বিজ্ঞাপন

ঢাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফলাফলে ধস নামানোর অভিযোগ

February 8, 2024 | 1:36 am

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি কোর্সে নম্বর কমিয়ে দিয়ে সার্বিক ফলাফলে ‘ধ্বস’ নামিয়ে দিয়েছেন— এমন দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন একই বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদ।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবনে বিভাগটির ১২তম ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগপত্রের সঙ্গে তারা সংশ্লিষ্ট ব্যাচের ২৮ জন শিক্ষার্থীর সই যুক্ত করেন।

অভিযোগের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করে মৌখিক পুনঃগ্রহণ ও সম্পূর্ণ ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন এবং অধ্যাপক নাদির জুনাইদের কৃতকর্মের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

সংশ্লিষ্ট সমন্বিত কোর্সের ১০০ নম্বরের মধ্যে ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা ও বাকি ৫০ নম্বরের ভাইভা— দুই অংশেই প্রধান পরীক্ষক ছিলেন অধ্যাপক নাদির জুনাইদ।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা বলেন, স্নাতক পর্যায়ে ফলাফলে প্রথম ১০ জনের মধ্যে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হওয়া ছয় জনের মধ্যে সমন্বিত কোর্সে মাত্র একজন জিপিএ ২.৭৫ পেয়েছেন। অন্যদের জিপিএ এরও কম (২.৫০)। সমন্বিত কোর্সে এমন ফলাফল বিপর্যয় এর আগে কখনো দেখা যায়নি। এ ছাড়া ওই কোর্সে পরীক্ষা দেওয়া ৫৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীই ৪ স্কেলের মধ্যে ২.৭৫-এর নিচে স্কোর পেয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মৌখিক পরীক্ষায় অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে পরীক্ষার্থীদের ভীতসন্ত্রস্ত করে ফেলেন অধ্যাপক নাদির জুনাইদ। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে জানা প্রশ্নের উত্তরও ভুল হয়ে যাচ্ছিল। শিক্ষার্থী শাফাত রহমানকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘ইন্দিরা গান্ধীর সন্তান কতজন?’ অন্য এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করেন, ‘কুকুরের কয়েকটি জাতের নাম বল’। এ ধরনের অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করে তিনি অন্য পরীক্ষকদের সামনেও শিক্ষার্থীর ‘ইম্প্রেশন’ খারাপ করে দেন। এরই প্রতিফলন ঘটেছে সমন্বিত কোর্সের নম্বরে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক নাদীর জুনাইদ বলেন, ভাইভাতে এমন কোনো প্রশ্ন করা হয়নি। ক্লাসে কোনো একসময় পড়াতে গিয়ে কুকুরের জাত বিষয়ে বলা হয়েছিল। তবে ভাইবাতে কখনোই এমন প্রশ্ন করা হয়নি।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়াও অভিযোগপত্রে নাদীর জুনাইদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে নজরদারি ও ফেসবুকের কার্যক্রম অনুসরণ করে মূল্যায়নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে নাদীর জুনাইদ বলেন, ফেসবুকে নজরদারির এমন কোনো বিষয় নিয়ে আমি কিছু বলিনি। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে শুধু বলেছি, তোমরা ফেসবুকে সময় ব্যয় করতে পারো। তাহলে ভালো ভালো ছবি কেন দেখো না?

ফলাফল কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে নাদীর জুনাইদ বলেন, ভাইভাতে আরও তিনজন ছিলেন। তারাও এখানে নম্বর দিয়েছেন। আমি একা নম্বর দিইনি। সবার নম্বর গড় হয়ে তারপর মোট নম্বর হয়।

উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, শিক্ষার্থীরা আবেদন করেছে, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখি। সংশ্লিষ্ট যারা এ পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে আমরা ডাকব। পরীক্ষা কমিটিসহ সবাইকে আমরা ডাকব। আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করে উপাচার্য মহোদয়কে প্রতিবেদন দেব এবং বিধি অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই না, আমাদের শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হোক। তারা যে নম্বর পেয়েছে, তা কতখানি যৌক্তিক সে বিষয়টিও আমরা দেখব।

বিজ্ঞাপন

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চায অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। এরই মধ্যে উপউপাচার্যের (শিক্ষা) কাছে অভিযোগপত্রটি ফরওয়ার্ড করেছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন।

সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন