বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা সারা বাংলায়: ছয় পেরিয়ে সাতে

December 6, 2023 | 2:39 pm

রহমান রা’আদ

২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর। ‘সারাবাংলা সারাক্ষণ’ স্লোগানে জন্ম নিল সারাবাংলা ডটনেট নামে নতুন এক সংবাদমাধ্যম। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের যে প্রত্যয়ে শুরু হয়েছিল সারাবাংলার পথচলা, ছয় বছরের নাতিদীর্ঘ যাত্রায় বাংলাদেশের প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের সংবাদ পরিবেশনে স্বকীয়তা ও বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখা ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে সেই প্রত্যয় এখনো বলিষ্ঠ মনোবলে ধরে রেখেছে এই সংবাদমাধ্যমটি। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূল চার নীতি অনুসরণ ও মহান মুক্তিযুদ্ধকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিয়ে সাংবাদিকতায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনেও যথাসাধ্য ভূমিকা রাখবার চেষ্টা করে যাচ্ছে সারাবাংলা ডটনেট।

বিজ্ঞাপন

সংবাদপত্রকে জাতির আয়না বলা হয়। অনেকক্ষেত্রে এটি পালন করে হুইসেল ব্লোয়ারের দায়িত্বও। একটা দেশের পরিচালনার দায়িত্ব থাকা সরকারের জনকল্যাণমূলক কাজগুলো যেমন সংবাদপত্র তুলে ধরবে, তেমনি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় কিংবা দপ্তরের সমস্যা সংকট থেকে শুরু করে জনগণের অভাব-অভিযোগ চাওয়া-পাওয়া সবই প্রতিফলিত হবে সংবাদমাধ্যমে। সংবাদপত্র কাজ করবে জনগণের কণ্ঠস্বর হিসেবে, কাজ করবে রাজনীতি-অর্থনীতি-সংষ্কৃতির নানা দিক সম্পর্কে সচেতন নাগরিক গড়ে তোলার মাধ্যম হিসেবে। একটা রাষ্ট্রে আইন-আদালত, প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যতটুকু ক্ষমতা, সংবাদমাধ্যমের ক্ষমতা কোন অংশেই কম নয়। বরং জাতির আয়না হিসেবে সংবাদমাধ্যম সরাসরি জনগণের কাছে পৌছাতে পারে যা দেয় এক অমিত ক্ষমতা ও দায়িত্বের ভার। কোন সংবাদমাধ্যম যদি জনবিধ্বংসী এজেন্ডায় কাজ করে, তাহলে ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে অচিন্তনীয়।

সারাবাংলা ডটনেটকে প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই ‘কালোকে কালো আর সাদাকে সাদা’ হিসেবে প্রচারের নীতিতে বিশ্বাস করতে দেখেছি। বিশেষ করে এই ‘ব্রেকিং’ ‘ভাইরাল’ আর ‘টিআরপি’র যুগে যখন অনেক গণমাধ্যমকে চটকদার শিরোনামে অসম্পূর্ণ কিংবা অর্ধসত্যকে নিউজ আইটেম হিসেবে সবার আগে চালিয়ে দিয়ে টিআরপি কামানোর অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে দেখি, সেখানে সারাবাংলায় গত ছয় বছর যেকোন তথ্য যাচাই করে সঠিক ও নির্ভুল খবর দেওয়াকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে দেখেছি।

গুজব অপপ্রচার আর ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় করে ফেলার এই যুগে যেখানে অনেক শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমও বস্তুনিষ্ঠতা ধরে রাখতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে, সেখানে জনগণের কাছে শুধুই ফ্যাক্ট এবং ভেরিফায়েড ইনফরমেশন পৌছাবার যে লক্ষ্যে সারাবাংলা এগিয়ে যাচ্ছে, তা সত্যিই সাধুবাদ পাবার যোগ্য।

বিজ্ঞাপন

পাঠক ও লেখক হিসেবে সারাবাংলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে দিকটি চোখে পড়েছে সেটা হচ্ছে বাঙালী জাতীয়তাবাদ এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূলভিত্তিগুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে পাথেয় করে পথচলা। সারাবাংলাই সর্বপ্রথম অনলাইন নিউজমিডিয়ায় শুধু মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে একটা সেকশন বরাদ্দ করেছিল। যেখানে পূর্ণ স্বাধীনতায় লিখতে পেরেছি এবং লিখে যাচ্ছি মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা এবং আমাদের রক্তাক্ত জন্মইতিহাসের নানা জানা-অজানা অধ্যায় নিয়ে। সারাবাংলা আমাকে দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অবারিত লিখে যাবার উৎসাহ এবং সহযোগিতা।

সারাবাংলার স্বত্বাধিকারী গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) ছিলেন একাত্তরে অবরুদ্ধ ঢাকায় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর যমদূত হয়ে আবির্ভূত হওয়া আরবান গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা দল ক্র্যাক প্লাটুনের অন্যতম গেরিলা। একাত্তরে যুদ্ধ করে একটা শত্রুমুক্ত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ উপহার দিয়েই ক্ষান্ত হননি তিনি, এখনো জনপ্রতিনিধি হিসেবে, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় মন্ত্রী হিসেবে এবং গাজী গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। সারাবাংলার সত্ত্বাধিকারী হিসেবে বস্তুনিষ্ঠ, সঠিক ও নির্ভুল সংবাদ পরিবেশনে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা বিনির্মাণে সংবাদমাধ্যমে তার অবদান অনস্বীকার্য।

সাংবাদিকতা মানে যা সত্য, যা কঠিন, যা মানুষের জানা অধিকার তা বস্তুনিষ্ঠভাবে কারো চাপে দমে না গিয়ে সম্পাদকীয় পলিসি এবং সংবাদমাধ্যমের নীতিমালা অনুসরণ করে তুলে ধরা। জনগণের যেমন অধিকার আছে ফ্যাক্ট জানার, তেমনি সংবাদমাধ্যমেরও দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে টিআরপি বাড়াতে, লাইক-শেয়ার-ভিউ কামাতে কিংবা কাটতি বাড়াতে চটকদার মোড়কে অসমর্থিত সূত্রে স্পর্শকাতর কোন বিষয়ে অর্ধসত্য কিংবা অসম্পূর্ণ তথ্য না দেয়া। কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকার ভুল করলে সাংবাদিকদের আসল ঘটনা তুলে আনতে হবে জনগণের স্বার্থে, দেশের স্বার্থেই। আবার স্পর্শকাতর বিষয়ে এমন কোন সংবাদ পরিবেশন করা ঠিক হবে না, যা জনমতকে নেতিবাচকভাবে ম্যানিউপুলেট করে তৈরি করতে পারে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অস্থিরতা ও অরাজকতা।

বিজ্ঞাপন

আমি প্রত্যাশা করি সারাবাংলা এতোদিন যেভাবে সংবাদপত্রের সামাজিক ও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা মিটিয়ে জনকল্যাণে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সত্যের পথে সাহসী সাংবাদিকতা করে এসেছে, ছয় পেরিয়ে সাত বছরেও তারা একই ধারা অব্যাহত রাখবে। কোন মত-পথ-পক্ষের প্রেশারে প্রভাবিত না হয়ে মুক্ত ও গতিশীল থাকবে সারাবাংলার কী-বোর্ড!

প্রিয় সংবাদমাধ্যম সারাবাংলা ডটনেটের জন্য আন্তরিক শুভকামনা। শুভ জন্মদিন!

লেখক: অ্যাক্টিভিস্ট

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবিডিই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন