বিজ্ঞাপন

তনু হত্যার ৮ বছর: তদন্তে নেই অগ্রগতি, হতাশ পরিবার

March 20, 2024 | 3:32 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

কুমিল্লা: ২০১৬ সালে ধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ জঙ্গলে ফেলে রাখা হয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুকে। ঘটনার ৮ বছর পার হলেও তনুর হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ নিয়ে হতাশায় তনুর পরিবার।

বিজ্ঞাপন

তনুর মা আনোয়ারা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আমাদের ডেকে নেয়। আমরা যাই, আসি, কথা বলি। এখনও তারা হত্যায় জড়িত কাউকে ধরে পারেনি। কী বেদনা নিয়ে বেঁচে আছি, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।’

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, ‘যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে রহস্য বের হত, তাদেরই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না। পরিবারের প্রতিটি সদস্য ও আত্মীয়স্বজন এমনকি শিক্ষকরাও সাক্ষ্য দিয়েছে, আর কী বাকি রইল?’

বুধবার (২০ মার্চ) মেয়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দুই মসজিদে দোয়া ও এতিম শিশুদের ইফতারের আয়োজন করেছেন তনুর বাবা।

বিজ্ঞাপন

তনুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফিরেনি তনু। পরে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভেতর একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ পায়। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। ২০১৭ সালের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল।

সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এর মধ্যে ২০২০ সালের নভেম্বরে মামলাটির দায়িত্ব পিবিআইকে দেওয়া হয়। পিবিআই ঢাকার একটি টিম দায়িত্ব পাওয়ার শুরুর দিকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে ঘুরে যান।

বিজ্ঞাপন

২০২৩ সালের ৮ আগস্ট তনুর খালাতো বোন লাইজু জাহানের সাক্ষ্য নেওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়। নির্ধারিত সময়ে তনুর বাবা-মা ও ভাইসহ লাইজু জাহান কুমিল্লা পিবিআই কার্যালয়ে হাজির হওয়ার পর তাদের জানানো হয় তদন্ত কর্মকর্তা অসুস্থ, তাই সাক্ষ্য গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এরপর অন্ধকারে ঢাকা পড়েছে মামলার কার্যক্রম।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মজিবুল হক বলেন, ‘সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা আসামিদের শনাক্ত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’

উল্লেখ্য, তনু হত্যা মামলায় আট বছরে পাঁচবার তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়েছে। বর্তমানে পিবিআই হেড কোয়ার্টারের স্পেশাল টিম এ মামলার তদন্ত করছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমও

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন