসার বিষক্রিয়ার সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে এবং সিসার বিষাক্ততার সমাধান করার লক্ষ্যে সবাইকে একসঙ্গে জনসচেতনেতা বৃদ্ধি করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

এসডোর এই উদ্যোগটি প্রভাবশালী সংস্থাগুলোর সমর্থন অর্জন করেছে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, স্বাস্থ্য অধিদফতর, ইউনিসেফ, আইসিডিডিআর, বি, এবং আইপেন সিসার বিষক্রিয়ার সমস্যা সমাধানে এই উদ্যোগের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে।

এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডো একটি অলাভজনক সংস্থা, যা পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০০৮ সাল থেকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে, এসডো সিসাযুক্ত রং এবং সিসাযুক্ত পণ্য ব্যবহার নির্মূল করতে এবং সিসার বিষক্রিয়া সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে এসডো সবসময় এগিয়ে। এসডোর এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো সিসাযুক্ত রঙের ব্যবহার বন্ধের জন্য আইন প্রণয়ন এবং যথাযথ প্রয়োগের জন্য বিভিন্ন সংস্থার সমর্থন এবং সহযোগিতা অর্জন।

সারাবাংলা/ইএইচটি/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন