বিজ্ঞাপন

তবু ‘রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসে’র দাবিতে অটল বুয়েট শিক্ষার্থীরা

April 1, 2024 | 9:23 pm

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) রাজনৈতিক কার্যক্রম চলতে কোনো বাধা নেই— হাইকোর্টের এমন আদেশের পরও ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবি থেকে সরে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এ সংক্রান্ত মতামত যথাযথভাবে বিচার বিভাগের কাছে তুলে ধরতে তারা বুয়েট প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে বুয়েট শিক্ষার্থীরা এ কথা জানান। এ সময় তারা এ-ও বলেছেন, দেশের বিচার-ব্যবস্থার ওপর পূর্ণ আস্থা আছে তাদের।

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে তিন শিক্ষার্থী পালাক্রমে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি না থাকার দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ ও অটল। যে ছাত্র রাজনীতি র‌্যাগিং কালচারকে প্রশ্রয় দেয়, ক্ষমতার অপব্যবহারকে প্রশ্রয় দেয়, যার বলি হতে হয় নিরীহ ছাত্রদের, তা কখনোই আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনেনি, ভালো কিছু বয়ে আনবেও না।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্র রাজনীতির চরম মূল্য হিসেবে আমরা আমাদের কেমিকেল বিভাগের ৯৯ ব্যাচের সাবেকুন্নাহার সনি, যন্ত্রকৌশল ৯ ব্যাচের আরিফ রায়হান দ্বীপ, তড়িৎকৌশল ১৭ ব্যাচের আবরার ফাহাদকে হারিয়েছি। ছাত্র রাজনীতিবিহীন বুয়েট ক্যাম্পাস ছিল সর্বোচ্চ নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব। মৌলবাদী শক্তিকেও আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দিতে পারি। আমরা বুয়েট প্রশাসনের কাছে দাবি রাখব, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত যথাযথভাবে বিচার বিভাগের কাছে তুলে ধরা হোক।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- আদালতের আদেশ শিরোধার্য: বুয়েট উপাচার্য

লিখিত বক্তব্যে বুয়েট শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, দেশ ও বিদেশ থেকে সাবেক শিক্ষার্থীরাও (অ্যালামনাই) বুয়েট ক্যাম্পাস ছাত্র রাজনীতিমুক্ত রাখার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে দৃঢ়তা পোষণ করেছেন। সোস্যাল মিডিয়ায় নিজ নিজ জায়গা থেকে তারা তাদের অবস্থান আমাদের পক্ষে ব্যক্ত করছেন। আমরা বর্তমান শিক্ষার্থীরা আমাদের শিক্ষকদের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও ভরসা রাখি। আমরা শিক্ষার্থীরা আমাদের উপাচার্যকে এই আর্জি জানাচ্ছি, তিনি যেন আমাদের শিক্ষকদের নিয়ে আপামর বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের যে আকাঙ্ক্ষা, তা যেন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূরণ করেন।

এর আগে ২০১৯ সালে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার পর আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১১ অক্টোবর এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে বুয়েট প্রশাসন। তাতে বুয়েটে রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়। এর মধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ অন্যদের উপস্থিতিতে বুয়েটে ছাত্রলীগ এক অনুষ্ঠান করে বলে জানাজানি হয় গত ২৮ মার্চ। ওই দিন থেকেই ফের বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের বিজ্ঞপ্তি কার্যকরসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ‘নিরাপত্তা’ চান বুয়েট শিক্ষার্থীরা, ফিরছেন না ক্লাসে

এদিকে ছাত্রলীগের ওই ‘অনুষ্ঠান’ আয়োজনে সহযোগিতার অভিযোগ তোলা হয় বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমজিয়াজ রাব্বীর বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপেক্ষতে হলে তার সিট বাতিল করে বুয়েট প্রশাসন। অন্যদিকে বুয়েটেরই পাঁচ শিক্ষার্থী এক সংবাদ সম্মেলন করে জানান, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে বুয়েটে ইসলামী ছাত্রশিবির ও হিযবুত তাহরীর রাজনীতি করছে।

এর মধ্যে ইমতিয়াজ রিট করেন হাইকোর্টে। সেই রিটের ওপর শুনানি নিয়েই সোমবার হাইকোর্ট আদেশ দেন, বুয়েট প্রশাসনের ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবরের ওই বিশেষ বিজ্ঞপ্তি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ওই বিজ্ঞপ্তি স্থগিতের আদেশ দেন হাইকোর্ট। এতে বুয়েটে ফের ছাত্র রাজনীতি চর্চার সুযোগ উন্মুক্ত হয়। আদালতের এ আদেশের পর বুয়েট উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদারও বলেছেন, আদালতের আদেশ শিরোধার্য।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

ফের উত্তাল বুয়েট, দাবি না মানলে ‘আন্দোলন চলবে’

আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়: বুয়েট উপাচার্য

বুয়েটে সক্রিয় ছাত্রশিবির-হিযবুত তাহরীর— দাবি ৫ শিক্ষার্থীর

ইমতিয়াজের সিট বাতিল, ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অটল শিক্ষার্থীরা

 

সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন