বিজ্ঞাপন

‘জনগণের অকল্যাণ করে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না’

November 21, 2023 | 2:33 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানুষকে পুড়িয়ে মেরে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না। অর্জন করতে হলে জনগণের শক্তি দরকার হয়। জনগণের অকল্যাণ করে, মানুষ পুড়িয়ে মেরে কিছু অর্জন করা যায় না; তাদের এই চেতনা ফিরে আসুক।’

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় স্বাধীনতাযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা এবং ২০২২-২৩ সালে সশস্ত্র বাহিনীর পদকপ্রাপ্ত সদস্যদের পদকে ভূষিত করেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এগিয়ে যেতে হবে। সেইভাবে শিক্ষা-দীক্ষায় প্রতিটি ছেলেমেয়ে যেন উন্নত জীবন পায়, আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যে কাজই করি সবসময় মাথায় রাখতে হবে, মুক্তিযুদ্ধ করেই বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। আর বিজয়ী জাতি হিসাবেই বিশ্বে অবস্থান করবো, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবার কল্যাণ কামনা করি, শান্তি কামনা করি। আমি জানি যে, অগ্নিসন্ত্রাস বা জ্বালাও-পোড়াও মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। আমি জানি না একটা মানুষ কীভাবে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে। যেটা দেখেছিলাম ১৯৭১ সালে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এটা করতো। বস্তিতে আগুন দিত, মানুষ বের হয়ে এলে সাথে সাথে গুলি করে মেরে দিত।’

‘এরপর দুর্ভাগ্যের বিষয় হল ২০১৩ ও ২০১৪। আর এখন আবার সেই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। কীভাবে একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে পোড়াতে পারে? পোড়া মানুষগুলির সেই ক্ষতবিক্ষত দেহ, তাদের আর্ত চিৎকার, তাদের পরিবার কি অবস্থায় আছে? এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুভার্গ্যজনক’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এদের চেতনা হোক সেটাই আমি চাই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অন্তত তাদের চেতনা ফিরে আসুক। একটা মানুষকে পুড়িয়ে মেরে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না; এটা ভুল। অর্জন করতে হলে জনগণের শক্তি দরকার হয়। জনগণের পাশে থাকতে হয়। জনগণের কল্যাণ করতে হয়। জনগণের অকল্যাণ করে পুড়িয়ে মেরে কিছু অর্জন করা যায় না। অন্তত এই বিষয়টা যেন, যারা এসব করছে তারা বুঝতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ উন্ননয়শীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে আমাদের অগ্রযাত্রা শুরু হবে। প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। আমাদের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে হবে। কারণ নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চক্রান্ত চলে। যা হোক, এগুলো উত্তরণ ঘটিয়েই আমরা এ পর্যন্ত এগোতে পেরেছি। এইটুকু বলতে পারি, ১৫ বছরে বাংলাদেশ পরিবর্তন হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।’

এই ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। আজকের বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এটা ধরে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার দিকে। সেজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করি।’

এসময় স্বাধীনতাযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেওয়ার পাশাপাশি অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শান্তিকালীন পদক দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, মঙ্গলবার সকালে সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে পৌঁছালে সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তাদের স্বাগত জানান।

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে যান। সেখানে তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এই দিনে সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গঠিত হয় এবং তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করে যা মুক্তিযুদ্ধের বিজয়কে ত্বরান্বিত করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঐতিহাসিক এই দিনটি প্রতিবছর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন